• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হরিণাকুন্ডুতে কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না নগ্নতা ও জুয়ার আসর!


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি এপ্রিল ২৯, ২০১৮, ০৩:১৩ পিএম
হরিণাকুন্ডুতে কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না নগ্নতা ও জুয়ার আসর!

ঝিনাইদহ : জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুরে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যেও বৈশাখী মেলার নামে চলা রমরমা জুয়ার আসর বন্ধ হতে না হতেই আবারও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কুলবাড়ীয়া বাজারে নগ্নতা ও জুয়ার আসরের অনুমোদন মিলেছে। এ নিয়ে সুশীল সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সকল মেলার মাঠে প্রতি রাতেই হরিণাকুন্ডুর ওসির গাড়ি দেখা যায়। পুলিশের উপস্থিতিতেই এসব জুয়ার বোর্ড ও নগ্নতা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ভবানীপুর বাজারে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। মেলার প্রথম থেকেই শুরু হয় র‌্যাফেল ড্র ও জুয়ারসহ নগ্নতা। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশের পরও তা এখন পর্যন্ত আমলে নেয়নি প্রশাসন। এরই মাঝে গত ২৬ এপ্রিল মাত্র ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কুলবাড়ীয়া বাজারেও মিলেছে মেলার অনুমোদন। সেখানকার অবস্থা আরও ভয়াবহ। কুলবাড়ীয়া মেলায় চলছে উন্মুক্ত স্থানে জুয়া। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে উপজেলা ও আশপাশ এলাকায় অকর্ষণীয় মাইকিং করে মেলার প্রচার করা হচ্ছে। উঠতি বয়সের যুবকরা ভোর রাত পর্যন্ত ভিড় জমাচ্ছে যাত্রা প্যান্ডেল ও জুয়ার আসরে। এরই পাশাপাশি প্রস্তুতি চলছে মানুষ ঠকানো দৈনিক বিকাশ র‌্যাফেল ড্র নামের প্রকাশ্য জুয়া চালোনোর চেষ্টা।

এ ঘটনায় এলাকার অভিভাবক মহলসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। যাত্রা প্যান্ডেলের অপরদিকে বসানো হয়েছে তিনটি জমজমাট জুয়ার বোর্ড। এ নিয়ে মানুষ ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। মেলা হচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। কিন্তু মেলার অনুমতি নিয়ে মূলত জুয়া খেলা তাদের মূল উদ্দেশ্য। যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। আর এই জুয়ার আসরে ভিড় করছে উঠতি বয়সের স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী, যুব সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অভিভাবক মহল চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, উঠতি বয়সী কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আর গ্রাম্য যুবকের আড্ডায় জমে ওঠা গভীর রাত পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ এখন শুধুই রমরমা জুয়ার আসর।

এর ফলে এলাকার এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় চরমভাবে প্রভাব পড়ছে। যুব সমাজকে গ্রাস করছে অবক্ষয়ের নীল ছোবল। সমাজবিরোধী কাজ পরিচালিত হলেও নগদ নারায়নে তুষ্ট হরিণাকুন্ডু উপজেলা প্রশাসন। অর্থলোভীরা মেলার নামে যাত্রা ও জুয়ার আসর বসিয়ে এলাকায় চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘৃণ্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করছে। আয়োজক কমিটির সভাপতি কুলবাড়ীয়া ইউপি সদস্য শামসুল ইসলাম জানান, মেলার অনুমোদন করতে ডিসি অফিস, এসপি অফিস, ইউএনও অফিস ও থানায় অনেক টাকা লাগে। এ জন্য জুয়া না চালালে এতো টাকা আসবে কোথা থেকে। প্রতি রাতে প্রশাসনিক খরচ অনেক টাকা। তাই প্রতিটি খাতে টাকা দিয়ে দুইটি জুয়ার বোর্ড বসানো হয়েছে। র‌্যাফেল ড্র চালানোর চেষ্টা চলছে। অনুমোদন থাকাকালীন কেউ এই মেলায় জুয়ার বোর্ড বন্ধ করতে পারবে না। মেলা চললে জোয়ার বোর্ড চালাতে দিতে হবে। নয়তো অনুমোদনের সময় কেন এতো টাকা নিয়েছে প্রশাসন। হরিণাকুন্ডুবাসী কুলবাড়ীয়া, ভবানীপুরসহ সকল মেলায় চলা নগ্নতা ও জুয়া বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

হরিণাকুন্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ কে, এম শওকত হোসেন জানান, মেলায় জুয়া চললে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, জুয়া ও নগ্নতার বিষয়টি খুবই আপত্তিকর। মেলায় কোনো প্রকার জুয়া ও নগ্নতা চললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লাগাতার সংবাদ প্রকাশের পরও কেনো প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!