• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হিটলারের চেয়েও বড় বিকারগ্রস্ত ট্রাম্প!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ২৩, ২০১৬, ০৪:৪৪ পিএম
হিটলারের চেয়েও বড় বিকারগ্রস্ত ট্রাম্প!

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশটির রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাডলফ হিটলারের চেয়েও অধিক মনোবিকারগ্রস্ত প্রবণতাসমূহের অধিকারী। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটাই প্রমাণিত হয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মনোবিকারের মাত্রা নির্ণয়ের জন্য ওই গবেষণা চালানো হয়।

সচরাচর মনোবিকারগ্রস্তদের মধ্যেই দেখা যায় ব্যক্তিত্বের এমন কিছু বৈশিষ্ট্যের ওপর তাদের স্কোরিং করা হয়। এসব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে ভয়হীনতা, নিষ্ঠুর হৃদয়হীনতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা।

গবেষণায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে স্কোর উঠে এসেছে তা তাকে হিটলার ও উগান্ডার স্বৈরশাসক ইদি আমিনের মতো ইতিহাসের কুখ্যাত সব স্বৈরশাসকদের কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আর ডেমোক্র্যাট দল থেকে মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন এর মনোবিকারের মাত্রা নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ও সম্রাট নিরোর সমপর্যায়ের।

গবেষণায় বলা হয়, মনোবিকারগ্রস্ততার বিষয়টি প্রধানত অনুতাপহীন খুনিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তবে সাধারণ কোনো মানুষের মধ্যেও খুনে প্রবণতা ছাড়াই মনোবিকার থাকতে পারে।

গবেষণায় আরো বলা হয় শুধু বর্বর নেতারাই যে মনোবিকারে আক্রান্ত তা নয়। বরং সেন্ট পল ও যিশু খ্রিষ্টের মতো সাধু-সন্ত এবং মহামানবদের মধ্যেও মনোবিকার ছিল।

এতে আরো বলা হয়, এ ধরনের মনোবিকারগ্রস্ত প্রবণতা প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা নাও সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি মনোবিকারগ্রস্ত প্রবণতাগুলোর সঠিক সমন্বয়ের মাধ্যমে একজন ভালো নেতৃত্বও তৈরি হয়।

গবেষণায় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ৮টি মনোবিকার প্রবণতা রয়েছে কিনা তা প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে ওই বৈশিষ্ট্যগুলো থাকলেই যে কেউ পুরোপুরি মনোবিকারগ্রস্ত হয়ে গেছেন তা বলা যাবে না।

তবে এসব বৈশিষ্ট্যের কয়েকটি, যেমন ভয়হীনতা বা মানসিক চাপে আক্রান্ত না হওয়ার প্রবণতা ইতিবাচকও হতে পারে।

অন্যান্য বৈশিষ্ট্য, যেমন নিজের দোষ অপরের ওপর চাপানোর প্রবণতা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদাসীনতা অনেক বেশি নেতিবাচক। আর নিষ্ঠুর হৃদয়হীনতা ভালো এবং খারাপ উভয় ধরনের নেতৃত্বের মধ্যেই থাকতে পারে।

মহান ও কুখ্যাত উভয় ধরনের নেতৃত্বই সাধারণ যেকোনো মানুষের চেয়ে বেশি মনোবিকারগ্রস্ত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হন। তবে এসব বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেই নেতৃত্বের ক্ষেত্রে সাফল্যও অর্জিত হয়।

উদাহরণত, যে ব্যক্তি উচ্চমাত্রায় প্রভাব বিস্তারকারী প্রবণতা, ভয়হীনতা এবং নিষ্ঠুর হৃদয়হীনতার মতো বৈশিষ্ট্যের অধিকারী তিনি এমন নেতা হয়ে উঠতে পারেন যিনি নির্মোহ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।

আর এসব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যদি অন্যকে দোষারোপের মতো প্রবণতাও থাকে তাহলে তা একজন নেতাকে গণহত্যাকারীতে পরিণত করতে পারে।

মি. ট্রাম্প সামাজিক প্রভাব বিস্তার প্রবণতা ও ভয়হীনতায় হিটলারকেও ছাড়িয়ে গেছেন। অন্যদিকে, ম্যাকিয়াভেলিয়ান আত্মকেন্দ্রিকতা ও নিষ্ঠুর হৃদয়হীনতায় হিটলার ইতিহাসের আর বাকি সব কুখ্যাত নেতাদেরও ছাড়িয়ে গেছেন।

ট্রাম্পের চেয়ে কম মনোবিকারগ্রস্ত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হিলারি ক্লিনটন অবশ্য ম্যাকিয়াভেলিয়ান আত্মকেন্দ্রিকতায় রোমান সম্রাট নিরোকেও ছাড়িয়ে গেছেন।

গতানুগতিক শক্তিশালী নেতৃত্বের মধ্যে সচরাচর যে সাধারণ বৈশিষ্ট্যটি দেখা যায় সেটি হলো, ভয়হীন কর্তৃত্বপ্রবণতা। এ ক্ষেত্রে ট্রাম্প সর্বোচ্চ স্কোর পেয়েছেন।

এ ছাড়া এই শতকোটিপতি ব্যবসায়ী আত্মকেন্দ্রিক আবেগময়তার ক্ষেত্রেও অন্যদের ছাড়িয়ে গেছেন।

সায়েন্টিফিক আমেরিকান মাইন্ড জার্নালে প্রাকাশিত ওই গবেষণায় আরো বলা হয়, ইতিহাসের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব অষ্টম হেনরি এবং উনস্টন চার্চিলের মতো ব্যক্তিত্বরাও মনোবিকারে আক্রান্ত ছিলেন।

এ ছাড়া আরো কিছু পেশায় এ ধরনের মনোবিকারগ্রস্ততা লোককে বিকশিত হতে সহায়তা করে। সেগুলো হলো ব্যবসা, সামরিক বাহিনী ও আইন ব্যবসা। সূত্র: দ্য মিরর

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!