প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি

চট্টগ্রাম : শুরু হচ্ছে চট্টগ্রামের বহু কাক্সিক্ষত সিটি করপোরেশন নির্বাচন। গতকাল সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। শেষদিন এসে দুই প্রধান দলের প্রার্থীরা সাংবাদিক সম্মেলনে করে একে আপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে জামাত শিবিরের সন্ত্রাসী জমায়েত করে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা চালানো অভিযোগ তুলেছেন অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ডাক্তার শাহাদাত হোসেন পুলিশকে দিয়ে তার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেপ্তার ও বাড়িতে থাকতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলেন।

আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে শেষদিনে ব্যাপক প্রচার করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ মহিলা লীগ তারা পুরো চট্টগ্রামে নৌকার পক্ষে মিছিল করে ভোট চান।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির বলেন আজ চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে ও প্রতিটি কেন্দ্র এলাকায় নৌকার পক্ষে মিছিল সমাবেশ হয়েছে মানুষের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি ইনশাআল্লাহ ২৭ নৌকার পক্ষে চট্টগ্রামে ভোট বিপ্লব হবে।

অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নগরীর জামালখান ওয়াড়ে গণসংযোগ করেন তিনি বলেন আওয়ামী লীগ ও পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদেরকে ভোট কেন্দ্রে না জাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে যদি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় ধানের শীষ প্রতীক বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।

এদিকে নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ৩২ ঘণ্টা আগে থেকে কোনো প্রচার চালানো যাবে না। কাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে শেষদিনে জমজমাট প্রচার চালান সিটি মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এদিন সবগুলো ভোটকেন্দ্রে অনুশীলন বা মক ভোটের আয়োজন করেছে। এর আগে, গত ৮ জানুয়ারি দুপুরের পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন চসিকের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। গত ১৮ দিনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা। চায়ের দোকান, উঠান বৈঠক, মিছিলে স্ব স্ব দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় চলছে রসে ভরা নানা স্লোগানে । সাধারণ ভোটাররা এসব স্লোগানে  মুগ্ধও হচ্ছেন, পাচ্ছেন নির্বাচনি আনন্দও। এই সব আনন্দের শেষ হয়েছে গতকাল মধ্যরাতে।

বিধি অনুযায়ী, কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা, ভোটগ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা এবং ভোটের দিন রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অর্থাৎ সমন্বিতভাবে ৩০ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় কোনো ব্যক্তি কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে বা তাতে অংশ নিতে পারবেন না।

ওই সময় কোনো আক্রমণাত্মক কাজ বা বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ করতে পারবেন না। ভোটার বা নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত বা দায়িত্বরত কোনো ব্যক্তিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। কোনো অস্ত্র বা শক্তি প্রদর্শন বা ব্যবহার করতে পারবেন না। কেউ এ আইন ভঙ্গ করলে ন্যূনতম ছয় মাস ও অনধিক সাত বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। তবে নির্বাচনকে ঘিরে সংঘটিত তিন হত্যাকাণ্ড ও কয়েকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নগরবাসীর মনে।

এদিকে, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে নগর পুলিশের ৬ হাজার ৭৭৩ সদস্যসহ মোতায়েন হচ্ছে আট হাজার পুলিশ। প্রতি কেন্দ্রে অস্ত্রধারীসহ ছয়জন করে পুলিশ সদস্য ও ১২ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবেন।

এর বাইরে সাধারণ কেন্দ্রে অস্ত্রধারীসহ চার জন পুলিশ ও ১২ জন করে আনসার সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া কেন্দ্রের বাইরে টহল পুলিশ, সাদা পোশাকের পুলিশ ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তৎপর থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকবে নগর পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট, কাউন্টার টেররিজম ও সোয়াট সদস্যরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই