• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৬৮৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা ভারতের


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭, ০৪:০৭ পিএম
৬৮৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা ভারতের

ঢাকা: হায়দরাবাদ টেস্টে সম্ভবত রানের চাপায় পিষ্ট হতে যাচ্ছে সফরকারি বাংলাদেশ। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা একাধিক সুযোগ দিলেও সেটি কাজে লাগাতে ব্যার্থ মুশফিকরা। ইতিমধ্যেই ৬ উইকেটে ৬৮৭ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে টিম ইন্ডিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমেছে টাইগাররা।

শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ৩ উইকেটে ৩৫৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ভারতের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ভিরাট কোহলি ও আজিঙ্কা রাহানে। দুইশতাধিক রানের এ জুটির দুই মালিককে সাজঘরে পাঠান বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

কোহলি ও রাহানের ব্যাটে ওয়ানডে রান রেটে স্কোর বাড়াতে থাকে ভারত। দিনের প্রথম সেশনেই সাতটি চার মেরে ব্যক্তগত ১৫০ ও দলীয় ৪০০ রান পূর্ণ করেন কোহলি। ১০৪ ওভার শেষে পানি পান বিরতির আগে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় তিন উইকেটে ৪২৬ রান।

ওভার প্রতি চার রান করে এগোতে থাকা ভারতকে থামাতে হলে বিশেষ কিছু দরকার ছিল। বিরতি শেষে দুই প্রান্ত থেকে মিরাজ ও তাইজুল রান আটকে রাখার মিশনে বল করে যান। রান শুকিয়ে উইকেটের দেখাও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১১৪তম ওভারে এসে তাইজুলের অফ ষ্ট্যাম্পের বাইরে বলে পরাস্ত হয়ে বাতাসে ড্রাইভ করে বসে রাহানে। শর্ট কাভারে থাকা মিরাজ তার বাম দিকে লাফিয়ে অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়ে রাহানেকে ৮২ রানে সাজঘরে ফেরান। দলীয় রান তখন চার উইকেটে ৪৫৬ রান।

ভালো বোলিংয়ের সুফল পেয়েছিলেন মিরাজ নিজেও। উইকেটের কিছুটা গ্রিপ কাজে লাগিয়ে ইনিংসের ১১৭তম ওভারে কোহলি লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু রিভিউতে রক্ষা পান ভারতীয় অধিনায়ক। একই ওভারে দুই দুইবার কোহলিকে ব্যাটের পাশ দিয়ে পরাস্ত করেন মিরাজ। ঠিক পরের ওভারেই ঋদ্ধিমান সাহাকে ফ্লাইটের লোভ দেখিয়ে সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন তাইজুল। কিন্তু কিপার মুশফিকের অমার্জনীয় ভুলে হাতছাড়া হয় আরেকটি সহজ সুযোগ। শেষ পর্যন্ত সাহা ও কোহলি ভারতকে কোন বিপদে না ফেলে চার উইকেটে ৪৭৭ রান তুলে লাঞ্চ ব্রেকে যায়।

কোহলি ১৯১ ও সাহা ৪ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চ শেষে খেলা শুরু করেন। হায়দরাবাদে তখন কোহলির আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল দর্শকরা। লাঞ্চের দুই ওভারের মাথায় তাইজুলকে কাভারের উপর দিয়ে তুলে মেরে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি এবং চারটিই চলতি মৌসুম খেলা টানা চার সিরিজে।

তবে কোহলির ডাবল সেঞ্চুরির পরেই আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। লেট কাট খেলতে গিয়ে উইকেটের সামনে ব্যক্তিগত ২০৪ রানের সময় ধরা পড়েন কোহলি। কোহলির বিদায়ের পর অবশ্য ভাগ্য প্রসন্ন হয় নি বাংলাদেশ। সাহা ও অশ্বিন দ্রুত ব্যাট চালিয়ে ভারতের রান বাড়াতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত মিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ রান করে আউট হন অশ্বিন।

দলের রান তখন ৫৬৮ রান ছয় উইকেটে। একই ওভারে মিরাজের আর্ম বল থেকে রক্ষা পান বাঁহাতি রবিন্দ্র জাদেজা। আরেক প্রান্তে থাকা ঋদ্ধিমান সাহা অবশ্য তার ফিফটি তুলে নেন। সেই সাথে ভারতের স্কোর ৬০০ ছাড়িয়ে যায়। মিরাজের বলে সাহা লেগ বিফরের ফাঁদে পড়লেও আম্পায়ারের সাড়া না পাওয়ায় মুশফিকের রিভিউ থেকেও রক্ষা পান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৬৮৭ রান তুলে প্রখম ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা।

প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও মিস ফিল্ডিংয়ের মহড়া দিয়েছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। এদিন রাহানের ক্যাচটি ফেলা ছাড়াও দুটি স্ট্যাম্পিংয়ে ব্যর্থ হন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। দুইটি সুযোগই নষ্ট হয় তাইজুলের ওভারে। ১৬৫ রানে কোহলি ও ৪ রানে ঋদ্ধিমানকে আউট করতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

এর আগে বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদ টেস্টের শুরুর আনন্দ মিলে যায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। প্রথম ওভারেই উইকেট পাওয়ার আনন্দ মিলিয়ে গেছে মুরালি বিজয়ের সেঞ্চুরি ও চেতেশ্বর পূজারার সঙ্গে তার দেড়শতাধিক রানের জুটিতে। এর পর স্বাগতিক অধিনায়ক বিরাট কোহলির দ্রুতগতির সেঞ্চুরিতে সেই আনন্দ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ভারতের স্কোরবোর্ড অনেক শক্তিশালীই হতে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা থামাতে হলে শুক্রবারের খেলায় বাংলাদেশি বোলারদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ফিল্ডিংও করতে হবে বেশ দাপটের সঙ্গে। আর এ লক্ষ্য নিয়েই হায়দরাবাদ টেস্টে ভারতকে দ্বিতীয় দিন মোকাবিলা করতে নেমেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বি।

ভারত একাদশ: মুরলি বিজয়, লোকেশ রাহুল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), আজিঙ্কা রাহানে, ঋদ্ধিমান সাহা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, ভুবনেশ্বর কুমার, উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!