ঢাকা: টানা দ্বিতীয়বারের মতো মাঠে গড়াচ্ছে ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’। দেশি ও বিদেশী আটটি দল নিয়ে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাচ্ছে এই টুর্নামেন্ট’। তার পাঁচ দিন আগে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে গেল প্রতিযোগিতার ‘ড্র ও ট্রফি উন্মোচন’।
আলোক ঝলমলে মঞ্চে লেজার শো, মডেলদের ক্যাটওয়াক, অভিনেত্রী-মডেল মেহজাবিনের মনোমুগ্ধকর পারফরম্যান্সের মাঝে ট্রফি উন্মোচন ও ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ভিডিও প্রজেক্টরে গত আসরের আদ্যোপান্ত প্রদর্শন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে ড্র অনুষ্ঠানের আগে আট ক্লাবের জার্সি পড়ে এবং অংশগ্রহণকারি দলগুলোর সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গানের সুরে সুরে মডেলরা ক্যাটওয়াক করেন।
আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও অর্গানাইজিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এম এ লতিফ, এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী শ্রী বীরেন শিকদার, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দীন। চট্টগ্রাম আবাহনীর চেয়ারম্যান শামসুল হক চৌধুরী এমপি, ও অর্গানাইজিং কমিটির সমন্বয়ক তরফদার রুহুল আমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) এর অনুমোদনক্রমে এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সার্বিক সহযোগীতায় ও ব্যবস্থাপনায় টানা দ্বিতীয় বারের মত ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ২০১৭’ এর আয়োজন করা হয়েছে।
দ্বিতীয়বারের মত আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে আফগানিস্তানের শাহিন আসমায়ী, নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি, মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাব, দক্ষিণ কোরিয়ার পচেওন সিটিজেন ফুটবল ক্লাব, কিরগিজস্তানের এফসি আলগা বিশকেক এবং স্বাগতিক বাংলাদেশের ঢাকা আবাহনী লিঃ, ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড ও চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড।
দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলবে আটটি দল। গ্রুপ এ'তে রয়েছে ঢাকা আবাহনী, এফসি আলগা বিশকেক, পচেওন সিটিজেন ফুটবল ক্লাব ও টিসি স্পোর্টস ক্লাব। গ্রুপ বি'তে রয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী, মানাং মার্সিয়াংদি, ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড ও শাহিন আসমায়ী।
চট্টগ্রাম আবাহনীর সাধারণ সম্পাদক ও টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এ আসর সফল করতে সবার সহযোহিতা চাই। আসরটি আয়োজনের মাধ্যমে যেন দেশে ফুটবলের জাগরণ সৃষ্টি হয়, এ প্রত্যাশাই করি।’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেন, ‘আশা করি গত আসরকে ছাপিয়ে এ আসর বিশ্বমানের হয়ে উঠবে।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘শেখ কামাল ছিল আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার মতো দূরদর্শী, পরিশ্রমী সংগঠক আজ পর্যন্ত জন্মায়নি। ভবিষ্যতেও জন্মাবে কি না সন্দেহ।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেন, ‘এই আসরের উদ্যোক্তাদের সাধুবাদ জানাই। তাদের এই আয়োজন দেশের হারানো ফুটবলের জনপ্রিয়তা আবারও ফিরিয়ে আনবে।’
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘শেখ কামালের স্মৃতিতে করা টুর্নামেন্টের অবয়ব আরও বাড়বে এবং এটি দেশের ফুটবলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ফুটবলের উন্নয়নে যদি কোনও সহযোগিতা চায়, তা পূরণ করার চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম আসরে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে আসরটি ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও আয়োজকদের অনেক ধকলও পোহাতে হয়েছিল। সেটা বিদেশী বা অতিথি দলগুলোর নাম চূড়ান্ত করতে গিয়ে। সেবার অংশ নিয়েছিল দেশ-বিদেশের ছয়টি ক্লাব দল। তবে দ্বিতীয় আসরে দলের সংখ্যা দুটি বেড়েছে। এবার প্রাইজমানির পরিমাণও বেড়েছে। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৩০ হাজার ডলার (গতবার ছিল ২৫ হাজার)। রানার্সআপ দল পাবে ১৫ হাজার ডলার (আগের ছিল ১০ হাজার ডলার)।
টুর্নামেন্টে প্রতিটি দলই পাঁচ বিদেশী খেলোয়াড় দলে রেখে মাঠে সর্বোচ্চ চারজনকে খেলাতে পারবে। প্রতিটি দলই হবে ৩০ জনের, যার মধ্যে খেলোয়াড় সংখ্যা ২৩।
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলের প্রথম আসরের ফাইনালে ভারতের ইস্ট বেঙ্গল ফুটবল ক্লাবকে ৩-১ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনী।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই
আপনার মতামত লিখুন :