• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হজযাত্রীদের ভিসা জটিলতায় বাড়ছে বিড়ম্বনা


সোনালী বিশেষ আগস্ট ২, ২০১৭, ০৪:০৫ পিএম
হজযাত্রীদের ভিসা জটিলতায় বাড়ছে বিড়ম্বনা

ঢাকা : হজযাত্রা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ১২টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। যাত্রী সংকটেই এমনটা হচ্ছে বলে দাবি বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের। ২ অগাস্ট পর্যন্ত বাতিল এই ফ্লাইটগুলোতে ৪ হাজারের বেশি যাত্রী যাওয়া কথা ছিল।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ভিসা সমস্যার কারণেই মূলত যাত্রী সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এজন্য ২ অগাস্ট পর্যন্ত আমাদের ১২টি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৫-১৬ সালে যারা হজ পালন করে এসেছেন, তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে অতিরিক্ত ২ হাজার রিয়াল দিতে বলেছে সৌদি আরব, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে এই জটিলতা। যারা সেই টাকা পরিশোধ করে তার রশিদ জমা করছেন না, তাদের ভিসা দিচ্ছে না সৌদি দূতাবাস।

বাংলাদেশ থেকে এবার হজে যাচ্ছেন ১ লাখ ২৮ হাজার জন। তাদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ হাজার জনের মতো ব্যক্তিকে পুনরায় হজ করতে যাওয়ায় ২ হাজার রিয়াল (৪৪ হাজার টাকা) দিতে হবে। কিন্তু  তার প্রভাব পড়ছে আরও অনেকের ওপর।

হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সাধারণ সম্পাদক তসলিম বলেন, এক পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে যখন হজে যেতে চাইছেন, তখন একজনের জটিলতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত অন্যরা যেতে চাইছেন না। ভিসার জন্য বাড়তি এই অর্থ হজ এজেন্সিগুলো দিতে চাইছে না। ফলে হজযাত্রীদের সঙ্গে তাদের এটা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, হজে যেতে যে বাড়তি ২ হাজার রিয়াল লাগবে, তা আগে জানা থাকলে সেই অনুযায়ী হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হত। এখন সমাধান কী- প্রশ্ন করা হলে হাব সাধারণ সম্পাদক বলেন,আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি, তারা যেন বিজ্ঞপ্তি জারি করে সবাইকে জানিয়ে দেন যে এই টাকা যাত্রীকে বহন করতে হবে। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় এখনও এই সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা দেয়নি বলে জানান তিনি।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ) মো. হাফিজ উদ্দিন বলেন, ২ হাজার রিয়ালের বিষয়ে সিদ্ধান্তটি সৌদি কর্তৃপক্ষ আগে তাদের জানায়নি। ফলে তাদের কাছেও এটি স্পষ্ট নয়। বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি। আশা করছি, বাড়তি টাকা কাকে দিতে হবে, তা খুব দ্রুত সবাইকে জানিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।

হজ এজেন্সিগুলো শুধু ২ হাজার রিয়ালই নয়, আরও বেশি অর্থ অন্যদের কাছেও চাইছে বলে অভিযোগ এসেছে হজযাত্রীদের কাছ থেকে।এই বিষয়ে হাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল বাহার সৌদি আরবে মোয়াল্লেমদের ফি বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখান।

তিনি বলেন,সৌদি আরবে ৭২০ রিয়ালে মোয়াল্লেম ঠিক করার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেখানে ওই মানের মোয়াল্লেম পাওয়া না যাওয়ায় অন্য মোয়াল্লেমরা ১৫০০ থেকে ১৯০০ রিয়াল বাড়তি দাবি করছেন। এতে ৯১টি হজ এজেন্সির লোকজনের সেখানে বাড়ি ভাড়া করতে সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণে প্রায় ১৮ হাজার ৪০০ যাত্রীর সৌদি আরব যাওয়ায় বিডম্বনায় পড়তে হচ্ছে, অথচ তাদের প্রথমদিকেই যাওয়ার কথা ছিল।

সৌদি সরকার এবার মোয়াল্লেম ফি বাড়ানোর পর বাংলাদেশি এজেন্সিগুলো নিজেদের আর্থিক অসঙ্গতির কথা জানায়। এরপর মক্কায় এক বৈঠকে বাংলাদেশি এজেন্সিগুলোকে দুই কিস্তিতে মোয়াল্লেম ফি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

সোয়া লাখের মধ্যে এ পর্যন্ত ৪২ হাজার হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে এবং প্রায় ২৪ হাজার জন রওনা হয়ে গেছেন বলে হজ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত হজ ফ্লাইট চলবে।

এই বছর বাড়তি অর্থ সংক্রান্ত জটিলতায় হজযাত্রীদের সমস্যার কথা স্বীকার করেন হাব সাধারণ সম্পাদক তসলিম। তবে বিমানের ১২টি ফ্লাইট বাতিল হওয়ায়  সমস্যা দেখছেন না তিনি। তিনি বলেন, হজ পালনে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে, এটা বলা যাবে না। কারণ গত বছরও বিমানের অন্তত ২০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!