• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইতিহাসের ভয়াবহ যত ভূমিকম্প


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৩, ২০১৬, ০৯:৩৯ পিএম
ইতিহাসের ভয়াবহ যত ভূমিকম্প

সোনালীনিউজ ডেস্ক

ভূমিকম্প একটি বিভীষিকার নাম। এটিই সম্ভবত একমাত্র প্রাকৃতিক দূর্যোগ, যার কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। মাটির নিচের টেক্টোনিক প্লেটগুলো নড়াচড়া করতে করতে যখন একটি আরেকটির সাথে ধাক্কা খায় তখনই ঘটে ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রার ওপর নির্ভর করে সেটির ভয়াবহতা। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প ছয় মাত্রায় গেলে তা ভয়াবহ এবং সাত বা আট মাত্রায় পৌঁছালে তা মারাত্মক ভয়াবহ ভূমিকম্পে রূপ নেয়। এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের সর্বোচ্চ মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫, যা ১৯৬০ সালে হয়েছিল চিলিতে।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীতে ঘটেছে অনেক ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা। এর মধ্য থেকেই কয়েকটি তুলে ধরা হলো এখানে:

ভালদিভিয়া, চিলি: ১৯৬০ সালে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে কেঁপেছিল চিলি। এ পর্যন্ত পৃথিবীতে সংঘটিত ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে রিখটার স্কেলে সবচেয়ে বেশি মাত্রা ছিল চিলির ভালদিভিয়া অঞ্চলের ওই ভূমিকম্পটির। প্রায় ৯ দশমিক ৫ মাত্রার প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল চিলিতে। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় এক হাজার পারমাণবিক বোমার সমান ভয়াবহ ছিল ভূমিকম্পটি। ভালদিভিয়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী হাওয়াই দ্বীপেও আঘাত হেনেছিল সেটি। প্রাথমিক ধাক্কাতেই প্রায় ছয় হাজার মানুষ মারা যায় ওই ভূমিকম্পে এবং এক বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়। তবে ভূমিকম্প পরবর্তীকালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আরো অনেক মানুষ মারা যায়।

প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ড, আলাস্কা: ১৯৬৪ সালের ২৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা রাজ্যের প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ডে ৯ দশমিক ২ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে নিহত হন ১২৮ জন। এ ভূমিকম্পে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়া: ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব আফ্রিকার ১৪টি দেশে ১৭ লাখ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৯ দশমিক ১ মাত্রার এ ভয়াবহ ভূমিকম্পে দুই লাখ ২৭ হাজার ৯০০ জন নিহত হন। অনেক মৃতদেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মৃতের সংখ্যা নিরূপণ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ইন্দোনেশিয়ার মৎস্য শিল্প ও কারখানার প্রায় ৬০ শতাংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় এই সুনামিতে। প্রাণহানির দিক থেকে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে অভিশপ্ত ভূমিকম্প ছিল।

সেন্দাই, জাপান: ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানে আঘাত হানে ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প। মাত্র কয়েক বছর আগে সংগঠিত এই ভূমিকম্পের কথা আমাদের অনেকেরই হয়তো মনে আছে কারণ এই ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামির ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল জাপানের একটি পারমাণবিক চুল্লী ও সমুদ্র উপকূলীয় একটি শহর ভেসে যায়।  চুল্লীটি থেকে ছড়িয়ে পড়েছিল ইউরেনিয়াম এবং থোরিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা। জাপানে ঘনঘন ভূমিকম্প হয় বলে তারা তাদের স্থাপনাগুলো ভূমিকম্প সহনশীল করেই তৈরি করে। কিন্তু এই দুর্ঘটনা জাপানের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল এবং ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প এটি।

কামচাটকা, রাশিয়া: ১৯৫২ সালের ৪ নভেম্বর সৃষ্টি হয় এই ৯ মাত্রার ভূমিকম্প। এর ফলে সৃষ্টি হয় আট মিটার উঁচু জলোচ্ছাস বা সুনামি। তবে সৌভাগ্যবশত এ ভূমিকম্পেও হতাহতের তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি যদিও আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল ব্যাপক। কামচাটকা উপদ্বীপ ছিল এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। তিন হাজার মাইলজুড়ে অনুভূত হয়েছিল এই ভূকম্পন, যা রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অনুভূত হয়েছিল।

আরিকা, পেরু: প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট এই ভূকম্পন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত অনুভূত হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার আরেকুইপা শহর। সেখানে মারা যায় ২৫ হাজার মানুষ। বলিভিয়ার লা-পাজ শহরেও অনুভূত হয়েছিল ভূকম্পনটি। প্রথম আঘাত হানার চার ঘণ্টা পর ভূমিকম্পটির আফটার শক আঘাত হানে সমুদ্রে। এতে ১৬ মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছিল সৈকতে। সূত্র: বাংলামেইল।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!