• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের এক বছর পূর্তি

সেবার মান বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হোক


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৩, ২০১৬, ০৩:৩৬ পিএম
সেবার মান বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হোক

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু সমস্যায় জর্জরিত ঢাকার অবস্থা খুব একটা বদলায়নি। নির্বাচিত হওয়ার আগে দুই মেয়রই চিহ্নিত করেছিলেন অনেক সমস্যা, গত এক বছরে তারা বহু সভা-সেমিনারে অংশ নিয়ে দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতিও। সেসবের বেশির ভাগই এখনো অপূরণীয় রয়ে গেছে।

কাজ যে একেবারে করেননি, তা অবশ্য নয়। তবে প্রত্যাশার তুলনায় তা সামান্যই। এক বছরে উত্তরের মেয়র আনিসুল হক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেশকিছু কাজ করেছেন। এর মধ্যে ই-টেন্ডার ব্যবস্থা, সাতরাস্তা থেকে কারওয়ান বাজার লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত সড়ক দখলমুক্ত করা, বিলবোর্ড উচ্ছেদ, গাবতলী-আমিনবাজার, মোহাম্মদপুর, আবদুল্লাহপুরসহ রাজধানীর ১০টি স্থান অবৈধ পার্কিংমুক্ত রাখা এবং বিভিন্ন স্থানে বনায়নের উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনও বেশকিছু কাজ করেছেন। রাস্তা থেকে অবৈধ বিলবোর্ড সরিয়েছেন। ফুটপাত থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এলইডি (উজ্জ্বল আলোক বিচ্ছুরণকারী) বাতি লাগিয়ে কিছু সড়ক আলোকিতও করেছেন। নিঃসন্দেহে দুই মেয়রের উল্লিখিত উদ্যোগগুলো ইতিবাচক। তবে এতে আত্মতৃপ্তির কিছু নেই, বরং করার অনেক কিছুই এখনো বাকি। আমরা চাইব, ঢাকার দুই সিটির নাগরিকদের সার্বিক দুর্ভোগ লাঘবে মেয়রদ্বয় আরো উদ্যোগী হবেন।

আনিসুল হক নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে ঢাকার বাসিন্দাদের মশার উৎপাত থেকে মুক্তি দেবেন। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণ হয়নি। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। ময়লা দ্রুত সরানোর নানা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বটে, তবে সার্বিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। এছাড়া বেদখল পার্ক ও মাঠ উদ্ধার, তরুণদের জন্য আধুনিক স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া কেন্দ্র নির্মাণ, নগর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বল্প-নিম্ন আয় ও বস্তিবাসী নাগরিকদের জন্য সুলভে চিকিৎসা দেয়া, স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যের বাসস্থান নির্মাণ, ব্যাপক মাত্রায় কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরির কর্মসূচি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ছিল আনিসুল হকের। এখনো এসব উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি।

এদিকে নির্বাচনী ইশতেহারে সাঈদ খোকনের দেয়া অগ্রাধিকার ছিল যানজট নিরসন। এক বছরে পুরান ঢাকার যানজট তো কমেইনি, বরং বিভিন্ন এলাকায় আরো বেড়েছে। অঙ্গীকার হিসেবে নগরবাসীর প্রাত্যহিক জীবনের চলমান সমস্যা নিরসনে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কথাও বলেছিলেন তিনি। কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার সহজলভ্যতা, মশার উপদ্রব কমানো, জলাবদ্ধতা কমানো, বৈধ ও নতুন কাঁচাবাজার তৈরি, ম্যাটারনিটি সেন্টার নির্মাণ, লেক উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান, সুপেয় পানির নিশ্চয়তা ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বেশির ভাগই বাস্তবায়ন হয়নি।  প্রত্যাশা থাকবে, এসব বিষয় আমলে নিয়ে মেয়াদের বাকি সময়ে দুই মেয়রই প্রতিশ্রুত অঙ্গীকারগুলো পূরণ করে ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশনের সেবার মান বাড়িয়ে তুলবেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!