ঢাকা: পিলখানা ট্রাজেডির ১১ বছর আজ। ইতিহাসের কলঙ্কমোচন হয়নি আজও। ২০০৯ সালে ২৫ শে ফেব্রুয়ারী পিলখানায় শহীদ হয় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা। তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন বীর সেনাকে হারায় বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী বিডিআর বিদ্রোহে আমরা হারিয়েছি বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর মেধাবী ও চৌকশ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসেও এত সামরিক কর্মকর্তা জীবন দেন নাই। একটি সামরিক বিদ্রোহে কখনো এমন ম্যাসাকার ঘটে না। অত্যন্ত কষ্টের বিষয় এই যে, ঘটনার মাত্র চার বছরেই আমরা আমাদের এই বীর শহীদদের ভুলে যেতে বসেছি। যদিও ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে শহীদদের পূর্নাঙ্গ তালিকাটা পর্যন্ত পাওয়া মুশকিল হয়ে গিয়েছিলো।
অবশেষে শহীদ কর্নেল মো. মজিবুল হক স্মৃতি পরিষদের ওয়েব সাইটে সবার তালিকা ও জীবন বৃত্তান্ত মিললো, তাও আবার পিডিএফ ফরমেটে। সেখান থেকে নাম, ছবি ও জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে এই নোট প্রকাশ করলাম।
প্রথম নোটে থাকছে ১ থেকে ৩০তম শহীদের জীবন বৃত্তান্ত:
০১. শহীদ মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ:
শহীদ মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, এনডিসি, পিএসসি ১৯৫৬ সালের ১৮ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালের ৩০ নভেম্বর আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১, ২, ৩, ৯ ও ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি; আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, ৯ আর্টিলারি ব্রিগেড, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার (রংপুর), ৬৬ আর্টিলারি ব্রিগেডে কমান্ডার, সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সামরিক সচিব ও ৬৬ পদাতিক ডিভিশনে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসে সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা পদেও নিয়োজিত ছিলেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী নাজনীন হোসেন শাকিল পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হয়েছেন। তিনি কন্যা আকীলা রাইদা আহমেদ ও পুত্র রাকীন আহমেদকে রেখে গেছেন।
০২. শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসেন:
শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসেন ১৯৫৩ সালের ৩০ জুন রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮১ সালের ২৩ জুন মেডিক্যাল কোরে কমিশন লাভ করেন। তাঁর জ্যেষ্ঠতার তারিখ ২৩ জুন ১৯৭৮, চাকরি জীবনে তিনি রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ১০, ১৮, ২১ ও ৩১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স; ১ ইস্ট বেঙ্গল, রংপুর ক্যাডেট কলেজ, আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ২৪ পদাতিক ডিভিশন, সেনা সদর সামরিক সচিবের শাখা, মোমেনশাহী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ১৯ পদাতিক ডিভিশন ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি মোজাম্বিকে জাতিসংঘ মিশন এবং রুয়ান্ডায় জাতিসংঘ সহায়তা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে পরিচালক, মেডিক্যাল সার্ভিস (ডিএমএস) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী ডা. সাইদা সুলতানা, দুই কন্যা সাদিয়া হোসেন ও সামিয়া হোসেন এবং পুত্র সাকিব আবরার।
০৩. শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল বারী:
শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল বারী, এনডিসি, পিএসসি ১৯৫৯ সালের ১৩ জুন খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৮ ও ৯ ইস্ট বেঙ্গল, ৬ ও ১০ বীর, আর্মি স্কুল অব ফিজিক্যাল ট্রেনিং অ্যান্ড স্পোর্টস, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, সেনা সদর সামরিক প্রশিক্ষণ ও স্টাফ ডিউটিজ পরিদপ্তর এবং স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিক্সে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি ৫৫ পদাতিক ডিভিশনে কর্নেল স্টাফ ও ৯৮ কম্পোজিট ব্রিগেডে কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ ইরাক-কুয়েত পর্যবেক্ষণ মিশন ও সিয়েরা লিওনে জাতিসংঘ সহায়তা মিশনে অংশগ্রহণ করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরে উপ-মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী ফারহানা বারী এবং দুই পুত্র সুদীপ্ত বারী ও সৌরভ বারী।
০৪. শহীদ কর্নেল মো. মজিবুল হক:
শহীদ কর্নেল মো. মজিবুল হক ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১, ৮ ও ৯ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, ৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, এসএমআই, ফিল্ড ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও বিডিআরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন কনে।
