• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হত্যার ক্লু ‘সুইসাইডনোটে’, অতঃপর...


জেলা প্রতিনিধি নভেম্বর ১৫, ২০১৬, ০৮:১৮ পিএম
হত্যার ক্লু ‘সুইসাইডনোটে’, অতঃপর...

যশোর: খুনি তার সুইসাইডনোটে লিখে রেখে গেলেন মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে হত্যার ক্লু। সেই ক্লু ধরেই মাছের ঘের থেকে দীর্ঘ সাত মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে যুবকের লাশ। ঘটনাটা ঘটেছে যশোর সদর উপজেলার কিসমত রাজাপুর গ্রামে।

নিহত যুবক সবুজ বিশ্বাস (২৮) কিসমত রাজাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর বিশ্বাসের ছেলে। হত্যা ঘটনায় আটক বিপ্লব মনিরামপুর উপজেলার ডাঙ্গা মহিষদিয়া গ্রামের নাজিম সরদারের ছেলে। সে সবুজ বিশ্বাসকে হত্যা ও পরে আত্মহত্যাকারী যুবক তরিকুল ইসলামের ভগ্নিপতি। তরিকুল যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের গফ্ফার মোল্যার ছেলে।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানের উপস্থিতিতে মনিরামপুরের একটি মাছের ঘের থেকে সবুজ বিশ্বাসের লাশ উদ্ধার করা হয়। সবুজ নিখোঁজের ঘটনায় আসামি বিপ্লবের স্বীকারোক্তি মোতাবেক এই লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়া নিয়ে যাবার কথা বলে সবুজের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তারিকুল। এ ঘটনার পর গত ৫ মে সবুজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর সবুজের ভাই মাহবুর রহমান দুদিন পর ৭ মে তরিকুলসহ ৪ জনের নামে যশোর কোতোয়ালি থানায় পাচার আইনে মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর উপজেলার ইছালি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই শরিফুল ইসলাম তদন্ত করতে গিয়ে গুম ও হত্যার রহস্যের উদঘাটন করতে সক্ষম হন।

সূত্রমতে, এরই মধ্যে ১৫ দিন আগে পলাতক অবস্থায় তারিকুল আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে সবুজ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি সুইসাইডনোট (চিরকুট) লিখে যান। এর সূত্র ধরে গেল ১২ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরিফুল ইসলাম তারিকুলের ভগ্নিপতি বিপ্লবকে আটক করেন। এরপরই হত্যাকাণ্ডের পুরো রহস্য উদঘাটন হতে থাকে। আটক বিপ্লব আদালতে গুম ও হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এই স্বীকারোক্তি মোতাবেক আটক বিপ্লবকে সাথে নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামসহ মনিরামপুর থানা পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) উপজেলার ডাঙ্গা মহিষদিয়া গ্রামে যান। এসময় বিপ্লবের বাড়ি থেকে দেড়শ’ গজ দূরে মাছের ঘেরে সবুজের বস্তাবন্দি লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা রয়েছে বলে বিপ্লব তদন্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের জানান।

এরপর বিপ্লবের দেখানো পথ অনুসরণ করে নৌকায় করে ওই ঘেরে যান মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা। বিপ্লবের দেখানো জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পানির নিচে মাটিতে পুঁতে রাখা বস্তাবন্দি লাশটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

এসময় অভিযুক্ত বিপ্লব জানান, ‘তার কুটুমসহ (শ্যালক) আরও কয়েকজন ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তার বাড়িতে আসেন। এ সময় ঘের দেখানোর কথা বলে ওই ঘের পাড়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় সবুজকে। এরপর মাছের খাবারের বস্তায় লাশ ভরে ওই ঘেরে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়।’

এসময় নিহতের স্বজনরা সবুজের লাশ শনাক্ত করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, এই ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে আটক করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!