• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফ্লাইওভারের সুড়ঙ্গে বাস করত ওরা!


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৭, ২০২০, ০৫:০৯ পিএম
ফ্লাইওভারের সুড়ঙ্গে বাস করত ওরা!

ঢাকা : চারতলার মতো উঁচু।  কোনো সিঁড়ি নেই।  দৃশ্যমান পথ নেই ওঠার।  দূর থেকে চোখে পড়ে না কারো।  অত উপরে সহসা কি দৃষ্টি যায়? আচমকা কে একজন উপরে খেয়াল করতেই দেখতে পায় ফ্লাইওভারের পথ আর স্তম্ভের মাঝামাঝি জায়গাটায় একটা দড়িতে ঝুলছে লুঙ্গি, শার্ট আর ওড়না।  তাহলে অত উপরে কী করে উঠল এগুলো?
ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করতেই মুহূর্তে ছড়িয়ে যায়।  একে একে অনেকেই ছবিটি দিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন। ছবি দেখে অনেকের ধারণা ছিল কেউ হয়তো বসত গড়েছে সেখানে। এনিয়ে মানবিক মন্তব্যও করেন ফেসবুকে সরব ব্যক্তিরা।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম মোশতাক আহমেদ ছবিটি দিয়ে জানতে চান স্থানটি কেউ চেনেন কিনা? নিরাপত্তার কারণে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ওইদিন সন্ধ্যায় জায়গাটির সন্ধান মেলে। মগবাজার রেলক্রসিং থেকে হাতিরঝিল মোড়ে যেতে উড়ালসেতুর সুড়ঙ্গ। খবর পেয়েই অভিযান নামে পুলিশ ও দমকলবাহিনীর সদস্যরা। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পুরো সুড়ঙ্গের এমাথা-ওমাথা করে পুলিশ ও দমকলের কর্মীরা।

তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাঁশের মই বেয়ে নেমে যায় উপরে থাকা ভবঘুরেরা। পুলিশ জানায়, তারা মাদকসেবী। দলবদ্ধ হয়ে মাদক নেওয়ার নিরাপদ আখড়া হিসেবে জায়গাটিকে বেছে নিয়েছিল তারা। অন্ধকারে লোকের চোখ ফাঁকি দিয়ে উপরে উঠে যেত। মাদক নেওয়ার পর ওখানেই ঘুমিয়ে থাকতো ওরা। সেই অর্থে ওখানেই ছিল ভবঘুরে মাদকসেবীদের বসত।

ঢাকা মহানগর পুলিশের হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন, পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম আজম, নয়াটোলা ফাঁড়ির আইসি পিষূস অভিযানে ছিলেন। সঙ্গে ছিল আরও মোবাইল টিম ছিল। এছাড়া তেজগাঁও থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এতে অংশ নেন।

সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে এই মং উদ্ধার 

এবিষয়ে হাতিরঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রশিদ বলেন, ‘স্যারের (সিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার মোশতাক আহমেদ) কাছ থেকে আমরা তথ্য পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে উপরে অভিযান চালাই। ফ্লাইওভারের পিলার আর রোডের মাঝে ওখানে একটা ট্যানেল আছে। এই ট্যানেল ধরে অনেক দূর যাওয়া যায়।  তারা মই দিয়ে সেখানে ঢুকতো।  আবার উপর থেকে ঢোকার ব্যবস্থা আছে। ভবঘুরে মানুষগুলো ওখানে থাকত।  বিশেষ করে মাদকসেবীরা, যারা পথে পড়ে থাকে, এই ধরনের লোকজন ওখানে থাকত।’

ওসি বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তাদের কাউকে ধরতে পারিনি।  পুলিশকে দেখে তারা মই বেয়ে আগেই নেমে যায়।  মইটা তারা লুকিয়ে রাখত।’  ওখানে যেন আর কেউ উঠতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জায়গাটা বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!