• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জুমার দিন দোয়া কবুল হয়


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৩০, ২০১৯, ০১:৫১ পিএম
জুমার দিন দোয়া কবুল হয়

ঢাকা : হাজারো প্রয়োজন আর চাহিদার তাগিদে মানুষ কত কিছুই না করে। বলা যায়, চাহিদা পূরণে কেউ সাধ্যের কমতি করে না। তবে ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশ্বাস করে, আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন ও চাহিদার কথা তুলে ধরলে আল্লাহ বান্দার প্রয়োজন পূরণ করেন। চাহিদায় ঘাটতি থাকলে তা দূর করে দেন। এ জন্য সবাই চায়, আল্লাহর কাছে তার কথা গৃহীত হোক। তার দোয়া কবুল হোক।

শুক্রবার বা জুমার দিন স্বাভাবিকভাবেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ দিন। আর এ দিনের কিছু সময় আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না বলে হাদিসে এসেছে। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন সময়ের কথা উল্লেখ হয়েছে। তবে জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময় কোনটি সে সম্পর্কে মতানৈক্য থাকলেও দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই। এ সময় সম্পর্কে ৪৩টি অভিমত পাওয়া যায়।

যার মধ্যে থেকে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—

> ইমাম যখন খুতবা দেন;

> জুমার নামাজে সুরা ফাতিহার পর ‌আমিন বলার সময়;

> আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে;

> মুয়াজ্জিনের আজানের সময়;

> সূর্য ঢলে পড়ার সময়;

> ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে ওঠার সময়;

> উভয় খুতবার মধ্যবর্তী বসার সময়;

> জুমার দিন ফজরের আজানের সময়;

> একেক জুমার একেক সময়;

> বছরের কোনো এক জুমার দিনে ওই মুহূর্তটি রয়েছে।

হাদিসে এসেছে—আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের সঙ্গে এক দিন শুক্রবারের ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘জুমার দিনে এমন এক সময় আছে, সেই সময়ে যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুল (সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি)

আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে বলেছেন, ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিই সেই বিশেষ মুহূর্ত। (মুসলিম, মিশকাত)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম মিম্বরে বসা থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত।’ (মুসলিম, বায়হাকি)

রাসুল (সা.) থেকে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, জুমার দিনে ১২ ঘণ্টা রয়েছে। তাতে এমন একটা সময় রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর ক‍াছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আসরের শেষ সময়ে তা তালাশ কর। (আবু দাউদ, নাসাঈ)

আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বর্ণনা করেন, শুক্রবারে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত সিরাতগ্রন্থ যাদুল মাআ’দ-এ বর্ণিত আছে, জুমার দিন আসরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। (২/৩৯৪)

ইমাম আহমদ (রহ.)-ও একই কথা বলেছেন। (তিরমিজির ২য় খণ্ডে কথাটি উল্লেখ আছে)

মোটকথা, জুমার দিনে বিশেষ একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে সময় আল্লাহতায়ালা বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। এ সময় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, দোয়া কবুলের সময়টি সারা দিনের ভেতর লুকিয়ে আছে। পুরোপুরি নির্ধারিত না করার উদ্দেশ্য হলো, বান্দা যেন জুমার দিন সর্বদা ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ায় মশগুল থাকে। হে দয়াময়, আমাদের নেক আমল করার তওফিক দান করুন।

লেখক : নিবন্ধকার

Wordbridge School
Link copied!