ঢাকা : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের জন্য আগামী দেড় মাসের মধ্যে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে সমাবর্তনের পর নির্বাচেন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সেলিম ভূঁইয়া।
সোমবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবি মেনে নিয়ে ফলের জুস খাইয়ে তাদের অনশন ভাঙান ট্রেজারার।
এর আগে সোমবার বিকাল ৫ টায় প্রক্টর ড.নূর মোহাম্মদ অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে আসেন। এসময় তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের ট্রেজারের কার্যালয়ে নিয়ে যান।সেখানে আলোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিলে শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন ।
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ৭ দফার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ( জকসু) বিষয়ে বলা হয়েছে, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাসকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৪৫ কার্যদিবেসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের জন্য সুপারিশ প্রদান ও ‘জকসু’ গঠণতন্ত্র প্রণয়নে অনুরোধ করা হয়েছে।
কমিটি’র সুপারিশ অনুযায়ী ‘জকসু’ গঠণতন্ত্র প্রণয়ন করে বিশ্বেবিদ্যালয়ের আসন্ন প্রথম সমাবর্তন শেষে নির্বাচনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি রুটে বাসের সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। ছাত্রী হলের বিষয়ে বলা হয়েছে, নির্মাণ কাজের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। হলটি আগামী ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯ এর মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হবে। ক্যান্টিনের খাবারের মান ইতোমধ্যেই বৃদ্ধি করা হয়েছে, প্রয়োজনীয় সংষ্কার কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
এবিষয়ে অান্দোলনের সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম নয়ন বলেন, অামাদের দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস রিলিজ দিয়েছে, অামরা অনশন ভেঙেছি। অাগামীকাল অান্দোলনের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে অামরা অামাদের বক্তব্য জানাবো।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার পরে পরেই আমরা সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছি। ক্যান্টিন সংস্কার করে খাবারের মান বাড়িয়ে দাম কমিয়েছি, গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের যে দাবি সেদিকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এছাড়া নতুন ক্যাম্পাসের জমি অধিগ্রহণের জন্যও কাজ চলছে।”
উল্লেখ্য, ৭দফা দাবিতে রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অনশনে বসেন বিভিন্ন বিভাগের ১১ শিক্ষার্থী। এর অাগে ৭ দফা দাবিতে গত ১জুলাই উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর ৪ জুলাই উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা ।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, সাত দিনের মধ্যে ক্যান্টিনের খাবারের দাম কমানোর দাবি, এক মাসের মধ্যে বাসের ডাবল শিফট চালু, সাত দিনের মধ্যে জকসু আইনের খসড়া করে আগামি চার মাসের মধ্যে জকসু নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান, দুই মাসের মধ্যে ছাত্রী হল চালুর দাবি, শিক্ষক নিয়োগে কমপক্ষে ৭০% জবিয়ানদের অগ্রাধিকারের দাবি, গবেষণা ক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধি এবং নতুন ক্যাম্পাসের কাজ অতিদ্রুত শুরু করতে হবে।
সোনালীনউজ/এএস