• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইন বদলির সর্বশেষ যা জানা গেল


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১০, ২০২০, ১২:২৬ পিএম
প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইন বদলির সর্বশেষ যা জানা গেল

ঢাকা: কয়েকদিনের মধ্যেই অনলাইনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফলে শিক্ষকদের আর হয়রানি, অর্থ ব্যয় ও দালালদের কাছে যেতে হবে না। তদবির ছাড়াই ঘরে বসে আবেদন করে বদলি হতে পারবেন শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন শনিবার জানান, বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সফটওয়ার প্রেজেন্টেশন করা হয়েছে। নতুন বিষয়গুলো ইনপুট দেওয়া হলেই অক্টোবরে অনলাইন বদলি চালু করতে চাই।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবরের শুরু থেকে অনলাইনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি শুরু করার ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে যায়। তারপরও চলতি মাসেই সফটওয়ার ট্রায়াল শেষ করে বদলি কার্যক্রম শুরু করতে নতুন বিষয় ইনপুট দিতে কাজ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

অনলাইন এই বদলিতে প্রতিবন্ধী, গুরুতর অসুস্থ শিক্ষক ও বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বা বিধবা নারী শিক্ষকরা, স্বামী/স্ত্রী বা সন্তান দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রা শিক্ষকদের জন্য জন্য নতুন অপশন যুক্ত করার কাজ চলছে। সফটওয়্যারে নতুন এই বিষয়গুলো ইনপুট দেওয়া সম্পন্ন করার পর এ মাসেই বদলি কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে কোনও কারণে সফটওয়ার ট্রায়ালে যদি বেশি সময় লাগে সেক্ষেত্রে নভেম্বর থেকে পুরোপুরি চালু হবে।

এর গত ১২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন বিষয় ইনস্টল করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল হোসেন জানিয়েছিলেন, শিক্ষকরা যেন আর হয়রানির শিক্ষার না হন, দালালদের কাছে যেতে না হয়। ঘরে বসেই যেনও বদলির আবেদন করতে পারেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালক জানিয়েছিলেন, ‘আবেদন করার পর কোথাও আবেদন আটকে থাকবে না। কেউ আটকে রাখলে তাকে কৈফিয়ত দিতে হবে। হার্ড কপিতে দেরি করার যে সুযোগ ছিল অনলাইন আবেদনে তা থাকবে না।  ফলে শিক্ষকরা হয়রানির হাত থেকে বাঁচবে।

অনলাইনে বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব ও সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, আমরা এই উদ্যোগে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই বদলির জন্য শিক্ষকদের যেন দালালের কাছে যেতে না হয়। আগে শিক্ষকদের অর্থ ব্যয়, হয়রানি হতো।  অনলাইনে বদলিতে তেমনটি থাকবে না। তবে শিক্ষকরা যেন নতুন করে কোনও হয়রানির শিক্ষার না হন সে বিষয়ে প্রশাসন নজর দেবেন বলে আশা করছি। শিক্ষক বদলিতে বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অনেকের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠে। কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির বদলি নিশ্চিত হোক আমরা এটা চাই। সিস্টেমে যদি স্বচ্ছতা থাকে তাহলে সবার জন্যেই ভালো হবে।

২০২০ সাল থেকে অনলাইনে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করার জন্য এ বছর ফেব্রুয়ারিতে জরুরি বদলি ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু কম সময়ে অনলাইন বদলি শুরু করতে না পারায় গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে হার্ড কপির আবেদনে বদলি কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে তাও সম্ভব হয়নি। জরুরি বদলিও আটকে যায়।

উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদলি কার্যক্রম জানুয়ারিতে শুরু হয়ে চলে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিবছর এই বদলি নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বদলির সময় অধিদফতরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে দালালরা শিক্ষকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা।

এই অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আগে থেকেই অনলাইনে শিক্ষক বদলির উদ্যোগ নেয়। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন ওই সময় জানিয়েছিলেন, দুর্নীতি বন্ধ করতে ২০২০ সাল থেকেই অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষক বদলি কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সোনালীনিউজ/টিআই

Wordbridge School
Link copied!