• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এগিয়ে আসছে ঈদ, দরজি পাড়ায় ‘মন্দা’


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১১, ২০১৯, ০৯:২৮ পিএম
এগিয়ে আসছে ঈদ, দরজি পাড়ায় ‘মন্দা’

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: দেখতে দেখতে চলে গেল পাঁচটি রোজা। এগিয়ে আসছে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের উৎসব ঈদুল ফিতর। এই উৎব ঘিরে নানা কেনা-কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। সেই সঙ্গে ব্যস্ততা বাড়ে দরজির পাড়ায়। কিন্তু এবার দরজির পাড়ায় তেমন ভির লক্ষ্য করা যাচ্ছে না এখনও পর্যন্ত।  

রাজধানীর দরজি সংশ্লিষ্টদের দাবি, রোজার আগে তাদের কাছে যত কাজের অর্ডার আসত, রোজা শুরুর পর তা কমে গেছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, রোজা শুরুর পর থেকে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এ গরমে রোজা রেখে মানুষ পোশাক বানাতে আসছেন না। তবে গরম কমলে মানুষ টেইলার্সমুখো হবেন বলে আশা করছেন তারা।

আবার কেউ কেউ বলছেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে মানুষের অর্থ সঙ্কটও রয়েছে। ফলে এ বছর পোশাক তৈরির প্রতি মানুষের ঝোঁক তুলনামূলক কম।

শনিবার (১১ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার টেইলার্স মালিক, কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

টেলাইলার্সের কেউ কেউ বলছেন, বর্তমানে কাজের যে অবস্থা, এটা অব্যাহত থাকলে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অর্ডার নেয়া যাবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, ১৫-২০ রোজা পর্যন্ত কাজের অর্ডার নেয়া সম্ভব।

নিউমার্কেট এলাকার গাউছিয়া মার্কেটের সাথী লেডিস টেইলার্স অ্যান্ড বোরকা হাউজের মালিক মো. মনির হোসেন বলেন, ‘ঈদের ব্যস্ততা এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। তুলনা করলে গত বছরের চেয়ে ব্যস্ততা এবার কম। প্রচণ্ড গরম চলছে। সেজন্য কাস্টমার হয়তো কম আসছে।’

তিনি আরও জানান, রোজা শুরুর পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ সেট কাজ আসছে। তবে রোজার আগে এর চেয়ে বেশি অর্ডার আসত। এভাবে চলতে থাকলে ১৫-২০ রোজা পর্যন্ত হয়তো আমরা অর্ডার নিতে পারব।

‘পাকিস্তানি লোন কাপড়ের কাজ এ বছর বেশি আসছে। এছাড়া গাউন আর জিপশির কাজও তুলনামূলক বেশি’ - বলেন মনির হোসেন।

নিউমার্কেট এলাকার প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের মাঈশা লেডিস টেইলার্সে মোট চারজন কারিগর রয়েছেন। তারা দিনে গড়ে ১০ সেট পোশাক তৈরি করেন বলে জানান এর কর্ণধার মো. সুমন। তিনি বলেন, ‘রোজা শুরুর পর থেকে গড়ে ৭-৮ সেট কাজের অর্ডার আসছে। অথচ রোজার আগে এর চেয়ে বেশি আসত। আগে ১০-১৫ রোজার মধ্যেই কাজের অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিতাম। এ বছর যেভাবে চলছে, এভাবে চলতে থাকলে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অর্ডার নিতে পারব।’

কাস্টমার কমের জন্য তিনিও গরমকে দায়ী করেন। বলেন, যদি বৃষ্টি বা ঠাণ্ডা পড়ে, তাহলে কাস্টমার বের হবে। তখন বেশি অর্ডার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কলাবাগানের লেক ভিউ সুপার মার্কেটের মুক্তা লেডিস টেইলার্সের মাস্টার মো. খোকন বলেন, ‘ঈদের সময় যে পরিমাণ অর্ডার আসার কথা, তা আসছে না। যানজট আর গরমের কারণে অর্ডার কম। এভাবে আসতে থাকলে ২৫-২৬ রোজা পর্যন্ত অর্ডার নিতে পারব।’

তবে ভিন্ন কথা বলেন বাংলামোটরের আখি টেইলার্সের মাস্টার মো. বাসার। তিনি বলেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছু দাম বেশি। বাজার প্রেক্ষাপটে মধ্যবিত্তদের আয় অতটা নয়। স্বচ্ছলতা না থাকার কারণেই মানুষ এবার কম পোশাক বানাচ্ছে।

বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ বাইরে থেকে কাপড় কিনে আমাদের বানাতে দেয়। আমরা বড়দের কাপড় বানাই। মজুরি প্রতি সেটের জন্য নেই ৪০০ টাকা। এখন এক সেট কাপড় বানাতে গেলে দেড় হাজার টাকার নিচে সাধারণত হয় না।’

‘এটা (পোশাক) নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নয়, এখন এটা শৌখিনতা’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি জানান, রোজা শুরুর পর ১০-১৫ সেট কাপড়ের অর্ডার আসছে। রোজার আগে অর্ডার ছিল ২০-৩০ সেট। তার মতে, ‘প্রথম থেকে কাজের অর্ডার না থাকলে ২০ রোজার পরে কাজের এনার্জি থাকে না।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!