• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাই প্রোফাইলের কারণেই উচ্ছৃঙ্খল সাঈদ


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৮, ২০১৭, ০৭:০৪ পিএম
হাই প্রোফাইলের কারণেই উচ্ছৃঙ্খল সাঈদ

ঢাকা: তারেক সাঈদ। বহুল আলোচিত ও নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত র‌্যাব থেকে বহিস্কৃত কর্মকর্তা। পুরো নাম লেঃ কর্নেল তারেক সাঈদ মুহাম্মদ। কারও কাছে তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রীর মেয়ের জামাতা। আবার কারো কাছে তিনি একজন ঠাণ্ডামাথার খুনী! 

তারেক সাঈদ বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাব-১১ এর কোম্পানীর অধিনায়ক ছিলেন। ঢাকা (নবাবগঞ্জ এবং দোহার থানা), নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও লক্ষীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে র‌্যাব-১১ এর এলাকা। তার শ্বশুর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এক জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জসহ প্রায় পুরো এলাকাতেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। আর এই অপকর্মগুলো করতে সাহস পেয়েছে তার হাই প্রোফাইলের কারণেই।

বামে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে তারেক সাঈদকে ডানে শ্বশুর মোফাজ্জল চৌধুরী মায়া

নারায়ণগঞ্জের নজরুল ও অ্যাড. চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে খুনের আগে ২০১৩ সালের নভেম্বরের ২৮ তারিখে কুমিল্লার লাকসামের সাবেক বিএনপি এমপি উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম হিরু এবং পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির পারভেজকে গুমের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রথমে সাদা পোশাকে র‌্যাব পরিচয়ে উঠিয়ে নেয়ার পরে বলা হয় এ ব্যাপারে র‌্যাব জানে না। আজ পর্যন্ত তাদের খোঁজ মিলেনি।

লেঃ কর্নেল তারেক সাঈদের গ্রামের বাড়ি হচ্ছে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানার দক্ষিণ দেবত্র এলাকায়। বাবা কর্নেল (অব:) মুজিব, দাদা সৈয়দ আলী মাঝি। তারেকের বড় ভাই সুমন ডাক্তার, মেঝ তারেক, ৩য় ভাই বাংলাদেশ নৌবাহিনী লে. কমান্ডার মুসা ও ছোট ভাই ওমর ড্যানিডার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। তাদের মধ্যে শেষ ৩ ভাই-ই সাবেক ক্যাডেট। এর মধ্যে তারেক কুমিল্লা ক্যাডেট, অন্য দুইজন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিল। তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে ছিল শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ। 

সাত খুনের অভিযোগ আসার পর মিডিয়ার মুখোমুখি সাঈদ

সূত্রমতে, তারেক সাঈদ ছিলেন দূর্দান্ত ডানপিঠে। আইনের লেবাসে সে ছিল আইন ভাঙার মহাকারিগর। অনেকের কাছে সে ঠান্ডামাথার খুনী হিসেবেও পরিচিত। শুধু তাই নয়; ব্যক্তি জীবনেও তিনি ছিলেন উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির।

দেশের একাধিক জাতীয় দৈনিক র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সূত্র দিয়ে বলেছে ‘আলোচিত সাত খুন নয়, এর আগেও তিনি কমপক্ষে ১১ ব্যক্তিকে প্রথমে গুম, পরে নৃশংসভাবে প্রায় একই কায়দায় খুন করে লাশ গায়েব করে দেয়।’

তারেক সাঈদ র‌্যাব-১১’র ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে বসে স্বেচ্ছারিতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের এপ্রিলে ঘটে যায় নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন। এ খুনের ঘটনাও তারা ধাপাচাপা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু লাশ ভেসে ওঠায় তাদের শেষ রক্ষা হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সাত খুন মামলায় তারেক সাঈদ ও নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে খুনি সাবস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ দায়রা জজ আদালত। এ রায় প্রদান করেন বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!