এ ছাড়া তিনি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরে কর্নেল জেনারেল স্টাফ ও ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাসে মিনিস্টার (কনস্যুলার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জর্জিয়ায় জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ মিশনেও দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার (ঢাকা) হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি স্ত্রী নেহরীন ফেরদৌসী, দুই পুত্র মো. মুহিব হক ও মো. নাদীত হক এবং কন্যা তেহ্রীম মুজিবকে রেখে গেছেন।
০৫. শহীদ কর্নেল মো. আনিস উজ জামান:
শহীদ কর্নেল মো. আনিস উজ জামান, এনডিসি ১৯৫৯ সালের ১৬ আগস্ট রাজশাহী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৯ সালে ২৩ ডিসেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১৭ ও ৩২ ইস্ট বেঙ্গল, ৪ ও ৯ বীর, দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টার, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি, বিডিআর ও ১০৫ পদাতিক ব্রিগেডে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি সেনাবাহিনী প্রধানের সচিবালয়ে সেনাবাহিনী প্রধানের একান্ত সচিব ও বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার পদেও দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরে পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড ট্রেনিং) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তিনি জাতিসংঘ ইরাক কুয়েত পর্যবেক্ষণ মিশন ও লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশন এ-ও অংশগ্রহণ করেন। তাঁর স্ত্রী নাজমা জামান, দুই কন্যা ফারিহা মেহরিন জামান ও সামিহা মেহরিন জামান এবং পুত্র মো. আহনাফউজ জামান।
০৬. শহীদ কর্নেল মোহাম্মদ মসীউর রহমান:
শহীদ কর্নেল মোহাম্মদ মসীউর রহমান, পিএসসি ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালের ৫ নভেম্বর সিগন্যাল কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১, ৩, ৫ ও ৭ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন, এসটিসিঅ্যান্ডএস, ১০২ স্বতন্ত্র ব্রিগেড সিগন্যাল কম্পানি, স্ট্যাটিক সিগন্যাল কম্পানি ও সেনা সদর সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি রুয়ান্ডায় জাতিসংঘ সহায়তা মিশন ও পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘ অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে পরিচালক (যোগাযোগ) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমান এবং দুই পুত্র জুবায়ের আল মুসা ও মো. আশেকুর রহমান।
০৭. শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহী রহমান শফিক:
শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহী রহমান শফিক, এনডিসি, পিএসসি ১৯৬২ সালের ১ নভেম্বর রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১, ৩, ১০, ১৮ ও ৪৩ ইস্ট বেঙ্গল (৮ বীর), এসআইঅ্যান্ডটি, ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড ও এমআইএসটিতে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বসনিয়া ও সুদানে জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (দিনাজপুর) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী লবী রহমান ও একমাত্র পুত্র সাকিব রহমানকে রেখে গেছেন।
০৮. শহীদ কর্নেল মোহাম্মদ আখতার হোসেন:
শহীদ কর্নেল মোহাম্মদ আখতার হোসেন, পিএসসি, জি+ ১৯৬৩ সালের ২৪ জুন নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১ ও ৯ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ২৯ ডিভ লোকেটিং ব্যাটারি আর্টিলারি, এসআইঅ্যান্ডটি, বিএমএ, ৩৩ আর্টিলারি ব্রিগেড, ১৯ পদাতিক ডিভিশন, ২১ ও ৩৮ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৫৬ স্বতন্ত্র মিডিয়াম এডি ব্যাটারি আর্টিলারি ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি রুয়ান্ডায় জাতিসংঘ সহায়তা মিশনে পর্যবেক্ষক এবং লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনে চিফ অপারেশন অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (চট্টগ্রাম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (রীমা) এবং তিন পুত্র মো. ইমতিয়াজ হোসেন ফারাবী, মো. ফয়সাল হোসেন ফাহমী ও মো. আন্দালীব হোসেন ফারদিন।
০৯. শহীদ কর্নেল মো. রেজাউল কবীর:
