• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭, ১১:০৯ এএম
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন

ঢাকা : ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তারিখটি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ও বরণীয় দিন। এদিন মহান ভাষা আন্দোলনের প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। আন্দোলন স্ফুলিঙ্গের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার বাইরে সব শহরে। সেদিন ১১ মার্চ নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে প্রথম হরতাল পালিত হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মাতৃভাষা বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে। ভাষা আন্দোলন মাত্র ছয় মাসের মধ্যে ছাত্রদের অঙ্গন পেরিয়ে জনতার মঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। 

অর্থাৎ ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন গণআন্দেলনের রূপ ধারণ করে। তমদ্দুন মজলিশের উদ্যোগে ভাষা আন্দোলনের শুরুর দিকে গণপরিষদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় গণপরিষদের কয়েকজন সদস্য বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত অন্যতম। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে গণপরিষদের অন্যতম ভাষা করার প্রস্তাব পেশ করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাবটি আলোচনায় আসে, কিন্তু স্পিকার তা অগ্রাহ্য করেন। এর প্রতিবাদে ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। ধর্মঘট চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অধ্যাপক আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ঘোষণা দেয়া হয় ২৯ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হবে। 

বাংলাকে গণপরিষদের সরকারি ভাষা করার দাবিতে এবং মুদ্রা ও ডাকটিকিটসহ বিভিন্ন সরকারি ফর্ম ও দলিলপত্রে বাংলা ভাষাকে বাদ দেয়া এবং সশস্ত্র বাহিনীর পরীক্ষায় বাংলা ভাষাকে উপেক্ষা করার প্রতিবাদে ২৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ এবং তমদ্দুন মজলিশ যৌথভাবে ছাত্র ধর্মঘট ও প্রতিবাদ দিবস পালন করে। এ ধর্মঘট চলাকালে বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ ও মজলিশ কর্মীরা পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়। ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ এবং তমদ্দুন মজলিশ যৌথভাবে কর্মসূচি দেয়া শুরু করে। দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সমাবেশের পর ২৯ ফেব্রুয়ারি তমদ্দুন মজলিশের পর্যালোচনা সভায় বিভিন্ন স্থানে মজলিশ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর পুলিশের হয়রানি ও নির্যাতনের নিন্দা জানানো হয় এবং ১১ মার্চ প্রদেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট পালনের কর্মসূচি আংশিক পরিবর্তন করে ওই দিন পূর্ব বাংলার সর্বত্র হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

এ উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য ১ মার্চ একটি বিবৃতি তৈরি করা হয়। এ বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের অন্যতম হচ্ছেন সেদিনের তরুণ ও উদীয়মান রাজনীতিবিদ শেখ মুজিবুর রহমান। জাতীয় রাজনীতি এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এই বিবৃতির গুরুত্ব অপরিসীম।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!