• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হঠাৎ জটিলতা, বিএনপিকে ছাড়াই জাতীয় ঐক্য!


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২৫, ২০১৮, ১১:৫২ এএম
হঠাৎ জটিলতা, বিএনপিকে ছাড়াই জাতীয় ঐক্য!

ঢাকা: বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্য নাকচ করে দিয়েছেন গণফোরাম নেতা কামাল হোসেন। ফলে জাতীয় ঐক্য নিয়ে আবারো জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে গণফোরাম নেতা কামাল হোসেনের ঐক্যের সম্ভাবনা নাকচ করেছেন তার সঙ্গে রাজনীতি করা একজন নেতা।

প্রবীণ আইনজীবীর নেতৃত্বে চলা আরেক ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র মহাসচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন বলেছেন, বিএনপি চাইলে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারে। কিন্তু তারা বিএনপির সঙ্গে যাবেন না। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এবারে জাতীয় ঐক্য গড়ায় আগ্রহী। আর এজন্য বিভিন্ন দলের সঙ্গে চলছে তাদের আলোচনা।

বিএনপি যাদের সঙ্গে ঐক্য গড়তে চায়, তার মধ্যে আছেন কামাল হোসেনও, যিনি তার রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় সময় কাটিয়েছেন আওয়ামী লীগে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হওয়ার পর ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপির নেতারা একাধিক আলোচনায় একসঙ্গে অংশ নিয়েছেন। সরকারের সমালোচনার ভাষাও মোটামুটি একই ছিল। এ কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে আগ্রহ রয়েছে দুই পক্ষ ঐক্যে যাচ্ছে কি না।

তবে কামাল হোসেনের ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন বলেন, ‘বিএনপির অতীত কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ, তারা অনেক অপকর্ম করেছে। তাদের কোনো ঐক্যের ডাকে ড. কামাল হোসেন যাবেন না। তবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে কোনো ঐক্য হলে সেখানে বিএনপি আসতে পারে।’

কামাল হোসেন এই ঐক্যের কথা বলে আসছেন ২০১৬ সালের ২০ আগস্ট থেকেই। এজন্যই করা হয়েছে কমিটি। কিন্তু তাতেও সুফল মিলছে না। 

এ বিষয়ে মোস্তফা আমিন বলেন, ‘ড. কামাল নতুন করে ঐক্যের কথা বলছেন না। ওনি মাঝে মাঝেই একটা কথা বলেন যে, জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলেই দেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়েছিল। জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বলেই ৯০ স্বৈরাচারের পতন ঘটানো সম্ভব হয়েছে।’

‘২০১৬ সালের কামাল হোসেন সাহেব যখন দেখছেন, রাজনৈতিক দলের ঐক্য যখন হচ্ছে না, ভাবলেন বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কিছু করা যায় কি না। সেটার অংশ হিসেবে আমরা চেষ্টা করছি। ‘আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় অনেক বুদ্ধিজীবীকে সম্পৃক্ত করেছিলাম। পরে তারা অনেকেই চলে গেছেন। আমাদের সংবিধানে যে কথা বলা হয়েছে তার আলোকে দেশ পরিচালনার জন্য আমরা একটি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশের ‘অপসংস্কৃতির রাজনীতির’ বিরুদ্ধে ২২ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের ঘোষণাও এসেছে ঐক্য প্রক্রিয়ার পক্ষ থেকে। এজন্য গত ৬ আগস্ট গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে এবং পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

মোস্তফা আমিন বলেন, আমি আশা করি আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে। ইতিমধ্যে সমাবেশের জন্য প্রচারপত্র বিলি শুরু হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।

‘আগামী ২২ তারিখে সব দলকে দাওয়াত দিয়েছি। সেখানে আলোচনা হবে, আগামীতে দেশ কীভাবে চলবে। দেশে নির্বাচন কীভাবে হবে, কার অধীনে হবে। সেই কাঠামো ঠিক হলে, তারা ঠিক করবে নির্বাচন করবে কি করবে না।

এই সমাবেশে কারা যোগ দেবেন-জানতে চাইলে ড. কামালের ঘনিষ্ঠ মোস্তফা আমিন বলেন, ‘সব দলকে নিয়ে সমাবেশ হবে, তারা নিজেরা মনে করলে তখন করবে।… আমাদের লক্ষ্য একটাই, সঠিকভাবে দেশের শাসন পরিচালনা করা। স্বাধীনতার পরে দেশের ট্রেন এখন লাইনচ্যুত হয়েছে, সেটা এখন ট্র্যাকে বসানো দরকার। সেটাই আমরা করতে চাই, পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই।’

তৃতীয় শক্তি হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবদুল কাদের সিদ্দিকী, জেএসডির আ স ম আবদুর রব এবং নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না গঠন করা যুক্তফ্রন্টে থাকার কথা ছিল ড. কামালেরও। কিন্তু তাকে বাদ দিয়েই ঘোষণা দিয়েছেন অন্যরা। আর কামাল হোসেন আসছেন না দেখে জোট ছেড়েছেন কাদের সিদ্দিকী।

যুক্তফ্রন্ট এখনও প্রবলভাবে কামাল হোসেনকে নিতে আগ্রহী। গত ১৯ আগস্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী এ বিষয়ে গণফোরাম নেতার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। এতে একসঙ্গে কাজ করবেন জানালেও যুক্তফ্রন্টে যুক্ত হওয়ার কথা নাকচ করেন ড. কামাল।

ঐক্যের ডাক দেয়া ড. কামাল কেন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গেই সমঝোতায় আসতে পারছেন না- এমন প্রশ্নে গণফোরাম নেতার ঐক্য প্রক্রিয়ার মহাসচিব বলেন, ‘কামাল সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গি হলো এখনই জোট নয়, আগে এক সাথে কাজ করি তারপর জোট। কিন্তু তারা এখনই জোট করতে চাচ্ছে। এখানেই তাদের দ্বিমত আছে।

কামাল হোসেন শুরুতেই কেন জোটবদ্ধ হলেন না- এমন প্রশ্নে মোস্তফা আমিন বলেন, ‘সে সময় ড. কামাল হোসেন দেশে ছিলেন না। তিনি এসে যখন শুনলেন যে যুক্তফ্রন্ট গঠন হয়েছে, তখন তিনি বললেন ‘আমি আসা পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতে পারতেন। এখানেই আমাদের সাথে তাদের পার্থক্য এবং এর কারণে তাদের সাথে জোট হচ্ছে না।

‘তারপরও আমরা কিন্তু বি. চৌধুরীকে আমাদের সমাবেশে প্রধান অতিথি করি। তবে যুক্তফ্রন্টের কাঠামোগত অবস্থানে কামাল হোসেন সাহেব যাবেন বলে মনে হয় না।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!