• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অর্থনীতিতে বাড়ছে কোরবানির অবদান


এস এম মুকুল আগস্ট ৭, ২০১৯, ১১:২৬ এএম
অর্থনীতিতে বাড়ছে কোরবানির অবদান

ঢাকা : ঈদ অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে প্রতি বছর। এর কারণ মানুষের আর্থিক সমৃদ্ধি বাড়ছে।  প্রতিবছরের মতো এবারো ব্যবসায়ীরা আশা করছেন সব মিলিয়ে কোরবানির ঈদ অর্থনীতিতে আর্থিক লেনদেন ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে মোট নিবন্ধিত খামার ৬৬ হাজার, অনিবন্ধিত ৭০ হাজার। সব মিলিয়ে খামারের সংখ্যা ১ লাখ ৩৬ হাজার। এসব খামার থেকে প্রাণিসম্কদ অধিদফতরের হাতে এসে পৌঁছে গেছে কোরবানির পশুর তথ্য।

মৎস্য ও প্রাণিসম্কদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সারা বছর দেশে প্রায় দুই কোটি ৩১ লাখ ১৩ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া জবাই হয়। এর অর্ধেকই জবাই করা হয় কোরবানির ঈদে।

সারা দেশে কোরবানিযোগ্য প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ গবাদিপশুর মজুত আছে। এবার সারা দেশে কোরবানিযোগ্য ৪৫ লাখ ৮২ হাজার গরু-মহিষ, ৭২ লাখ ছাগল-ভেড়া এবং ছয় হাজার ৫৬৩টি অন্যান্য পশু আছে। ঈদুল আজহায় এক কোটি ১০ লাখ পশুর কোরবানি হতে পারে। গত বছর ঈদে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মোট সংখ্যা ছিল এক কোটি ১৫ লাখ এবং কোরবানি হয়েছিল প্রায় এক কোটি পাঁচ লাখ।

বড় হচ্ছে কোরবানির অর্থনীতি : কোরবানি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় একটি খাত। কোরবানির পশু ছাড়াও পশু বাঁধার রশি, খুঁটি, বাঁশ, সাজসজ্জার উপকরণ, পশুর খাবার- খড়, ভুষি, ঘাস-পাতা এবং কোরবানির পশু হাটে আনা-নেওয়ায় জড়িত ট্রাক, লঞ্চসহ অন্যান্য পরিবহন খাতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন ঘটে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, কোরবানির সময় চামড়ার বাণিজ্য ছাড়াও গরু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ছুরি-কাঁচি-বঁটি-দা’র ব্যবসা রয়েছে। গরুকে খাওয়ানোর খড়, ভুষির দেদার বেচাকেনা হয়। জবাইয়ের সময় পাটের চট, বাঁশের চাটাই এগুলোর দরকার হয়। আর মাংসের জন্য মশলার বিপুল ব্যবসার সঙ্গে আছে মাংস সংরক্ষণের জন্য রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের ব্যবসাও।

এর সঙ্গে গরু আনা-নেওয়া, বেচাকেনায় সহায়তা এবং জবাই ও মাংস তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমের বিনিময় মূল্যও উল্লেখযোগ্য। সবমিলিয়ে কোরবানির অর্থনীতির হিসাবটা বিরাট অঙ্কে গিয়ে দাঁড়ায়।

সরকারি নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি গরু-মহিষের জন্য ৫০০ টাকা, দুম্বা বা ছাগলের জন্য ২০০ টাকা এবং উটের জন্য ৬ হাজার টাকা রাজস্ব দিতে হয়। পশুর হাট ইজারা দিয়ে শুধু ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেরই আয় হয় প্রায় ২০ কোটি টাকা। দেশের বিভিন্ন জেলায় গড়ে ওঠা খামারগুলোতে কর্মসংস্থান হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষের।

