ঢাকা: নির্বাচিত পাঁচজন সংসদ সদস্য সংসদে যোগ দেয়ায় একটি সংরক্ষিত নারী আসন পাবে বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী সংরক্ষিত এ আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ দিন সোমবার (২০ মে)। কিন্তু এখনপর্যন্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। আগ্রহী প্রার্থীদের কয়েকজন জানালেন, দলের নির্দেশনা না পাওয়ায় এখনও ফরমও তোলেননি তারা।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ‘নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে’ বিবেচনা করছে বিএনপি। তবে সবকিছুই দেখভাল করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের সিনিয়র নেতাদের কেউ-ই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গেছেন ব্যাংককে। তিনি যেদিন দেশে ফিরবেন, সেদিনই ইসিতে ফরম দিতে হবে বিএনপির মনোনীতদের। এক্ষেত্রে মনোনীতদের সংখ্যা কেমন হবে, তাও স্পষ্ট নয়।
বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের দাবি, সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের তালিকায় কয়েকজন আলোচনায় আছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমীন ফারহানার কথা আলোচনা হচ্ছে বেশি। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে এবং একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিসরে সুসম্পর্কের কারণে শামাকে উপযুক্ত হিসেবে দেখছেন বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
এছাড়া একটি সূত্রের দাবি, খালেদা জিয়ার প্রয়াত সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথির বিষয়টি আলোচনায় আছে। যদিও দায়িত্বশীল আরও একটি সূত্র তা নাকচ করে দিয়েছে।
সংসদে ইতোমধ্যে যে ৫ জন যোগ দিয়েছেন উল্লেখ করে একটি সূত্র জানায়, এই ৫ জনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দলের হাইকমান্ডের প্রশ্ন রয়েছে। এক্ষেত্রে সংরক্ষিত নারী আসনে তারেক রহমান তার দৃষ্টিতে যাকে বিবেচনা করবেন, তিনিই বসবেন সংরক্ষিত আসনে। এ বিবেচনায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানকেও আলোচনায় রাখছেন কোনও-কোনও নেতা।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শামা ওবায়েদ বলেন, আমি সংরক্ষিত আসন নিয়ে চিন্তাও করছি না। আমার তো সাংগঠনিক এলাকা আছে, নিজস্ব আসন আছে। আর বিষয়টি নিয়ে দলের চিন্তা কী, তা আমি জানি না।’
রুমীন ফারহানার সম্ভাবনা দেখছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা। তাদের ভাষ্য, রুমীন ফারহানার বিষয়ে তাদের আগ্রহ আছে। এক্ষেত্রে বিএনপির হাইকমান্ডও ইতিবাচক চিন্তা করছে বলে দাবি করেন একজন শীর্ষ নেতা। ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতার মতে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ছেলের বউ ও ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর মেয়ে নিপুণ রায় চৌধুরীকে নিয়েও আলোচনা আছে।
এ বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, সংরক্ষিত আসন নিয়ে দল ঠিক করবে। আমি কিছু বলতে পারবো না।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সংরক্ষিত আসনের ফরম তুলিনি।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুর রায় চৌধুরী বলেন, দলের প্রয়োজনে যেকোনও জায়গায় কাজ করতে রাজি। মাঠের রাজনীতিতে আছি, আগামী দিনেও থাকবো। এখন দল যদি আমাকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেয়, তাহলে দলের স্বার্থে কাজ করার জন্য সংসদে যাবো।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, সংরক্ষিত আসন নিয়ে দলের দাফতরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা আছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ পেলেই তা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ২০ মে’র মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া বাছাই ২১ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৮ মে ও ভোট ১৬ জুন।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, এসব বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
সোনালীনিউজ/এমএইচএম
আপনার মতামত লিখুন :