• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
পাহাড়ি ঢল-অতিবৃষ্টি

১২ ঘণ্টায় মনু নদীতে বিলীন ৩৬ দোকান


কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জুন ২৫, ২০১৮, ১০:৪২ পিএম
১২ ঘণ্টায় মনু নদীতে বিলীন ৩৬ দোকান

মৌলভীবাজার : পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মনু নদীর পানি বেড়েছে। ফলে উপজেলার শত বছরের কাউকাপন বাজার এলাকায় গত শুক্রবার থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। মাত্র ১০-১২ ঘণ্টার ব্যবধানে ৩৬টি দোকান মনু নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দোকানের জিনিসপত্র কিছুটা রক্ষা হলেও বেশিরভাগ ভেসে গেছে স্রোতের তোড়ে। ভাঙন এলাকা দ্রুত মেরামত করা না হলে বাজারটি এই বর্ষা মৌসুমে পরোপুরি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।

সরেজমিন রোববার (২৪ জুন) কাউকাপন বাজার এলাকায় গেলে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পরিমল চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক মখলিছুর রহমান ও সমাজসেবক সাইফুল ইসলাম জানান, প্রায় ৫০ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ৩৬টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পীযুষ দেবনাথ, ছুটই মিয়া ও রফিক মিয়ার ৩টি বড় মার্কেট নদীগর্ভে চলে গেছে। ৩টি মার্কেটে ১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া হাবিবুল হোসেন, সাইফুল ইসলাম, হাজী হাবিবুর রহমান, সুরণ রায়, হাজী আবদুল খালিক, হাজী আবদুল গফ্ফার, জয়নাল মিয়া, আবদুস শহিদ মায়া, তোয়াব মিয়া ও হাজী আবদুল খালিক কনা মিয়ার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙন শুরু হওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পণ্য উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। বেশিরভাগ পণ্য নদীর স্রোতে ভেসে গেছে।

তারা দাবি করেন, ৩৬টি দোকানে ব্যবসায়ীদের মোট ক্ষয়ক্ষতি কোটি টাকা ছড়িয়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, বন্যা শুরু হওয়ার আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে কাউকাপন বাজার এলাকায় কিছু কাজ করে। কিন্তু সীমান্তের ওপার থেকে আসা স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড়ি ঢল সেই প্রতিরক্ষা বাঁধটি মুহূর্তেই ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সরকার এই বাজার থেকে প্রতিবছর রাজস্ব পেয়ে থাকে। ফলে বাজারটি রক্ষায় ব্লক দিয়ে দ্রুত মেরামতের দাবি জানান তারা। নয়তো পুরো বাজারটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

এলাকাবাসী বলেন, আর এই কাউকাপন বাজার দিয়ে ভাঙন সৃষ্টি হলে হাজীপুর ইউনিয়নের ৫-৬টি গ্রামসহ রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বর্তমানে বাজারের পাকা সড়ক, বিদ্যুতের ৩টি খুঁটিসহ পুরো বাজারটি হুমকির মুখে রয়েছে। এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল মতিন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুস শহীদ ও মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র চক্রবর্তী গতকাল রোববার সরেজমিন কাউকাপন বাজারে মনু নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন।

কাউকাপন বাজার ছাড়াও তারা একই ইউনিয়নের মন্দিরা, টিলাগাঁও ইউনিয়নের বালিয়া এবং শরীফপুর ইউনিয়নের তেলিবিল এলাকায় মনু নদীর সৃষ্ট ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুস শহীদ জানান, দ্রুত কাউকাপন বাজারের ভাঙন মেরামত ও ব্লক স্থাপনের জন্য একটি আলাদা প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল মতিন জানান, বাজারের দোকানপাট ভেঙে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড আলাদা প্রকল্প করে দেবে। যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!