ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দেশি-বিদেশি সংস্থার ভুয়া প্রতিনিধি পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ইশরাত রফিক ঈশিতা ও তার সহযোগী শহিদুল ইসলাম দিদারের বিরুদ্ধে ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২ আগস্ট) দুই আসামিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রাজধানীর শাহআলী থানার প্রতারণা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক মামলায় পাঁচদিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আশেক ইমাম প্রতারণার মামলায় তিনদিন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার সকালে মিরপুর থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঈশিতা ও তার সহযোগী দিদারকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। এ সময় তার বাসা থেকে ভুয়া আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, সিল, সনদ, প্রত্যয়নপত্র, পাসপোর্ট, ল্যাপটপ, ইয়াবা, বিদেশি মদ ও ভুয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদের দুটি ইউনিফর্ম এবং র্যাঙ্ক ব্যাজ উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে মিরপুরের শাহআলী থানায় তিনটি মামলা করা হয়। র্যাব-৪ বাদী হয়ে এ মামলা করে।
র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান জানান, ঈশিতার বিরুদ্ধে একটি ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে, একটি প্রতারণা এবং একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৩, ২৪ ও ৩৫ ধারায় মামলা হয়েছে।
এর আগে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেফতার হন উচ্চাভিলাষী তরুণ চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও গবেষক ওরফে বিশিষ্ট আলোচক ওরফে ডিপ্লোম্যাট ওরফে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওরফে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইশরাত রফিক ঈশিতা (আইপিসি)।
রোববার (১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৪ এর অভিযানে রোববার সকালে রাজধানীর শাহআলী থানাধীন মিরপুর-১ থেকে ঈশিতা (৩৪) ও সহযোগী শহিদুল ইসলাম ওরফে দিদারকে (২৯) গ্রেফতার করা হয়।’
র্যাব জানায়, ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে ২০১৩ সালে (সেশন ২০০৫-০৬) এমবিবিএস সম্পন্ন করে ২০১৪ সালে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যোগদান করেন তিনি। চার মাস চাকরি না করতেই শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন উচ্চাভিলাষী ইশরাত রফিক ঈশিতা। এর পরই শুরু তার বহুমুখী প্রতারণা। নিজেকে চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে পরিচয় দেন। এমপিএইচ, এমডি, ডিওসহ নানা ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি ব্যবহার শুরু করেন। ভুয়া ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ হিসেবেও বিভিন্ন মতবাদ প্রচার করতে থাকেন। এজন্য বিভিন্ন সাইটে চিকিৎসা শাস্ত্রে গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ, আর্টিকেল বা থিসিস পেপারসহ ভুয়া প্রকাশনাও ব্যবহার করেন।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :