• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমালোচকদের এক হাত নিলেন আফ্রিদি


ক্রীড়া ডেস্ক মে ১৫, ২০১৯, ০৫:২৪ পিএম
সমালোচকদের এক হাত নিলেন আফ্রিদি

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: নিজের আত্মজীবনমূলক গ্রন্থ ‘গেম চেঞ্জার’ প্রকাশ হতেই বিতর্কে জড়িয়ে গেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তী ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। বইয়ে গৌতম গম্ভীর, জাভেদ মিঁয়াদাদ, ওয়াকার ইউনিসকে নিয়ে কটুক্তি করা এবং ঘরের বাইরে গিয়ে নিজের মেয়েরা কোনো খেলা খেলুক আমি তা চাই না। এ লেখা প্রকাশের পর সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছেন আফ্রিদি। তবে সমালোচকদেরও ছাড় দেয়ার লোক নন আফ্রিদি। তাদের এক হাত নিয়েছেন পাক অলরাউন্ডার।

বিতর্কের শুরুটা হয়েছিল আফ্রিদির বয়স লুকোচুরি নিয়ে। পরে গৌতম গম্ভীর, জাভেদ মিঁয়াদাদ, ওয়াকার ইউনিসকে নিয়ে কটুক্তি করায় বিতর্কের জন্ম দেন আফ্রিদি। তবে সব ছাপিয়ে গেছে নিজের মেয়েদের আউটডোর গেমসে অংশ না দেয়ার বিষয়ে বুমবুমের কড়া অবস্থান।

আফ্রিদির ৪ মেয়ে। আত্মজীবনী ‘গেম চেঞ্জারে’ তাদের নিয়ে আফ্রিদির ভাষ্য, প্রতিটি মেয়ে জন্মের পর আমার ভাগ্যের চাকা দ্রুতগতিতে ঘুরেছে। তারাই আমার জীবনের আশির্বাদ। ওরা আউটডোর কোনো খেলা খেলুক আমি তা চাই না।

তিনি আরও লিখেন, আমি চাই না মেয়েরা আমার মতো ক্রিকেট খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিক। শুধু ক্রিকেট নয়, আউটডোর কোনো খেলা তারা খেলুক চাই না। তবে তারা ইনডোর যেকোনো খেলায় ক্যারিয়ার গড়তে পারে। তাদের মাও আমার সঙ্গে একমত। সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের কথা মাথার রেখেই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নারীবাদীরা আমাকে যা খুশি বলতে পারে। তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।

এ লেখা প্রকাশের পর সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছেন আফ্রিদি। এমন মনোভাব পোষণের কারণে তাকে নারীবিদ্বেষী বলছেন অনেকে। গেল সপ্তাহেই পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ককে ব্যাঙ্গ করেছেন বিখ্যাত ক্রীড়া লেখক জ্যারড কিম্বার।

এ নিয়ে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানি লেখিকা বিনা শাহও। বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি মন্তব্য করেছেন, আফ্রিদির এমন সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের সমাজেরই উদাহরণ।

তার ভাষ্য, এ দিয়ে প্রমাণ হয়, পাকিস্তানের সংস্কৃতি পুরুষতান্ত্রিক। আমি বাবা, আমি যা বলব মেয়েরা সেটাই করবে; যেটা মানা করব, বিরত থাকবে। তুমি কোনো কিছু করেই আমাকে আটকাতে পারবে না।

এখানেই শেষ নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় আফ্রিদিকে রীতিমতো ধুয়ে দিচ্ছেন নিন্দুকেরা। সালমান সিদ্দিক টুইটবার্তায় লিখেছেন, আফ্রিদি ও একজন মধ্যবয়সী পাকিস্তানি লোকের মধ্যে কোনো ফারাক নেই। তারা হরহামেশা অন্যের মেয়ের সঙ্গে আড্ডা দেবে। কিন্তু নিজের মেয়ে তেমন কিছু একটা করলেই খেপে যাবে।

আফ্রিদির ঠিক বিপরীত মত ফুটবল বিশ্বের মহাতারকা মোহামেদ সালাহর। নারী-পুরুষকে সমদৃষ্টিতে দেখতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নিজেও সেই পথে হাঁটছেন। চার বছরের মেয়েকে ফুটবল খেলার অনুমতি দিয়েছেন।

সদ্য সেই মেয়েটির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তাকে গোল উদযাপন করতে দেখা গেছে।

এরপর আফ্রিদ্রিকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় আরো প্রবল হয়েছে। তবু নিজের জায়গায় অনড় তিনি। উল্টো সমালোচকদেরই ধুয়ে দিয়েছেন সাবেক অলরাউন্ডার।

এক টুইটবার্তায় আফ্রিদি বলেন, আমি কারো ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করি না। কারো ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করি না।

তিনি বলেন, আমি অন্যের কাছ থেকেও সেই আশা করি। আল্লাহ আমার মেয়েদের এবং গোটা বিশ্বের নারীদের সহায় হোন। মানুষজনকে এটা বুঝতে হবে। আমার কাছে আমার মেয়েদের গুরুত্ব অনেক। তাদের ঘিরেই আমার জীবন আবর্তিত হয়।

আফ্রিদি পেশাদার ক্রিকেট থেকে ২০১৬ সালে অবসর নেন। তবে বিশ্বব্যাপী ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগে খেলে যাচ্ছেন তিনি। জগতজোড়া সুখ্যাতির কারণে নানা ইস্যুতে সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!