তা ছাড়া কোরবানির পশু পরিবহন, টোল, বকশিস, বাঁশ-খুঁটির ব্যবসা, পশুর খাবারেও লেনদেন হয় কোটি কোটি টাকা। কোরবানি হওয়া ৫৫ লাখ গরুর প্রতিটি চামড়ার মূল্য গড়ে ১ হাজার টাকা ধরলেও এর মূল্য হয় ৫৫০ কোটি টাকা। আবার ৪০ লাখ ছাগলের প্রতিটির চামড়ার মূল্য ১০০ টাকা ধরলেও এ বাবদ হয় ৪০ কোটি টাকা।

গরু এবং ছাগলের চামড়া মিলিয়ে এই পুরো টাকা চলে যাচ্ছে সরাসরি গরিবদের হাতে। আরো আছে পশুর হাটে হাসিল আদায় ও আদায়ের কাজে জড়িতদের আয়। চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য চামড়ায় প্রায় ২ লাখ টন লবণের ব্যবহার হয়ে থাকে।

আরো আছে কোরবানির পশুর হাড়, চর্বি, শিং, দাঁত, লেজের পশম ইত্যাদির বহুমুখী শিল্প ব্যবহার। যার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক লেনদেন হয়। পশুর ভুঁড়ির বর্জ্য উন্নতমানের সার হিসেবে ব্যবহূত হয়। পশুর রক্ত মাছের সবচেয়ে উন্নতমানের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার হিসেবে বিশ্বজুড়ে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।

তাছাড়া পবিত্র কোরবানিকে ঘিরে মশলার ব্যবসাই হয়ে থাকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার। কাজেই দেশের অর্থনীতির চাকার গতিসঞ্চার করতে কোরবানির একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।

মানবীয় সংস্কৃতির মেলবন্ধনে কোরবানি : সুষ্ঠু সমাজ বিনির্মাণে সুষ্ঠু ও আদর্শ সমাজ গঠনের অসংখ্য দিকনির্দেশনা রয়েছে কোরবানির বিধানে। আমরা জানি কয়েকটি পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠে একটি সমাজ।

এসব পরিবারের মধ্যে যদি আন্তরিকতা, উদারতা, মায়ামমতা, ভালোবাসা বিরাজ করে, তাহলে পুরো সমাজের মধ্যে বিরাজ করবে অনাবিল শান্তির সুবাতাস। কোরবানির চামড়ার একমাত্র অধিকারী হলো গরিব লোকজন। এর অসিলায়ও সমৃদ্ধিশালী সমাজ গড়ে উঠতে পারে। এমনিভাবে হাদিয়া দেওয়া ও গ্রহণ করা বৈধ ব্যাপার। তাই কোরবানির গোশতের হকদার আত্মীয়স্বজনের মাঝে গোশতের আদান-প্রদানে ফিরে আসতে পারে পরস্করের সৌহার্দ্য সম্ক্রীতি। মুসলিম সমাজের জন্য কোরবানিও গুনাহ্ মওকুফ এবং আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের বিরাট সুযোগ।

কেননা কোরবানির মাধ্যমে আমরা শত্রুতা, ক্রোধ, বিদ্বেষ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতার মতো পশুত্বকে দমন করে মানুষের সুকুমারবৃত্তিগুলোকে জাগিয়ে তুলতে পারলেই আমাদের কোরবানি সার্থক হবে।

কোরবানির মাংস নিজের জন্য ফ্রিজিং না করে যথাসম্ভব খুঁজে খুঁজে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, গরিব-দুখীদের মাঝে যত বেশি পরিমাণে বিলিয়ে দেওয়া যায়, ততই কোরবানির উদ্দেশ্য পরিপালিত হয়।

আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজে এমন আত্মীয়ও আছে যারা নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কোরবানি দিতে পারেন না। তাদের খুঁজে বের করে প্রতি সম্মান অক্ষুণ্ন রেখে কোরবানির মাংস পৌঁছানো যারা কোরবানি দিতে সক্ষম হয়েছেন তাদের অবশ্য কর্তব্য হওয়া উচিত। এর মাধ্যমে আমরা মুসলমান হিসেবে মানবসৃষ্টির মহিমার ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে পারি।

আত্মার পশুকে করো কোরবান : কোরবানির মূল মাহাত্ম্য আত্মার কলুষতাকে জবেহ বা কোরবান করা, নিজের আমিত্ববাদকে জবেহ করা, মনের সব অহঙ্কারকে জবেহ করার মাধ্যমে প্রতীকী হিসেবে পশু কোরবানি করা হোক।

