• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকমান্ডেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব, ঝুলছে উত্তর দক্ষিণ


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২২, ২০১৭, ০৭:২৫ পিএম
হাইকমান্ডেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব, ঝুলছে উত্তর দক্ষিণ

ঢাকা: একাধিকবার কমিটি ঘোষণা করার উদ্যোগ নেয়া হলেও ঢাকা মহানগর কমিটি গঠনে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। রহস্যজনক কারণে শীর্ষ দুই পদে আটকে গেছে কমিটি। দলের অভ্যন্তরে একাধিক বলয় সক্রিয় থাকায় এসব পদে একেকজনের নাম ঢুকছে, আবার কেটেও দেয়া হচ্ছে।

খোদ হাইকমান্ডই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সম্পাদকের পদ নিয়ে। উত্তরে সভাপতি পদ মোটের ওপর চূড়ান্ত করা হলেও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। আর দক্ষিণে শীর্ষ দুই পদের কোনোটিই চূড়ান্ত করতে পারেনি হাইকমান্ড।

বলা হচ্ছে, মহানগর কমিটি নিয়ে হাইকমান্ডে কিছু নেতার ভিন্ন ভিন্ন পছন্দের কারণে এমন সিদ্ধান্তহীনতা দেখা দিয়েছে। তবে মহানগরের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল কারাগারে থাকায় ও সামনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ায় কমিটি ঘোষণায় বিলম্ব হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শীর্ষনেতারা। আবার কেউ বলছেন, গ্রিনসিগন্যাল পেলেই কমিটি হয়ে যাবে।

কমিটি গঠনে যুক্ত একাধিক সিনিয়র নেতা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দ্রুত কমিটি গঠনে প্রধান অন্তরায় নেতাদের মধ্যে মতের অমিল। কোনো একজনকে সভাপতি কিংবা সম্পাদক হিসেবে চূড়ান্ত করে প্রস্তাব দেয়া হলে, তাদের কেউ কেউ আবার বাদ সাধছেন। পদে না রাখার পক্ষে নানা যুক্তিও দেয়া হচ্ছে। এতে হাইকমান্ডে স্পষ্ট কোনো বার্তা যাচ্ছে না।

সূত্রমতে, ঢাকা মহানগর উত্তরে সভাপতি হিসেবে সাবেক কমিশনার বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতা এম এ কাইয়ুমের নাম বেশ জোরেশোরেই আলোচনা হচ্ছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও নাকি কাইয়ুমকে সভাপতি পদে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে রেখেছেন। তবে দলের ভেতরে একটি অংশ তাকে সভাপতি না করার জন্য নানা যুক্তি খাড়া করছেন। এরা বলছেন- কাইয়ুম দেশের বাইরে রয়েছেন, তার বিরুদ্ধে রয়েছে অনেক মামলা। শিগগিরই দেশে ফিরতে পারবেন না। তবে দলের হাইকমান্ডের কাছে এ ধরনের বার্তা দেয়ার পরও খুব একটা কাজে আসেনি। আবার অপরদিকে, কাইয়ুমের পরিবর্তে কেউ কেউ চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর (অব.) কামরুল ইসলামকে সামনে আনার চেষ্টা করছেন। তবে শেষ অবধি তা ধোপে টিকছে না।  

কাইয়ুমের সঙ্গে উত্তরের সাধারণ সম্পাদক পদে কমিশনার আহসান উল্লাহ হাসানকে মিলানোর চেষ্টা করলেও এখন সেখানে আরো দুজনের নাম এসেছে। এরা হলেন- সাবেক কমিশনার আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও মুন্সী বজলুল বাসিত আঞ্জু। তাদের ভালো আধিপত্য রয়েছে। 

এদিকে, দক্ষিণে সভাপতি পদের আলোচনায় সর্বশেষে যুক্ত নাম মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। সিনিয়র বেশির ভাগ নেতাই তার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে ঢাকার রাজনীতিতে তার দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সালাহউদ্দিন নিজেও চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেছেন। দক্ষিণের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী বলে বলে এসেছেন। তবে তার পাশাপাশি বর্তমান সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলও সভাপতি হতে আগ্রহী। চেয়ারপারসনও এ ব্যাপারে আগ্রহী। 

সূত্রমতে, সালাহউদ্দিন অথবা সোহেল যে কেউ দক্ষিণের সভাপতি বা সম্পাদকের পদ পাচ্ছেন। বলা হচ্ছে, উত্তর ও দক্ষিণে সুপার সেভেন কিংবা সুপার ফাইভ কমিটি ঘোষণা করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ইতোমধ্যে একটি শর্ট লিস্ট তৈরি করেছেন, যেখান থেকে নেতা বাছাই করা হবে।

দল পুনর্গঠনের দায়িত্বে নিয়োজিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেছেন, ঢাকা মহানগর দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া একদম শেষ পর্যায়ে। ২৬ মার্চের পর অথবা ৩০ মার্চ কুসিক নির্বাচনের পর কমিটি ঘোষণা করা হবে।

উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যারা তৎপরতা চালাচ্ছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন- আব্দুল আলীম নকী, আতিকুল ইসলাম মতিন, এ জি এম শামছুল হক, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ, শাহিনুর আলম মারফত, আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর মো. সাজ্জাদ হোসেন, মাসুদ খান, রুহুল আমিন জাহাঙ্গীর, গোলাম কিবরিয়া মাখন, আলী আকবর আলী, খন্দকার জিল্লুর রহমান, শাহ আলম মোল্লা, শেখ হাবিবুর রহমান হাবিব ও এম এস আহাম্মদ আলী।

মহানগর দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যারা দেনদরবার করছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন- মীর হোসেন মিরু, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, সাবেক কমিশনার মোশাররফ হোসেন খোকন, তানভীর আহমেদ রবীন, মো: মুজিবুর রহমান খান, জয়নাল আবেদিন রতন চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর আনোয়ার পারভেজ বাদল, শেখ আমির হোসেন, হাজী মো: মনির হোসেন চেয়ারম্যান, মো: শামসুল আলম চিনু, এম এ হান্নান, মো. জুম্মন মিয়া চেয়ারম্যান, সাবেক কমিশনার আবদুল লতিফ, লতিফ উল্লাহ জাফরু, শামসুল হুদা, সাজ্জাদ জহির, আতিকুল্লাহ আতিক ও গোলাম হোসেন।

সোনালীনিউজডটকম

Wordbridge School
Link copied!