• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ নভেম্বর শুরু হচ্ছে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব


বিনোদন প্রতিবেদক অক্টোবর ২৪, ২০১৬, ০৯:২৭ পিএম
২৪ নভেম্বর শুরু হচ্ছে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব

ঢাকা : আবার রাগ-রাগিনীর মোহময়তার রাত্রি আসছে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সূধা পান করে অপার্থিব জগতের স্বাদ নেয়া যাবে আর একমাস পরেই। আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে পাঁচ রজনীর বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব ২০১৬। পঞ্চমবারের মতো স্বয়ার নিবেদিত এ উৎসবের আয়োজক বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। 

এ বছর উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। আসরে হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়াসহ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর বংশধর ওস্তাদ আশিষ খাঁ সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।  

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। 
পাঁচ দিনের উৎসবটির সূচনা হবে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায়। উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উৎসব চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে সুরের খেলা। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হবে উৎসবে অংশগ্রহণের নিবন্ধন কার্যক্রম।

উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, উপদেষ্টা আবদুল মোমেন, স্কয়ার টয়লেট্রিজ ও মাছারাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও ব্র্যাংক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন্স জারা মাহবুব। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সঙ্গীতের মাধ্যমে চিত্তের বিকাশ ঘটিয়ে গড়ে তুলতে হবে আলোকিত মানুষ। আর আলোকিত মানুষ তৈরির মাধ্যমে মৌলবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া সহজ হবে।  

এবারের উৎসবের অংশ নেবেন বাংলাদেশের ১৬৫ জন শিল্পী। উদ্বোধনী পর্বে নৃত্যশিক্ষক শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ও নির্দেশনায় নৃত্যনন্দন দলের প্রায় ষাটজন শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল গান ও ভাঙ্গা গানে মণিপুরী, ভারতনাট্য, ওড়িশি ও কত্থক রীতির রূপায়ন পরিবেশন করবেন। উৎসবের চতুর্থ দিনে কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন মুনমুন আহমদ ও তার দল। উৎসবের শেষ দিন প্রিয়াংকা গোপের একক কণ্ঠের খেয়ালের সঙ্গে থাকবে তার নির্দেশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা। এছাড়া উৎসবের বিভিন্ন দিনে সেতার, সরোদ ও তবলায় যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করবে বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীকালয়ের শিক্ষার্থীরা।  

এবারের উৎসবের অংশ নিচ্ছেন বেনারস ঘরানার পদ্মবিভূষণপ্রাপ্ত ৮৭ বছরের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী বিদুষী গিরিজা দেবী। উৎসবের প্রবীণতম এই শিল্পী খেয়াল, ঠুমরি ও টপ্পা পরিবেশন করবেন। প্রথম দিনের পরিবেশনায় অংশ নেবেন এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেয়া কিংবদন্তি শিল্পী আলাউদ্দিন খাঁর বংশধর ওস্তাদ আশিষ খাঁ। এবারের উৎসবে প্রাধান্য পাবে নবীন শিল্পীদের উপস্থিতি  ও একাধিক যৌথ পরিবেশনা। পুরুষ ও নারী কণ্ঠের ভিন্ন স্তরের রাগে পরিবেশিত জাসরাঙ্গি শীর্ষক যুগলবন্দি পরিবেশনায় অংশ নেবেন জয়পুর আত্রোলির বিদুষী অশ্বিনী ভিদে ও মেওয়াতি ঘরানার পণ্ডিত সমঞ্জীব অভয়ঙ্কর। উৎসবের প্রথম দিনে পশ্চিমা ঢংয়ে বেহালা বাজিয়ে শোনাবেন পদ্মভূষণপ্রাপ্ত ড. এল সুব্রহ্মণ্যন। ওড়িশি নৃত্যের আশ্রয়ে মঞ্চ আলোকিত করবেন বিদুষী মাধবী মুডগাল ও তার শিষ্যা আরুশি মুডগাল। এবার এ উৎসবে প্রথমবারের মতো শোনা যাবে ম্যান্ডোলিনের সুর। বাঁশি ও ম্যান্ডোলিনের যুগলবন্দি পরিবেশন করবেন গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত শিল্পী বংশীবাদক রনু মজুমদার ও ইউ রাজেশ।   

বিগত বছরের মতো এবারও অনন্য এই সঙ্গীতায়োজনে অংশ নেবেন প্রবাদপ্রতিম বাঁশরিয়া  হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। সন্তুরের সুরে মাত করবেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা। কণ্ঠসঙ্গীত ও বাদ্যের নানা পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবতী, পণ্ডিত উলহাস কশলকর, ওস্তাদ রশিদ খান, পণ্ডিত কুশল দাস, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার ও পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার। শোনা যাবে বিশিষ্ট সেতারির পণ্ডিত সঞ্জয় বন্দ্যোয়েরর মিষ্টি-মধুর সেতারের বাজনা। থাকবে পদ্মভূষণপ্রাপ্ত কিরানা ঘরানার কোকিলকণ্ঠী শিল্পী ড. প্রভা আত্রে এবং ফরুকাবাদা ঘরানার খ্যাতিমান তবলিয়া পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোধ্যায় ও তার ছেলে অনুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিবেশনা। বাঁশি ও বেহালার যুগলবন্দি পরিবেশনায় সুর ছড়াবেন প্রবীণ গোধকিন্ডি ও রাতিশ টাগডের। যৌথ তবলাবাদনে অংশ নেবেন পণ্ডিত যোগেশ শামসী ও পণ্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া বিভিন্ন মেজাজের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উপস্থাপন করবেন সেতারে রাগসঙ্গীতের নন্দিত শিল্পী পূর্বায়ণ চট্টোপাধ্যায়, কর্ণাটকি সঙ্গীতে পারদর্শী ভগ্নিদ্বয় রঞ্জনী ও গায়ত্রী, কর্ণাটকি বংশীবাদক শশাঙ্ক সুব্রহ্মণ্যন, খেয়ালিয়া আরবতহী আঙ্কালিকার, জয়তীর্থ মেউন্ডি ও কুমার মারদুর। 
কনিষ্ঠতম শিল্পী হিসেবে উৎসবে অংশ নেবেন বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত ফুলঝুরি খান। সাত বছরের এই শিল্পী সেতার বাজিয়ে শোনাবেন।  

প্রতিবছরের মতো অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে প্রবেশ পাশ। নভেম্বরের শুরু থেকে সীমিত সময়ের জন্য চলবে এই নিবন্ধন কার্যক্রম। অনলাইনের বাইরে ধানমন্ডির ৭/এ সড়কের ৬০ নম্বর বাড়ির জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠ এবং এয়ারপোর্ট রোডের খিলক্ষেতের বেঙ্গল সেন্টারে সরাসরি নিবন্ধন করা যাবে। কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না উৎসব আঙিনা এবং থাকবে না গাড়ি পার্কিয়ের সুবিধা। প্রতিদিন রাত ১টায় বন্ধ হয়ে যাবে উৎসবের প্রবেশ পথ। ভোরে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে ফেরার জন্য বাস থাকবে নির্দিষ্ট রুটে। এ ছাড়াও উৎসবরে বিষয়ে তথ্য জানা যাবে  www.bengalclassicalmusicfest.com I  www.bengalfoundation.org এ দুটি ওয়েবসাইটে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!