• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পে-স্কেল ও রেশনসহ কর্মচারীদের ৭ দাবি বাজেটে অন্তর্ভূক্তির আবেদন


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২০, ২০২২, ০৮:০৩ পিএম
পে-স্কেল ও রেশনসহ কর্মচারীদের ৭ দাবি বাজেটে অন্তর্ভূক্তির আবেদন

ঢাকা: ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পে-কমিশন গঠন ও অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ৫০% মহার্ঘ ভাতা অথবা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫% এর পরিবর্তে ২০% প্রদানসহ ৭ (সাত) দফা দাবী বাজেটে অন্তর্ভূক্তির আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন।

সোমবার (২০ জুন) কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ  কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, দেশের সকল অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নেতৃত্বের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারি কল্যাণ ফেডারেশন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের সর্ববৃহৎ পেশাজীবি সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন (কেন্দ্রীয় পরিষদ) প্রজাতন্ত্রের প্রায় ১৩ লক্ষাধিক কর্মচারীর নেতৃত্ব প্রদান করে থাকেন।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে এ সকল কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি দিগুণ ও শ্রেণী প্রথা বিলুপ্ত করে গ্রেড প্রথা চালু করে কর্মচারিদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে দোয়া ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমরা পেশাজীবি সংগঠক হিসাবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহানুভবতার ১৯৭৩ সালের ঘোষিত ১০ গ্রেডের ন্যায় ২০১৫ সালের জাতীয় পে-স্কেল ও ১০ ধাপে বেতন-স্কেল বাস্তবায়ন করার দাবী ছিল। পে-কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান মোঃ ফরাশ উদ্দিন ১৬ ধাপে বেতন-স্কেল প্রদানের সুপারিশ করেন। পরবর্তিতে পে-কমিশনের সুপারিশকৃত ১৬ ধাপের পরিবর্তে ২০ ধাপে পে-স্কেল প্রদান করা হয়। বর্তমানে ০১ (এক) গ্রেড থেকে ২০ (বিশ) গ্রেডের বেতন স্কেলের ব্যবধান ৭৮০০- ৮২৫০=৬৯৭৫০/- (ঊনসত্তর হাজার সাতশত পঞ্চাশ) টাকা।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের ২০০৯ সালে ৭ম জাতীয় পে-স্কেল প্রদান করা হয় এবং সর্বশেষ ২০১৫ সালে ৮ম পে-স্কেল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদান করা হয়। বর্তমান সময়ের বাজার মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি ও পারিবারিক ব্যয় বৃদ্ধির দরুণ ২০২০ সালে ৯ (নবম) জাতীয় পে- স্কেল প্রদান অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ৯ (নবম) জাতীয় পে-স্কেল প্রদান, আউট সোর্সিং প্রথার নামে দাশপ্রথা বাতিলসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের কর্মচারিদের (পদবি পরিবর্তনসহ) এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি প্রদান ও ঘরে ঘরে শিক্ষিত বেকারত্বের বিষয় বিবেচনা না করে সিনিয়র সচিব ও সচিবদের প্রতিমাসের বেতনের চেকের সাথে ১৬০০০/-+১৬০০০/=৩২০০০/- (বত্রিশ হাজার) টাকা প্রদানের পরিবর্তে কুক ও নিরাপত্তা প্রহরীর ২টি পদে লোক নিয়োগ করাসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের নিম্নবর্ণিত ৭ (সাত) দফা দাবি আপনার সদয় জন্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:

দাবীনামা-১
১.১ দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির কারণে কর্মচারি প্রতিনিধির সমন্বয়ে স্থায়ী পে-কমিশন গঠনপূর্বক অনতিবিলম্বে ১৯৭৩ সালের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১০টি গ্রেডে ৯ (নবম) পে-স্কেল প্রদান করতে হবে। নবম পে-স্কেলে বেতন স্কেল ২৫,০০০/- (পঁচিশ) হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ বেতন স্কেল ১,২৫,০০০/- (এক লক্ষ পঁচিশ) হাজার টাকায় উন্নীত করতে হবে।
১.২ ১০-২০ গ্রেড পর্যন্ত বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার ৫% এর পরিবর্তে ২০% এ উন্নীতকরণ করতে হবে। এক গ্রেড থেকে অপর থেডে পার্থক্য ২৫% এ নির্ধারণ করতে হবে। পূর্বের ন্যায় টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড এবং বেতন সমতা প্রথা চালু করতে হবে।
১.৩ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে সচিবালয়ের ন্যায় সমান পদমর্যাদা নির্ধারণকল্পে সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাহিরে সকল দপ্তরের এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।

