• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
মূলধন ঘাটতি

২০ হাজার কোটি টাকা চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো


অর্থনৈতিক রিপোর্ট ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮, ০২:৩৪ পিএম
২০ হাজার কোটি টাকা চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো

ঢাকা : মূলধন ঘাটতি মেটাতে সরকারের কাছে ২০ হাজার কোটি টাকা চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮) বাজেটে ব্যাংকগুলোর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ আগামী মে মাসের মধ্যে পাবে ব্যাংকগুলো। তবে কোন ব্যাংক কত টাকা পাবে তা চ‚ড়ান্ত হয়নি। ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির গুরুত্ব ও বরাদ্দ বিবেচনা করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ অর্থ বরাদ্দের সুপারিশ করবে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠক করেছে। বিভাগের সিনিয়র সচিব  মো. ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে সোনালী, রূপালী, জনতা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্র জানায়, মূলধন ঘাটতি পূরণে ২০ হাজার কোটি টাকা চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক। সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) তাদের চাহিদার কথা জানান। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জানানো হয়, বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থ ছাড় হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ছয় ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মূলত খেলাপি ঋণের কারণেই মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো। মূলধন ঘাটতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোকে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সুপারিশ করবে। পরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এপ্রিল-মে মাসের মধ্যেই ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মূলধন ঘাটতি পূরণে সবচেয়ে বেশি অর্থ চেয়েছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটি প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা চাহিদার কথা উল্লেখ করেছে। এছাড়া রূপালী, জনতা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি  উন্নয়ন ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক বড় ঘাটতিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে দেওয়া ব্যাংকগুলোর সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ২ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। আর জনতা ব্যাংকের ঘাটতি ১ হাজার ২৭৩ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ৬৯০ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৭ হাজার ৫৪০ কোটি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৭৪২ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি রয়েছে। জনতা ব্যাংক প্রথমবারের মতো ঘাটতিতে পড়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে কখনই প্রয়োজনীয় মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। এজন্য ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত করের টাকা থেকে সরকার মোট ৯ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা জোগান দিয়েছে।

বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা সরকারি সেবায় প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ২৪ হাজার কোটি টাকা জনগণের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো জনগণের সেবায় যুক্ত থাকলেও কোনো আর্থিক সুবিধা পায় না। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মতো সরকারি অর্থ বিতরণে ব্যাংকগুলো যে সেবা দিয়ে আসছে তার জন্য সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।   

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি সেবা ছড়িয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। এর মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ভ‚মিকা রাখতে গিয়েও মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ‘আমরা আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমাদের ব্যাংক আগের থেকে ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে। আর সরকার আরো সহায়তা করলে ব্যাংকটিকে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পারব আমরা।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!