পেট্রোবাংলার সামনে এসেই মাইক্রোবাস পেলাম। সামনের সিটে বসতেই এক লোক এসে জিজ্ঞেস করলেন, ভাই, আপনার ওখানে আরেকটা সিট আছে নাকি?
‘আছে’ বলেই লোকটাকে জায়গা দিলাম। উনি বসতে বসতে তার সাথের আরেকজনকে উদ্দেশ্য করে বললেন, করিম ভাই, আমি সামনে বসলাম, আপনি পেছনের সিটে বসেন।
গাড়ি ছাড়লো।
একটু পর পর লোকটি চিৎকার দেয়, করিম ভাই, ভাড়া কিন্তু আমি দেবো, আপনি আবার দিয়েন না।
পেছনের লোকটি (করিম) প্রতি বারই বলেন, না ভাই, খবরদার আপনি ভাড়া দেবেন না। ভাড়া আমি দেবো।
এভাবে চলতে চলতে গাড়ি ক্রমেই রামপুরার কাছাকাছি আসে। গাড়ির সবাই ভাড়া দিয়ে দেয়, শুধু ওই দু’জন বাদে। দু’জনেই দিতে চান, কিন্তু কেউ পকেটেও হাত দেন না। দু’জনের বয়সই পঞ্চাশের কাছাকাছি।
রামপুরা ব্রিজে এসে গাড়ির ড্রাইভার বিরক্ত হয়ে বললেন, আপনাদের মধ্যে ভাড়াটা কে দেবেন দেন তো।
এবার আমার পাশের লোকটি বললেন, করিম ভাই, আমার কাছে খুচরা নাই, আপনিই দিয়ে দেন।
এবার ওই লোকটি (করিম) বললেন, ভাই, আমার কাছে কোনো টাকাই নাই। একজনের কাছে টাকা পাবো, কিছুক্ষণ পর বিকাশে দেবে।
‘ধুর মিয়া, টাকা ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হয়’ চরম বিরক্তি নিয়ে বললেন আমার পাশের লোকটি। বলেই পকেট থেকে টাকা বের করলেন। পাশাপাশি বসে আছি বলেই দেখতে পেলাম, তার হাতে অনেকগুলো খুচরা টাকা।
ততোক্ষণে গাড়িটা টিভি রোডের ওভারব্রিজের কাছে চলে এসেছে। ব্রেক কষতেই দুজনের ৫০টাকা ভাড়া দিলেন লোকটি। ড্রাইভার ভাড়া পকেটে রাখতে রাখতে অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকালেন লোকটার দিকে।
আমি গাড়ি থেকে নেমে হাঁটছি বাসার দিকে। কানে কথাগুলো বাজছে, ‘করিম ভাই, ভাড়াটা কিন্তু আমিই দেবো, খবরদার আপনি দেবেন না!
-‘না না ভাই, আপনি নয়, আমিই দেবো! রঙের মানুষ!
লেখাটি সময় টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার সালাউদ্দিন সুমন’র ফেসবুক থেকে নেয়া।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন
আপনার মতামত লিখুন :