এই কোরবান হতে হবে মহান প্রতিপালকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ, গভীর ভালোবাসা ও ঈমানসহকারে আদায় করা- মহান প্রতিপালকের নামে বান্দার পক্ষ থেকে উৎসর্গকৃত।

দুঃখজনক সত্যিটি হলো- আমরা দেখতে পাই কোরবানির নামে- আর্থিক প্রদর্শনীর মহড়া চলে এ সময়ে। কে কত বড় গরু কিনল, কার গরুর দাম কত বেশি এ যেন প্রচার-প্রপাগান্ডার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোরবানির গরু, গরুর সঙ্গে সেলফি, গরু জবাইয়ের দৃশ্য, মাংস বণ্টনের দৃশ্য ফেসবুকে ছবি বা ভিডিওতে প্রচার করার ফলে কোরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যবহূত হচ্ছে।

দেশীয় পদ্ধতিতে কোরবানির গরু মোটাতাজাকরণে আগ্রহ বাড়ছে : এটি একটি আশাবাদের খবর। অন্যান্য বছর ট্যাবলেট খাইয়ে, ইনজেকশন পুশ করে যারা গবাদিপশু কোরবানির বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মোটাতাজা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই এবার দেশীয় পদ্ধতিতে গবাদিপশু মোটাতাজা করেছেন কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য।

কৃষক, গৃহস্থ ও খামারিরা কাঁচা ঘাস, ধানের খড়ের পাশাপাশি গরুকে খৈল, কুঁড়া, ভুষি খাওয়াচ্ছেন। বিভিন্ন খবর বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সরকারের প্রাণিসম্কদ মন্ত্রণালয়ের প্রচারণা, নির্দেশনা ও তদারকির ফলে খামারিদের মধ্যে এমন সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে দেখা গেছে, গত বছর যারা মোটাতাজাকরণের ট্যাবলেট খাইয়ে গরু নাদুসনুদুস করে হাটে তুলেও দাম পায়নি, তারাই এবার দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করেছেন।

খবরে প্রকাশ, কিছু খামারি অধিক লাভের লোভে কোরবানির ঈদের আগে গরুকে ইনজেকশন দিতেন অথবা বড়ি খাওয়াতেন। এবার কৃষক, গৃহস্থ’ ও খামারিরা ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ছেড়ে দেশি পদ্ধতিতে খৈল, কুঁড়া, ভুষি খাইয়ে গরু মোটাতাজা করছেন।

খামারমুখী সচেতন ক্রেতারা : নিরাপদ পশুর জন্য বিশেষত ঢাকার ক্রেতারা পশু কিনতে খামারমুখী হচ্ছেন। হাটে মানুষের ভিড়ে পশু ঠিকমতো দেখা যায় না। দেখে-বুঝে কোরবানির পশু পছন্দ করার জন্যই আগ্রহীরা খামারের পরিবেশকে অনেক ভালো মনে করছেন। খামারে যখন-তখন পশু কেনা যায়।

জেনে, শুনে, বুঝে নিরাপদ পশু কেনার জন্য অনেকে সরাসরি খামারে ছুটছেন। আশার খবর হচ্ছে— ভারতীয় গরু আমদানিতে সীমান্তবর্তী রাজশাহী, যশোর, খুলনা, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩১টি করিডোরের ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ২৮ লাখ পরিবার সরাসরি গবাদিপশু পালনের সঙ্গে জড়িত। দেশে ৬০ শতাংশ গরু পালন করা হয় কুষ্টিয়া, যশোর, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলায়। সাদা ধবল গরু আর ভুটানের বুট্টি গরুর জন্য খ্যাত মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিমের ধবল গরু বানাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়।

ভারত ও ভুটানের আবাল-পশ্চিমা সাদা ষাঁড় ও সাদা গাভির বাচ্চা কিনে আনেন মীরকাদিমের খামারিরা। প্রতিটি গরু বড় করতে ও কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য উপযোগী করে তুলতে ৪-৬ মাস সময় লাগে।

