• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সম্রাট-পাপিয়া এবং দেশবাসী


আবু জাফর সিদ্দিকী মার্চ ৪, ২০২০, ০৪:১৮ পিএম
সম্রাট-পাপিয়া এবং দেশবাসী

ঢাকা : আর কত সম্রাট-পাপিয়া দেখতে হবে? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের মানুষের মধ্যে। যুবলীগ নেতা সম্রাট, মহিলা যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া— অভ্যন্তরে আর কত আছে? যুবলীগের জি কে শামীম, এনু-রুপমের মতো শত শত নেতা আছে এ তল্লাটে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সারা দেশে চলার কথা থাকলেও তা শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

সরকারের উচিত সারা দেশে একযোগে এ অভিযান পরিচালনা করা। তাহলে জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেত। সারা দেশে যেমন চলছে মাদকের অভিযান, তেমনই অভিযান হওয়া উচিত ক্যাসিনো ও জুয়ার ওপর। রাজধানীর কয়েকটি ক্যাসিনোতে অভিযান হয়েই দীর্ঘ বিরতি জনমতে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
দেশবাসী আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল, তবে অভিযান বিরতিতে তা আবার অন্ধকারে রূপ নেয়। সরকারের উচিত সম্রাট আর পাপিয়াদের মতো আরো যারা আছে তাদেরও সামনে আনা। অর্থাৎ এ অভিযান অব্যাহত রাখা। দেশের মানুষের আশাকে জাগ্রত রাখা। ক্যাসিনো, জুয়া আর মাদক এগুলো সব ধরনের অপরাধের মূল উৎস।

মাদক নেশা, মাদক অপরাধ। বর্তমান সমাজে মাদকের জন্য সব ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। মাদকদ্রব্য বলতে বোঝানো হয় এমন দ্রব্যকে, যা খেলে নেশা হয়। এগুলো হলো গাঁজা, ফেন্সিডিল, চরস, ভাং, গুল, জর্দা, হেরোইন, মদ, ইয়াবা ইত্যাদি। যখন কেউ এসব দ্রব্যের ওপর নেশাগ্রস্ত হয়, তখনই তাকে মাদকাসক্ত বলা হয়। মাদকদ্রব্য শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি বয়ে আনে।

মাদকের জন্য মা-বাবাকে খুন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সবকিছুই হচ্ছে এ ভদ্রোচিত মুখোশ আঁটা সমাজে। দেশে প্রতিদিন গ্রেপ্তার, জেল-জরিমানা, ক্রসফায়ার হচ্ছে তবুও কমছে না মাদকের আগ্রাসন। দেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন ঢুকছে এ নেশাজাতীয় দ্রব্য।

কিন্তু সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে এর দৌরাত্ম্য কমে এলেও পুরোপুরি নির্মূল করা এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এত কিছুর পরও যেন কমতি নেই মাদকের। দেশের যে কোনো প্রান্তে হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য।

খুব সহজেই যুবসমাজের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে মাদকদ্রব্য, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দেশের সব শ্রেণির নাগরিকের উচিত যার যার অবস্থান থেকে এটা প্রতিহত করা। তা না হলে একসময় এ দেশ মাদকের রাজ্য হয়ে যাবে।

অপরদিকে জুয়ায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে যুবসমাজ, ব্যবসায়ী মহল, এমনকি সমাজের উচ্চবিত্তরাও অর্থাৎ তাদের উত্তর প্রজন্ম।

এটাকে এখনই দমন করা না গেলে একসময় আর সম্ভব হবে না। রাজধানীসহ সারা দেশে ক্যাসিনো আগ্রাসন দমনে অভিযান পরিচালিত হওয়া উচিত। কেননা এসব জায়গাতেই মাদকসহ নান ধরনের দুর্নীতি-অপকর্ম সংঘটিত হয়ে থাকে। ধ্বংস করে দেওয়া হোক সম্রাট-পাপিয়াদের কালো হস্ত। দেশের কোথাও যেন আর কোনো সম্রাটের জন্ম না হয়, না হয় পাপিয়ার জন্ম। এরা এ সমাজের আবর্জনা। এ সমাজ এদের চায় না।

এদেরকে আইনের মাধ্যমে দমন করে কালো অধ্যায়ের অবসান করা উচিত। সম্রাট-পাপিয়া আর কাউকে যেন ক্যাসিনো কিংবা মাদকের নেশা ধরাতে না পারে। সরকারের উচিত আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে এদের শাস্তি নিশ্চিত করা। নতুন এক ইতিহাসের জন্ম দেওয়া। দেশের মানুষ যা দেখে শিক্ষা নেবে।

সবুজ-শ্যামলে ভরা একটা মাতৃভূমি দেখতে চায় আজকের দেশবাসী। যেখানে থাকবে না কোনো ক্যাসিনো-মাদক, থাকবে না সন্ত্রাস, থাকবে না অপরাজনীতি। থাকবে শুধু সোনার বাংলায় সোনার মানুষ।

লেখক : শিক্ষার্থী, সিংড়া জি এ সরকারি কলেজ, নাটোর

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!