• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘হরতাল’ কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদ নয়: কানাডার আদালত


প্রবাসে বাংলা ডেস্ক মার্চ ১৭, ২০১৮, ০৪:১২ পিএম
‘হরতাল’ কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদ নয়: কানাডার আদালত

ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশের একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। চলমান সংসদ ভেঙে দিতে কিংবা আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে ডাকা ‘হরতাল’ কর্মসূচি সন্ত্রাসবাদের আওতায় পড়ে না। বিএনপিকে নিয়ে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার আগের অনুসন্ধান ও তার ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনালের রায় কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য এক বাংলাদেশির করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়ার রায়ে এসব কথা বলেছেন কানাডার ফেডারেল কোর্ট। গত ১ মার্চ দেওয়া রায়ে বিচারক রিচার্ড জে মোসলে বিএনপির ওই কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয়সংক্রান্ত আবেদনও মঞ্জুর করেন।

হরতাল আহ্বান করা সন্ত্রাসবাদের আওতায় পড়ে না উল্লেখ করে বিচারক বলেন, চলমান সংসদ ভেঙে দিতে কিংবা আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে কোনো রাজনৈতিক দল আহুত ‘হরতাল’ কর্মসূচি কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদের আওতায় পড়ে না।

বিএনপিকে জড়িয়ে অভিবাসন কর্মকর্তা সন্ত্রাসবাদের যে অভিযোগ করেন তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বিচারক বলেন, বিএনপির হরতাল আহ্বান করার সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার সন্ত্রাসের সম্পৃক্ততা খোঁজার সঙ্গে আমি কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা এটাও জেনেছেন, বিএনপি নেতারা সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।

৯ পৃষ্ঠার এই রায়ে বলা হয়েছে, অনুসন্ধানে কিছুতেই এটার প্রমাণ নেই যে, যার কারণে বলা যায় হরতাল ডাকা মানে সন্ত্রাসের সমার্থক। বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, কানাডায় কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণের কারণে এমন মন্তব্য করা হলে তা হতো কানাডার চাটার্ড অব রাইটের মারাত্মক লঙ্ঘন। ইমিগ্রেশন ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের কড়া সমালোচনা করে বিচারক বলেন, আমি আগের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নই। এটা ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ, বুদ্ধিদীপ্ত এবং আইনসঙ্গত রায় বলে প্রতীয়মান নয়।

বিএনপিসহ অন্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও দমননীতির অভিযোগ তুলে ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন গাজী নামের ওই বাংলাদেশি। কানাডার অভিবাসন ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারক তার আবেদন নাকচ করে বাংলাদেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ই সরকার পরিবর্তনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে বলে মত দেন। এতে সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি কানাডার ফেডারেল কোর্টে যান। রায়ে বিএনপির বিরুদ্ধে করা ট্রাইব্যুনালের মন্তব্য অবান্তর বলে মত দিয়েছেন বিচারক।

রিচার্ড জে মোসলে পর্যবেক্ষণে বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত কি না, তা বুঝতে তদন্তকারী অভিবাসন কর্মকর্তা ইন্টারনেটে কিছু অনুসন্ধান চালান। অনুসন্ধান প্রক্রিয়াটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। সংবাদ সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি সংগঠন ও অন্যান্য সূত্র থেকে তিনি একটি ধারণা নেন, যাতে দেখা যায় বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটে থাকে। পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা যে বিষয়টিতে নজর দিয়েছেন, বিশেষ করে তা হলো ধর্মঘট। দক্ষিণ এশিয়ায় এটি হরতাল নামে পরিচিত।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!