ধান-চাল আর তেলের কারখানা থাকার কারণে মীরকাদিমের গরুকে মিনিকেট চালের খুদ, এক নম্বর খৈল, ভাতের মাড়, সিদ্ধ ভাত, খেসারির ভুষি, গমের ভুষি, বুটের ভুষি খাওয়ানো হয়। এসব গরুর সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ গনি মিয়ার হাটে।

দেশীয় পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা : প্রাণিসম্কদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য দেশে ১ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬৩টি পশু প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬৩ এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭২ লাখ। সরকারি আটটি খামারে উট-দুম্বাসহ কোরবানির প্রাণী আছে আরো সাত হাজার।

জানা গেছে, গত বছর কোরবানিতে জবাই হয়েছিল ১ কোটি ১৫ লাখ পশু। এর মধ্যে ছাগল-ভেড়া ছিল ৭১ লাখ। গরু ৪৪ লাখ। সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্কূর্ণতা অর্জন করেছে গরু ও ছাগল উৎপাদনে। গত এক বছরে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় তিন লাখ। প্রতিবছরই ভারত থেকে গরু আমদানি কমছে।

প্রাণিসম্কদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে এবারের ঈদে কোরবানির পশুর কোনো ঘাটতি হবে না। দেশীয় পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা। প্রাণিসম্কদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হিরেশ রঞ্জন ভৌমিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে গরুর রপ্তানির বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করাতে সুফল পাচ্ছেন দেশের ক্ষুদ্র খামারিরা। এর ফলে পশু পালনে বাংলাদেশে সফলতা এসেছে।

গবাদিপশু উৎপাদনে বিশ্বে ১২তম অবস্থানে বাংলাদেশ : ধারাবাহিকভাবে দেশে গরু-ছাগলের উৎপাদন বাড়ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৪ সালে ভারত সরকার এ দেশে গরু আসা বন্ধ করে দেয়। এরপর গরু মোটাতাজাকরণে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল থেকে আড়াই শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হয় খামারিদের। ওই সুবিধা পেয়ে সারা দেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার তরুণ গরুর খামার গড়ে তোলেন।

জানা গেছে, প্রাণিসম্কদ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত খামারির সংখ্যা হচ্ছে ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৪১৬ জন। সারা দেশে গরু-ছাগলের খামার গড়ে উঠেছে প্রায় দেড় লাখ। ফলে গরু-ছাগলের উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৮ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্কদ মন্ত্রণালয় মাংস উৎপাদনে বাংলাদেশের স্বয়ংসম্কূর্ণতা ঘোষণা দেয়।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, গবাদিপশু উৎপাদনে বিশ্বে দ্বাদশ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এককভাবে ছাগল উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ। ছাগলের দুধ উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয়। দেশে গত বছরের চেয়ে গরুর উৎপাদন বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার, আর ছাগল-ভেড়ার উৎপাদন বেড়েছে ১ লাখ। এর আগে ২০১৭ সালে কোরবানিতে জবাই হয়েছিল ১ কোটি ৪ লাখ ২২ হাজার পশু।

চামড়া রপ্তানির সম্ভাবনা : কোরবানির ওপর ভর করেই সম্ক্রসারিত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। মোট চামড়ার ৬০ থেকে ৭০ ভাগই সংগৃহীত হয় কোরবানি ঈদে। কোরবানির সময় চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা জড়িত। লবণ হলো চামড়া সংরক্ষণের অন্যতম উপাদান।

কোরবানি উপলক্ষে লবণের ব্যবসাও চাঙ্গা হয়। চামড়া সংরক্ষণে প্রয়োজন হয় বিপুল জনবলের। তখন শ্রমিকরা পান তাদের শ্রমের চড়ামূল্য। দেশের বিভিন্ন স্থানে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হয়।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, বাংলাদেশে রফতানি খাতে চামড়ার অবস্থান তৃতীয়। জনা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ইতালি, নিউজিল্যান্ড, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর চামড়াজাত পণ্য রফতানি করা হয়।

লেখক : অর্থনীতি বিশ্লেষক ও উন্নয়ন গবেষক
[email protected]

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!