শহীদ কর্নেল মো. রেজাউল কবীর, এএফডবি্লউসি, পিএসসি ১৯৬৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন আর্মি সার্ভিস কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৩২, ৩৫ ও ৩৬ এসটিক ব্যাটালিয়ন; এসএসডি বগুড়া, এসএসডি রংপুর, আর্মি সার্ভিস কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল ও সেনা সদর এমএস শাখায় বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার (দিনাজপুর) পদেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মোজাম্বিকে জাতিসংঘ মিশনে কম্ব্যাট জাতিসংঘ সাপ্লাই প্লাটুন কমান্ডার এবং সিয়েরা লিওনে জাতিসংঘ সহায়তা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী সাইদা সুলতানা। তিনি পুত্র মো. ফায়সাল কবীর এবং দুই কন্যা রাইসা কবীর ও রামিজা কবীরের জনক।
১০. শহীদ কর্নেল নাফিজ উদ্দীন আহমেদ:
শহীদ কর্নেল নাফিজ উদ্দীন আহমেদ, পিএসসি ১৯৬১ সালের ৫ জানুয়ারি ভোলা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন আর্মর্ড কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি বেঙ্গল ক্যাভ্যালরি, ৬ ক্যাভ্যালরি, ৭ হর্স, পিজিআর, সেনা সদর এমটি পরিদপ্তর, ২ রাইফেল ব্যাটালিয়ন ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বিডিআরের সেক্টর উপ-অধিনায়ক পদেও কর্মরত ছিলেন। তিনি সাবেক যুগোস্লাভিয়া ও লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি রাইফেলস ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে কমান্ড্যান্ট পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি স্ত্রী মুন্নী চৌধুরী ও একমাত্র পুত্র ইয়াছির আহমেদ উসামাকে রেখে গেছেন।
১১. শহীদ কর্নেল কাজী এমদাদুল হক:
শহীদ কর্নেল কাজী এমদাদুল হক, পিএসসি ১৯৬২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১১ ও ১৮ ইস্ট বেঙ্গল, ২৪ পদাতিক ডিভিশন, এসআইঅ্যান্ডটি, ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন ও সেনা সদর বাজেট পরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি র্যাব-৭-এ অধিনায়ক, ১১ পদাতিক ডিভিশনে কর্নেল স্টাফ ও ৭৭ পদাতিক ব্রিগেডে ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মোজাম্বিকে জাতিসংঘ মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক, লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনে স্টাফ অফিসার পদেও দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (রাজশাহী) পদে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নাজনীন নুর সুইটি এবং দুই পুত্র কাজী উমান এমদাদ ও কাজী তাওসীফ এমদাদ।
১২. শহীদ কর্নেল বিএম জাহিদ হোসেন:
শহীদ কর্নেল বিএম জাহিদ হোসেন, পিএসসি ১৯৬১ সালের ১০ আগস্ট বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৯, ১৯, ২৭ ও ৪০ ইস্ট বেঙ্গল; ১ ও ৯ বীর, এসআইঅ্যান্ডটি, ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও সদর দপ্তর লগ এরিয়ায় বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার এবং ডিজিএফআইয়ে কর্নেল জিএস পদেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ ইরাক কুয়েত পর্যবেক্ষণ মিশন এবং লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (ময়মনসিংহ) পদে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নিসরাত জাহিদ। তাঁদের দুই পুত্র বিএম আবরার শাহরিয়ার ও বিএম রুবাইয়াত শাহরিয়ার।
১৩. শহীদ কর্নেল সামসুল আরেফিন আহাম্মেদ:
শহীদ কর্নেল সামসুল আরেফিন আহাম্মেদ, পিএসসি ১৯৬২ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৬, ২০, ৩২ ও ৩৭ ইস্ট বেঙ্গল, ২৮ বীর, ৬৫ পদাতিক ব্রিগেড, এফআইইউ, ১১ ও ২৪ পদাতিক ডিভিশন এবং সেনা সদর এমআই পরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি এরিয়া সদর দপ্তর কুমিল্লার কর্নেল অ্যাডমিন পদেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রুয়ান্ডায় জাতিসংঘ সহায়তা মিশন এবং লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (কুষ্টিয়া) পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি স্ত্রী হাসিনা মমতাজ এবং দুই কন্যা আসিমা ইসরাত ও রামিসা ফারিহাকে রেখে গেছেন।
১৪. শহীদ কর্নেল মো. নকিবুর রহমান:
শহীদ কর্নেল মো. নকিবুর রহমান, পিএসসি ১৯৬৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ২, ১৪, ৩০, ৩২ ও ৪২ ইস্ট বেঙ্গল, ২১ বীর, ২৪ পদাতিক ডিভিশন, এসআইঅ্যান্ডটি, বিআরইউ যশোর ও ৫৫ পদাতিক ডিভিশনে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি মোজাম্বিকে জাতিসংঘ মিশন এবং জর্জিয়ায় জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার (কুমিল্লা) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী নিশাদ রহমান, পুত্র নাবিল ইবনে নাকিব ও কন্যা নুদরাত বিনতে নাকিব।
১৫. শহীদ কর্নেল কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন
