• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২৬ মে আসানসোল যাচ্ছেন শেখ হাসিনা


নিউজ ডেস্ক মে ১৯, ২০১৮, ০৪:৩২ পিএম
২৬ মে আসানসোল যাচ্ছেন শেখ হাসিনা

ঢাকা : উৎসবের সাজে সাজছে বিদ্রোহী কবির জন্মস্থান বর্ধমান জেলার আসানসোলে তারই নামে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ, আগামী ২৬ মে সকালে প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় সমাবর্তনে বিশেষ অতিথির আসন অলঙ্কৃত করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেখানে বাংলাদেশে কাজী নজরুল ইসলামের আদর্শকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার যে উদ্যোগ তার সরকার নিয়েছে সেই অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দেওয়া হবে সম্মানসূচক ডিলিট উপাধি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার যে শিক্ষণীয় উদ্যোগ বাংলাদেশ নিয়েছে তা দেখে পশ্চিমবঙ্গের অনেক কিছু শেখার আছে।    

সম্প্রতি আসানসোল ঘুরে দেখা গেল, শহরবাসীর মুখে মুখে এখন শেখ হাসিনার নাম। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ২৬ মে’র জন্য।

জানা যায়, আসানসোল রেলস্টেশন থেকে চার কিলোমিটার দূরে কালনা বাইপাসের ধারে ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা পায় কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বর্ধমান জেলার ১৯টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় ২০১৩ সালে। সে হিসাবে এবার তৃতীয় সমাবর্তন। এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়টি কোনো দেশের সরকারপ্রধানকে ডিলিট উপাধি দিতে চলেছে। এর আগে এ সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশের অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী।

এবার বিশ্ববিদ্যালয় নীতির্নিধারক কমিটির কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডিলিট দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হলে সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। বিষয়টি জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে। তাদের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। শেখ হাসিনা নিজ হাতে উপাধি গ্রহণ করবেন, এটা চূড়ান্ত হওয়ার পর উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধু ক্যাম্পাস নয়, গোটা আসানসোল জেলাই যেন প্রস্তুতি নিচ্ছে তাকে স্বাগত জানাতে।

সরেজমিন দেখা যায়, ১৬ একরের এই ক্যাম্পাসের ৫১টি অনুষদের সবকটিতেই ধোয়ামোছা চলছে। শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা আছেন উৎসবের আমেজে। প্রশাসনিক ভবনে কথা হয় উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর সঙ্গে। বলেন, ২০১৫ সালে নজরুল সেন্টার ফর স্যোসাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ উদ্বোধন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, নজরুল ইসলামকে ঘিরে যে গবেষণা ও চর্চা হয়েছে, বাংলাদেশই এখানে অনেক এগিয়ে। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় করতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত তার অনুপ্রেরণায়ই আমরা নজরুল গবেষণায় বাংলাদেশের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত হয়ে গিয়েছি।

শেখ হাসিনাকে ডিলিট দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় একটা বিষয় পর্যবেক্ষণ করেছে, যেভাবে বাংলাদেশে বিদ্রোহী কবি; সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের আদর্শ-সৃষ্টি-ভাবনাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা আমাদের সবার সামনেই দৃষ্টান্ত এবং শিক্ষণীয়ও।

ধর্মান্ধহীন একটা সমাজ গড়ার যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তা আমরা গভীরভাবে লক্ষ করেছি। আর সে কারণেই তাকে এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে আমরাও গর্বিত।

তিনি বলেন, সমাবর্তনের দিন আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাধ্যহ্নভোজের আমন্ত্রণও করেছি। বর্ধমানের বিখ্যাত কিছু মিষ্টি যেমন- মিহিদানা, সীতাভোগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মধ্যাহ্নভোজের সময় দুই নেত্রীর কথাবার্তা হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন না। রোজা থাকবেন। অবশ্য উপহার হিসেবে খাবারগুলো তার সঙ্গে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি অদৃশ শার্মা বলেন, প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী আসছেন। এমন একটি দেশ যেখানে আমাদের কবি কাজী নজরুল ইসলাম জাতীয় কবি। বাংলাদেশের সর্বস্তরে বিদ্রোহী কবিকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে। আমরাও গবির্ত হতে পারব যখন সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ডিলিট উপধি দেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রকৃতি ব্যানার্জি বলেন, ভাবতেই ভালো লাগছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন। থাকতে না পারলে খুব খারাপ লাগবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনের খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মানুষও উচ্ছ্বাসিত। বিকাশ সিংহ রায়, অনিমেষ দাস, রফিকুর রহমান, বিলকিস আরা, সুকুমার সাহার মতো স্থানীয় অনেকে জানান শেখ হাসিনার জন্য তাদের প্রতীক্ষার কথা। বলেন, বাংলাদেশ নাম শুনলেই অনেক আপন মনে হয়। দেশটির সঙ্গে যেন নাড়ির টান রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!