• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

‘হামরা সেবার জনতে কান্দি ওমরা হাসে’


নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর মার্চ ৬, ২০১৭, ১০:৩৮ এএম
‘হামরা সেবার জনতে কান্দি ওমরা হাসে’

রংপুর: ‘হামরা গরীব মানুষ। তেমন টাকা পাইস্যা নাই দেকি উগিক সরকারি হাসপাতালোত ভর্তি করাচি। কিন্তু এটে ডাক্তাররা যে স্টাইক শুরু করছে, তাতে হামার কষ্ট দিন দিন বাড়ি যাওচে। হামরা চিকিৎসার অভাবে কান্দি আর ওমরা বাইরোত পোস্টার হাতোত নিয়্যা হাসাহাসি করে। এমরা কেমন মানুষ বাহে।’ রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য মেয়ে ভর্তি করিয়ে বিপাকে পড়া আবদুল বাসেত আলী এভাবেই তার আক্ষেপের কথাগুলো জানান। এরকম অভিযোগ করেন আরো অনেকেই।

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তি প্রত্যাহারসহ কর্মস্থলে বহাল রাখার দাবিতে শনিবার থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল। সময় মতো চিকিৎসকদের সেবা ও পরামর্শ না পেয়ে নিদারুণ দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। এতে করে বেড়েই চলেছে অসহায় রোগীদের করুণ আহাজারি।

উত্তরের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই হাসপাতালে প্রতিদিনই আড়াই হাজারের বেশিরোগী ভর্তি থাকেন। হঠাৎ করে শুরু হওয়া টানা তিনদিনে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।

এদিকে রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে হাসপাতালের সব সিনিয়র চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে রোগী ও স্বজনদের সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ করেন, শনিবার থেকে হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক নেই। তাই চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। হাসপাতালের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাড়তি টাকা যেমন লাগে তেমনি শেষ নেই হয়রানির।

এদিকে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে এরই মধ্যে সিনিয়র চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অনিমেষ মজুমদার। তিনি বলেন, তার অধীনে থাকা সব চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অজয় কুমার রায় বলেন, ‘রোগী ও স্বজনরা যাতে সেবা ও উন্নত চিকিৎসা পান সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।’

রংপুর ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ফারহান রহমান জানান, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তি প্রত্যাহারসহ তাদের কর্মস্থলে বহাল রাখার দাবিতে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এক রোগীর স্বজনদের মারধর করে। এঘটনায় চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এছাড়া ছয় মাস পরে তাদের চারটি ভিন্ন হসপাতালে ইন্টার্নশিপ করার শাস্তিও দেওয়া হয়। এসব শাস্তি প্রতিরোধের জন্য রংপুরে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানান ফারহান রহমান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!