• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
না.গঞ্জে শিক্ষক লাঞ্ছনা

এবারও কি ব্যর্থ হবে গণমানুষ?


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৯, ২০১৬, ০৫:২৮ পিএম
এবারও কি ব্যর্থ হবে গণমানুষ?

নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হবার পরও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য (এমপি) সেলিম ওসমান অনুতপ্ত নন। নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনদের সাথে মতবিনিময়ের নামে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, একজন হিন্দুকে নয়, একজন নাস্তিককে সাজা দেয়া হয়েছে।
ওই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহম্মদ নাসিমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার কাছে মাফ চাইতে পারি, কিন্তু তার (প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ) কাছে নয়। এমপি সেলিম স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তাদের পৈত্রিক বাসভবন বায়তুল আমানে এসে প্রশ্ন করলে সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন বলেও অভিমত জানান।
এদিকে সাংবাদিকরা তাকে কিছু প্রশ্ন করলে এমপি সাহেব তার উত্তর দেননি, বরঞ্চ এমপির সাঙ্গ-সাথীরা ক্ষেপে ওঠেন। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনকে তা এখনো পালন করেনি তারা। তবে মনে হলো সেলিমের লম্ফজম্ফ কিছুটা কমেছে।

পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের নির্দেশে সংবাদ সম্মেলন করেও কোনো বক্তব্য রাখেননি সেলিম। মরহুম নাসিম ওসমান ত্বকী হত্যায় জড়িত ছিলেন বলে অনেকেরই অভিমত, সাত খুন মামলায় তারই ভাই শামীম ওসমান এবং প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছনার ঘটনায় সেলিম ওসমান দায়ী এ কথা পত্রপত্রিকায়ও এসেছে। ওসমান পরিবারের দৌরৈাত্মে নারায়ণগঞ্জবাসী সবসময় শঙ্কিত, এটা বললে মিথ্যা বলা হবে না। এই পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবসী। ক্ষমতার দাপটে তারা দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানাতে পারে। বলা যায়, নারায়ণগঞ্জবাসী ওই পরিবারের তালুবন্দি।

নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে কানধরে উঠবস করানোর ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তার একটি প্রতিবেদন এসেছে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ছাত্রের বক্তব্যের ভিত্তিতে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেই শিক্ষার্থীও একেক সময় একেক কথা বলেছে। যে প্রক্রিয়ায় শ্যামল কান্তিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল তা বিধি বহির্ভূত হওয়ায় তাকে ওই পদে বহাল রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যেহেতু অভিযোগকারী মো. রিফাত হাসানের স্কুল কমিটির সামনে উপস্থাপিত জবানবন্দি ও গণমাধ্যমে প্রদত্ত জবানবন্দি এবং রিফাতের মায়ের লিখিত অভিযোগ ও মৌখিক অভিযোগের মধ্যে গরমিল লক্ষ করা যায় (বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত) সেহেতু বিতর্কিত বিষয়টির সত্যতা গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিবেচিত হতে পারে।
অপর সুপারিশে বলা হয়, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগপত্র জোর করে আদায় ও সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি আইন সিদ্ধ হয়নি বিধায় তিনি স্বপদে বহাল আছেন বলে বিবেচিত হতে পারে। এই কমিটির তদন্তের ভিত্তিতেই শ্যামল কান্তিকে স্বপদে পুনর্বহালের পাশাপাশি ওই স্কুলের পরিচালন পর্ষদ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গত ১৯ মে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছিত করার আগে ধর্ম অবমাননার যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, প্রাথমিক তদন্তে তার সত্যতা মেলেনি। এদিকে , নানা সময় নানা ভাবে ওসমান পরিবারের কালো হাত ভেংগে দিতে চেয়েছে নারায়নগজ্ঞবাসী। বারবার ব্যর্থ হযেছে তারা, এবারও কি তারা ব্যর্থ হবে, ব্যর্থ হবে সারা দেশের মানুষের আন্দোলন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!