• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৮৩-তে কেরামতি দেখালেন কপিল দেব


ক্রীড়া প্রতিবেদক মে ১৫, ২০১৯, ০৭:৫৮ পিএম
৮৩-তে কেরামতি দেখালেন কপিল দেব

ফাইল ছবি

ঢাকা: ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসেই তিনি সেরাদের একজন। তার হাত ধরেই ভারত প্রথমবার বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ১৯৮৩ বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপ সন্নিকটে এলেই কপিল দেব ৮৩- এর স্মৃতি রোমন্থন করবেন, স্বাভাবিক। নিশ্চয় তার মনে পড়বে সেই ইনিংসটির কথা। যে ইনিংস তাঁকে দিয়েছে অমরত্ব। সেই বিশ্বকাপ যারা দেখেছেন তারা কখনই বোধহয় ভুলবেন না জিম্বাবুুয়ের বিরুদ্ধে কপিল দেবের অবিশ্বাস্য ১৭৫ রানের কথা।

টানব্রিজ ওয়েলসের মাঠে সেদিন আসলে কী ঘটেছিল? বিশ্বকাপে সেবারই অভিষেক হয় জিম্বাবুয়ের। তাই কপিল দেবের ভারতের কাছে পাত্তাই পাবে না নবাগত দলটি, এমনটাই ধারণা ছিল সর্বসাধারণের। কিন্তু গ্রুপ ‘বি’র প্রথম পর্বের ম্যাচে জিম্বাবুয়েনরা যা ঘটালেন তা অবিশ্বাস্য। আর ভারতের জন্য ছিল ভয়ঙ্কর লজ্জার চোখ রাঙানি।

স্কোরবোর্ডে ১৭ রান উঠতে না উঠতেই পাঁচ ব্যাটসম্যান ড্রেসিংরুমে! সেই ব্যাটসম্যানরা কারা শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে-সুনীল গাভাস্কার (০), কৃঞ্চমাচারি শ্রীকান্ত (০), মহিন্দর অমরনাথ (৫), সন্দ্বীপ পাতিল (১) এবং যশপাল শর্মা (৯)।

টপ অর্ডারের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান চলে গেলে একটা দলের আর কী থাকে! মূলত এখান থেকেই শুরু কপিলের সেই ঐতিহাসিক ইনিংসের। রজার বিনিকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে কপিল যোগ করলেন ৬০ রান। দলের স্কোর তখন ৭৭, কপিলকে একা রেখে ফিরে গেলেন বিনিও (২২)। ভারত অধিনায়ক আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেন যখন রবি শাস্ত্রি মাত্র ১ রান করে আউট হলেন।

ভারত ৭৮/৭! এই অবস্থায় লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আর কতদুরই বা যাওয়া সম্ভব। এদিন বোধহয় কপিলের গায়ে অসুরের শক্তি ভর করেছিল। গোটা ভারতবর্ষ হাল ছেড়ে দিলেও একজন দেননি। ৮ম উইকেটে মদন লালকে নিয়ে ¯্রােতের বিপরীতে লড়াই চালিয়ে কপিল তুললেন ৬২। ১৪০ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলেন মদন লালও (১৭)।

এরপর যা করার একাই করলেন কপিল। নিজে বেশি বেশি স্ট্রাইক নিয়ে ১৩৮ বলে খেললেন অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস। তখন বলের চেয়ে রান বেশি করা ছিল বিস্ময়ের!  দলের মহাবিপর্যয়েও মারদাঙ্গা ইনিংস খেলে গেলেন কপিল।

তার ইনিংসে ১৬টি বাউন্ডারী আর ছয়টি ছক্কা তো সে প্রমাণই দেয়। শেষের দিকে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন সৈয়দ কিরমানি (২৪*)। শেষমেষ ভারত নির্ধারিত ৬০ ওভারে স্কোরবোর্ডে তোলে ৮ উইকেটে ২৬৬ রান। এরমধ্যে কপিলের একারই ১৭৫!

জবাবে জিম্বাবুয়ে ৫৭ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তোলে ২৩৫ রান। যেখানে সর্বোচ্চ ৭৩ রান আসে কেভিন কুররানের ব্যাট থেকে। ব্যাটিংয়ে অমন ইনিংস খেলার পর বল হাতেও দারুণ সফল ছিলেন কপিল। ১১ ওভার বল করে ৩২ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। ৪২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল ছিলেন মদন লাল। আর ৪৫ রানে ২ উইকেট পান রজার বিনি।

সবকিছু ছাপিয়ে ম্যাচটি হয়ে যায় শুধুই কপিলময়। ফাইনালে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পর্যদস্ত করে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নিয়ে ভারতকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডার। সেই সময় ভারত উইন্ডিজকে হারাবে এটা কেউ কল্পনাতেও আনেননি। আসলে যা কেউ কল্পনা করেননি কপিলের ভারত তাই করে দেখিয়েছে।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!