• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
তফসিল ঘোষণা

৬১ জেলায় ভোটগ্রহণ ২৮ ডিসেম্বর


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২০, ২০১৬, ০৯:৪৮ পিএম
৬১ জেলায় ভোটগ্রহণ ২৮ ডিসেম্বর

ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচন। তিন পার্বত্য জেলা (বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি) বাদে দেশের ৬১ জেলায় এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচন হবেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত পদের মহিলা সদস্য।

আগামী ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্যপদে প্রার্থী হতে আগ্রহীরা ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। যাচাই-বাছাই হবে ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ হবে।

জনপ্রতিনিধিদের ভোটে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ আগেই ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠিক করে দিয়েছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ রোববার (২০ নভেম্বর) নির্দলীয় এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।

সিইসি বলেন, জেলা পরিষদের অন্যতম বিষয় হলো- প্রচলিত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ভোটাররা এ নির্বাচনে ভোট দেবেন না। ভোট দেবেন জনপ্রতিনিধিরা এবং জনপ্রতিনিধিরা শুধু ভোটই দেবেন, কিন্তু তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

প্রতিটি জেলায় একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন। এ নির্বাচনে ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যেকোনো ভোটার প্রার্থী হতে পারবেন। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে তাকে সংশ্লিষ্ট জেলার ভোটার হতে হবে বলেও জানান সিইসি।

সিইসি আরো জানান, সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন হলেও জেলা পরিষদ আইনে প্রত্যক্ষ ভোটের বিধান নেই। পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন পরোক্ষ ভোটে।

জেলায় অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশন যদি থাকে, তাহলে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। তফসিল ঘোষণার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, মোহাম্মদ আবু হাফিজ ও ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়েছিল। আর কোনো জেলা পরিষদ নির্বাচন হয়নি। ১৯৮৮ সালে এইচ এম এরশাদ সরকার প্রণীত স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইনে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সরকারের নিয়োগ দেয়ার বিধান ছিল; পরে আইনটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠনের জন্য নতুন আইন করে।

এরপর ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার ৬১ জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ দেয়। অনির্বাচিত এই প্রশাসকদের মেয়াদ শেষেই ডিসেম্বরে নির্বাচন হচ্ছে।

সংশোধিত জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী, জেলা পরিষদ হবে ২১ সদস্যের। যার মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন। তারা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহিলা সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। জেলা পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে চেয়ারম্যানের কাছে। তবে তার অনুপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে একজন বা সরকারি কর্মকর্তারাও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সরকার গেজেট করে সরকারি কোনো কর্মকর্তাকেও এ দায়িত্ব দিতে পারবে।

অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল: বিধিতে নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সরাসরি বা অনলাইনে দাখিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অনলাইনে যেকোনো প্রার্থী নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন।

এ ক্ষেত্রে প্রার্থী প্রথমে ইসি সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত লিংকে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম এন্ট্রি করে নিবন্ধন করবেন। নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর প্রার্থী সঙ্গে সঙ্গেই একটি ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড পাবেন। প্রাপ্ত ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর সংশ্লিষ্ট যেকোনো পদের মনোনয়ন ফরম পাওয়া যাবে। প্রার্থী অনলাইনে সংশ্লিষ্ট মনোনয়নপত্রটি পূরণ করবেন। মনোনয়নপত্র পূরণ সম্পন্ন হওয়ার পর পূরণ করা তথ্যাদি সঠিক আছে কি না, তা যাচাই করার পর ফরমটি প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট স্থানে প্রস্তাবকারী, সমর্থনকারী ও প্রার্থী স্বাক্ষর দেবেন।

স্বাক্ষরিত মনোনয়ন ফরম, জামানতের প্রমাণস্বরূপ ট্রেজারি চালান এবং হলফনামা সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্রসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি যথাযথ স্থানে স্বাক্ষর করার পর তা স্ক্যান করে পিডিএফ আকারে দাখিল করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর প্রার্থীর প্রদত্ত মোবাইল ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসএমএসের মাধ্যমে দাখিলের বিষয় নিশ্চিত করা হবে। রিটার্নিং অফিসার অনলাইনে প্রাপ্ত প্রতিটি মনোনয়ন লিখে ক্রমিক নম্বর দেবেন। অনলাইনে দাখিল করা মনোনয়নপত্রসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কাগজপত্রের মূল কপি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের নির্ধারিত দিন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে দাখিল করবেন। 
অনলাইনে একজন প্রার্থী একাধিক মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি একাধিক মনোনয়ন দাখিল করলে রিটার্নিং অফিসার প্রথম বৈধ মনোনয়নপত্র ব্যতীত অন্য সব মনোনয়নপত্র বাতিল করবেন।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!