দাবীনামা-২
২.১ পেনশন গ্রাচুইটির হার ৯০ ভাগ থেকে ১০০ ভাগ ও পেনশন গ্রাচুইটির হার ১৪ ৩৫০ টাকা হারে প্রদান করতে হবে। মেডিকেল ভাতা ১৫০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০০ টাকা, শিক্ষা ভাতা ৫০০ টাকার পরিবর্তে জন প্রতি ২০০০ টাকা, টিফিন ভাতা ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০০ টাকা ও যাতায়াত ভাতা ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৫০০০ সহ অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।
২.২ বর্তমানে ল্যাম্পগ্রান্ট ১৮ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ আর্থিক সুবিধা বহাল রেখে উদ্বৃত্ত্ব অর্জিত ছুটির বিপরীতে মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ ল্যাম্পগ্রান্ট হিসেবে প্রদান করতে হবে।
২.৩ ১১ থেকে ২০ গ্রেডধারীদের সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর ন্যায় সকল কর্মচারিদের জন্য রেশন প্রথা চালু করতে হবে। কোস্টাল এরিয়ায় কর্মরত সকল গ্রেডের কর্মচারিদের ঝুঁকি ভাতা দিতে হবে।
২.৪ ২০১৫ সালে প্রদানকৃত ৮ম পে-স্কেল ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের পদ নামের পরিবর্তে গ্রেড পরিচয়ের আদেশ অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং প্রজাতন্ত্রেল সকল গ্রেডের কর্মচারিদের গাড়ি ঋণের সমসুযোগ দিতে হবে।

দাবীনামা-৩
৩.১ উন্নয়ন খাতের কর্মচারিদের যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতা প্রদানে মহামান্য হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগের রায় প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারিদের জন্য দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

দাবীনামা-৪
৪.১ সিনিয়র সচিব ও সচিব পদে কর্মরতদের কুক ও নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ ছাড়াই প্রতিমাসে তাদের নিজ বেতনের চেকের সাথে প্রদেয় ১৬০০০/-+১৬০০০/-=৩২০০০/- (বত্রিশ হাজার) টাকা প্রদান না করে বেকারত্বের বিষয় বিবেচনা করে ০২ (দুই) জন কর্মচারি নিয়োগ দিয়ে তাদের সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৪.২ রাষ্ট্রের দাপ্তরিক কার্যক্রমের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার স্বার্থে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রথা বাতিল করতে হবে। ইতোমধ্যে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত সকল দপ্তর/অধিদপ্তর/পরিদপ্তরের সকল কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে।

দাবীনামা-৫
৫.১ কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে ৮ (আট) লক্ষ টাকার পরিবর্তে ১৫ (পনের) লক্ষ টাকায় উন্নীত করতে হবে এবং দুর্ঘটনায় মারা গেলে ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে।
৫.২ সিনিয়র স্টাফ নার্সদের ন্যায় অন্যান্য সকল ডিপ্লোমাধারী ও বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত পদধারীদের সমমান বেতন স্কেল ও গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৫.৩ প্রাথমিক শিক্ষা ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ন্যায় অন্যান্য সকল দপ্তরে সরাসরি নিয়োগ এর ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা ৩০% সংরক্ষণ করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারীর পোষ্যদের ভর্তির জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ১০% কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।

দাবীনামা-৬
৬.১ সকল দপ্তর/অধিদপ্তর/পরিদপ্তরে কর্মরত মাস্টাররোল, ওয়ার্কচার্জ, কন্টিজেন্সিসহ সকল উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদেরকে অনতিবিলম্বে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।
৬.২ সকল পেশাজীবি সংগঠনের স্থায়ী কার্যালয়ের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি কল্যাণ ফেডারেশনের স্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের জন্য ঢাকাস্থ শেরেবাংলা নগরে জায়গা বরাদ্দ দিতে হবে।

দাবীনামা-৭
৭.১ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত আইএলও কনভেনশন মোতাবেক কর্মচারিদের স্ব-স্ব দপ্তরে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে। ঢাকাস্থ সরকারি কর্মচারি হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ রূপান্তর করতে হবে এবং দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও সরকারি কর্মচারি হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!