শহীদ কর্নেল কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, পিএসসি ১৯৬০ সালে ১৪ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিগন্যালস কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১, ২, ৩ ও ১০ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন; এসটিসিএস, আর্মি সিগন্যাল ব্রিগেড, ডিজিএফআই ও সেনা সদর পিএস পরিদপ্তর এবং বিডিআরের ৩৭ রাইফেল ব্যাটালিয়নে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি রুয়ান্ডায় জাতিসংঘ সহায়তা মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক এবং কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনে অধিনায়ক, ফোর্স ব্যানএমপি-১ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (রাঙ্গামাটি) পদে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বদরুন্নেছা খানম। তিনি দুই পুত্র কাজী সামির আসাফ ও কাজী সাদির আসাফের জনক।
১৬. শহীদ কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ:
শহীদ কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ, পিএসসি ১৯৬৪ সালের ২১ মার্চ কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন।চাকরি জীবনে তিনি ২, ৮, ৩৪, ৪৪ ইস্ট বেঙ্গল (৯ বীর), ৬৬ পদাতিক ডিভিশন, বিএমএ, এনসিওস একাডেমি ও সেনা সদর এমও পরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি র্যাব-৩-এ অধিনায়ক এবং র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কম্বোডিয়ায় জাতিসংঘ অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তা মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক এবং সিয়েরা লিওনে জাতিসংঘ সহায়তা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (সিলেট) পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী ফাতেমা সুলতানা এবং দুই কন্যা জাহীন তাসনিয়া ও লামিয়া সাইয়ারা।
১৭. শহীদ কর্নেল মো. শওকত ইমাম:
শহীদ কর্নেল মো. শওকত ইমাম, পিএসসি, জি+ ১৯৬১ সালে ২০ মে চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালের ১ জুন আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৫, ২১, ৩৬ ও ৩৮ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ২৩ রাইফেল ব্যাটালিয়ন, এসিঅ্যান্ডএস ও সেনা সদর আর্টিলারি পরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি জর্জিয়ায় জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ মিশন এবং সুদানে জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (খাগড়াছড়ি) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী নুজহাত আহসান ও একমাত্র কন্যা সুমেরা ফাইজা আজরিনকে রেখে গেছেন।
১৮. শহীদ কর্নেল মো. এমদাদুল ইসলাম:
শহীদ কর্নেল মো. এমদাদুল ইসলাম, পিএসসি ১৯৬২ সালের ১৫ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালের ২১ ডিসেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৮, ৩৯, ৪৩ (৮ বীর) ও ৪৪ (৯ বীর) ইস্ট বেঙ্গল, বিডিআর, বিএমএ এসআইঅ্যান্ডটি, পিজিআর ও ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি তাজিকিস্তানে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মিশনে পর্যবেক্ষক এবং লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনের ফোর্স সদর দপ্তরে ডেপুটি চিফ অপারেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের সেক্টর কমান্ডার (খুলনা) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী শামীমা আক্তার (লুনা) এবং পুত্র মো. আকিফ আল ইসলাম ও কন্যা নৌশিন নাওয়ার নূরজাহান।
১৯. শহীদ কর্নেল মো. আফতাবুল ইসলাম:
শহীদ কর্নেল মো. আফতাবুল ইসলাম, পিএসসি ১৯৬৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৫ সালের ১৯ মে আর্মি সার্ভিস কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৩২ ও ৩৩ এসটি ব্যাটালিয়ন, এসএসডি মোমেনশাহী, এসএসডি কুমিল্লা, এএসসিসিঅ্যান্ডএস, আন্তবাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ, সেনা সদর এমটি পরিদপ্তর ও প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ইরাকে জাতিসংঘ গার্ড কন্ডিনজেন্ট এবং সুদানে জাতিসংঘ মিশনে (টঘগওঝ) দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরে সেক্টর কমান্ডার (রংপুর) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী নাসিমা মোশারাফ বন্যা ও একমাত্র কন্যা নুদরাত নাওয়ারকে রেখে গেছেন।
২০. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল এনশাদ ইবন আমিন:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল এনশাদ ইবন আমিন, জি+ ১৯৫৯ সালের ৩ মার্চ রাজশাহী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ২১, ৩৬ ও ৩৮ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১৫ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ডিজিএফআই ও আইএসএসবিতে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাবেক যুগোস্লাভিয়া ও আইভরিকোস্টে জাতিসংঘের মিশনে দায়িত্ব পালন করেন।
সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে রাইফেলস সিকিউরিটি ইউনিট, ঢাকার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী ডা. রোয়েনা মতিন। তিনি পুত্র এম মাশাহেদ বিন এনশাদ এবং কন্যা নুজহাত নাহিয়ান এনশাদের জনক।
২১. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসুল আজম:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসুল আজম, পিএসসি, ইএমই ১৯৬০ সালের ৭ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮০ সালের ১৫ জুন ইএমই কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১৮ ও ১২৭ ফিল্ড ওয়ার্কশপ কম্পানি, ৭০৩ মিডিয়াম ওয়ার্কশপ; ১১, ২৪ ও ৩৩ পদাতিক ডিভিশন, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি ও ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের কমান্ডার ইএমই (ঢাকা) পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর স্ত্রী মুনমুন আক্তার। তিনি তিন পুত্র তারিক বিন আজম তানিম, জারিফ বিন আজম জিষান ও সুদীপ্ত শাহীন মাশরাফির পিতা।
২২. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী রবি রহমান:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী রবি রহমান, এনডিসি ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালের ১ অক্টোবর আর্মি ডেন্টাল কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৭ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স, যশোর সিএমএইচ, রংপুর সিএমএইচ, মোমেনশাহী সিএমএইচ, সাভার সিএমএইচ, বগুড়া সিএমএইচ, ঢাকা সিএমএইচ, কুমিল্লা সিএমএইচ, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনের ব্যানমেড-৩-এ দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর হাসপাতালে পর্যায়িত দন্ত বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া রশিদ। তাঁদের দুই পুত্র কাজী অদ্রি আরাফাত রহমান ও কাজী দিপ্র সাদাকাত।
২৩. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ নিয়ামতউলাহ:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ নিয়ামতউলাহ, পিএসসি জি ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালের ৫ নভেম্বর আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৭, ৮, ২০ ও ২৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি; ২৮ মিডিয়াম রেজিমেন্ট আর্টিলারি, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেড, ১৯ পদাতিক ডিভিশন ও আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি জর্জিয়ায় জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে সিনিয়র রেকর্ড অফিসার (রেকর্ড উইং, ঢাকা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী শারমিন জাহান শিল্পী এবং দুই কন্যা আফিফা জাহিন সুস্মিতা ও নাফিজা জাহিন ইফরীতকে রেখে গেছেন।
২৪. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. বদরুল হুদা:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. বদরুল হুদা, পদাতিক ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালের ৫ নভেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ১৩, ১৯, ৪৭, ৫০ ও ৫৯ ইস্ট বেঙ্গল বিডিআর ও এএসইউয়ে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি মোজাম্বিকে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ মিশন (টঘঙগঙত), জাতিসংঘ ইরাক কুয়েত পর্যবেক্ষণ মিশন এবং আইভরিকোস্টে জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের ১৩ রাইফেল ব্যাটালিয়নে (ঢাকা) অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী নাসিমা বদরুল এবং দুই কন্যা সাবরিনা হুদা ও তামান্না হুদাকে রেখে গেছেন।
২৫. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল এলাহী মন্জুর চৌধুরী:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল এলাহী মন্জুর চৌধুরী, পদাতিক ১৯৬২ সালের ২৮ ডিসেম্বর সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালের ৫ নভেম্বর পদাতিক রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৮, ৯, ২৩, ৩০ ও ৫২ ইস্ট বেঙ্গল এবং আর্মি এমপি ইউনিটে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি কুয়েত, আইভরিকোস্ট ও লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মিশনে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে এএজি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি স্ত্রী তানি্ন ইয়াফতা চৌধুরী, দুই কন্যা সারাহ জুমানা মন্জুর ও ফারাহ মন্জুর এবং পুত্র ফাইয়াজ মনজুরকে রেখে গেছেন।
২৬. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এনায়েতুল হক:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এনায়েতুল হক, পিএসসি, আর্টিলারি ১৯৬২ সালের ১৪ জুন ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালের ৫ নভেম্বর আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ২১, ২৫, ৩৩, ৩৮ ও ৫৬ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৫৭ স্বতন্ত্র মিডিয়াম ব্যাটারি আর্টিলারি, এসিঅ্যান্ডএস, ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড ৩০৯ পদাতিক ব্রিগেড ও ১৯ পদাতিক ডিভিশনে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি তাজিকিস্তানে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক এবং আইভরিকোস্টে জাতিসংঘ মিশনে (দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের ৩৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নের (ঢাকা) অধিনায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী শাহানা কবীর, দুই কন্যা নাবিলাহ এনায়েত প্রভা ও তামকিন এনায়েত শামাকে রেখে গেছেন।
২৭. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মুছা মো. আইউব কাইসার:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মুছা মো. আইউব কাইসার, পিএসসি, ইঞ্জিনিয়ার্স ১৯৬২ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ১০ জুন ইঞ্জিনিয়ার কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৫ ও ১১ আরই ব্যাটালিয়ন, ২ ও ১২ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, ১৬ ইসিবি ও এএসইউয়ে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি জিই (আর্মি) হিসেবেও নিয়োজিত ছিলেন। তিনি অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে দায়িত্ব পালন করেন।
সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে একিউএমজি (রক্ষণাবেক্ষণ ও নির্মাণ শাখা) হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী মুশরাদ জাহান পিনু। কারিশা মুশরাত ও জাফারিয়া কাইসার নামে তাঁদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।
২৮. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম, এসি ১৯৬০ সালের ১৯ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর সাঁজোয়া কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৬ ক্যাভালরি, ৪ হর্স, ১২ ল্যান্সার, বিডিআর ও সেনা সদর সাঁজোয়া পরিদপ্তরে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রুয়ান্ডায় জাতিসংঘ সহায়তা মিশন পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘ অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তা মিশন , অপারেশন সার্ক বন্ধন এবং মালদ্বীপে প্রেরিত টাস্কফোর্সে দায়িত্ব পালন করেন।
সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তর অপারেশন ও প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরে জিএসও-১ পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।তিনি স্ত্রী শাহীনুর পারভীন জবা এবং তিন পুত্র শাহ মোঃ সালাউদ্দীন সাইফ, শাহ মোঃ আসিফ হাসান ও সরকার মোঃ শরীফুল ইসলাম আদ্দীনকে রেখে গেছেন।
২৯. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ লুৎফর রহমান:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ লুৎফর রহমান, পিএসসি, আর্টিলারি ১৯৬৪ সালের ১০ নভেম্বর জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৫ সালের ১৯ মে আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি ৪ মর্টার রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৫৬ স্বতন্ত্র এএ ব্যাটারি আর্টিলারি, ৫৭ ও ৫৮ স্বতন্ত্র মিডিয়াম এএ ব্যাটারি আর্টিলারি, ৩৮ এসএএ রেজিমেন্ট আর্টিলারি; ৬, ১২, ১৫ ও ২৬ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, সিলেট ক্যাডেট কলেজ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বিডিআরের ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি জর্জিয়ায় জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ মিশন ও পশ্চিম সাহারায় জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআরের ২৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নে (ঢাকা) অধিনায়ক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তার স্ত্রী মুনমুন রহমান। এম তাসকীন রহমান ও তাম্মি তানজিনা রহমান নামে তাঁদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
৩০. শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমান:
শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমান, অর্ডন্যান্স ১৯৬৭ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৭ সালের ২৬ জুন অর্ডন্যান্স কোরে কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি অর্ডন্যান্স ডেপো-যশোর, ৩১ আইএপি, অর্ডন্যান্স ডেপো-কুমিল্লা, ৫০৫ ডিওসি, অর্ডন্যান্স সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, এরিয়া সদর দপ্তর, চট্টগ্রাম এবং সেনা সদর অর্ডন্যান্স ও ডবি্লউইএন্ডএস পরিদপ্তরে বিভিন্ন নিযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে তিনি বিডিআর সদর দপ্তরে সহকারী পরিচালক, অর্ডন্যান্স সার্ভিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি স্ত্রী শারমিন নিশাত সিরাজী এবং দুই পুত্র মোহাম্মদ মুহতাসিম ইত্তিসাফ ও মোহাম্মদ তাওসীফ ইসফাককে রেখে গেছেন। চলমান...
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :