গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক গৃহবধূকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার রাতেই অভিযান চালিয়ে পাশের একটি গ্রাম থেকে ছামিউল ইসলামকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের পাইটকাপাড়া এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ রোজিনা বেগম (২৬) রামধন (মওয়ামারী) গ্রামের ওয়ারেছ আলীর মেয়ে। অভিযুক্ত ছামিউল পাইটকাপাড়া গ্রামের রহমান মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, পারিবারিক দুরাবস্থার কারণে ঢাকায় পোশাক শ্রমিকের কাজ করতেন গৃহবধূ রোজিনা ও তার স্বামী। তখন থেকেই দুজনের মধ্যে সন্দেহের জেরে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। কয়েক মাস আগে রোজিনা বেগম ও তার স্বামী ছামিউল গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। এরপর দুজনের মনোমালিন্য হওয়ায় রোজিনা বাবার বাড়িতে চলে যান। সেখানে গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে রোজিনাকে বাড়িতে আনেন ছামিউল।
শুক্রবার সকাল থেকেই কোন বিষয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি সৃষ্টি হয়। এরপর হঠাৎ সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের বিলে মাছ ধরার কথা বলে ওই গৃহবধূকে বাহিরে নিয়ে যায় তার স্বামী। বিলের মাঝে নিয়ে গিয়ে কাঠমিস্ত্রীর কুড়াল দিয়ে গলায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই গৃহবধূর চিৎকার শুনে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি এগিয়ে গেলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে অভিযুক্ত স্বামী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তারে রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে পাশের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে । এ ঘটনায় শনিবার সকালে নিহতের বাবা ওয়ারেছ আলী বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার ছামিউলকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বাবা ওয়ারেছ আলী জানান, বিয়ের পর থেকেই নানা ইস্যুতে তাদের ঝগড়াঝাটি হত। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার সালিশও হয়। প্রায় একমাস আগে সালিশের মাধ্যমে আমার মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। আর আজকে ওরা আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলল। আমি ওই পাষণ্ডের শাস্তি চাই।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :