• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ কনস্টেবলকে মারধর: গ্রেফতার শ্রমিকলীগ নেতার স্ত্রী (ভিডিও)


খুলনা প্রতিনিধি অক্টোবর ৩১, ২০২০, ০৭:২২ পিএম
পুলিশ কনস্টেবলকে মারধর: গ্রেফতার শ্রমিকলীগ নেতার স্ত্রী (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

খুলনা: টোলপ্লাজায় বাকবিতণ্ডা ও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন খুলনার রূপসা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মফিজুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বিউটি।

শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) টোলপ্লাজায় পুলিশকে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, টোলপ্লাজায় সিরিয়াল ভেঙে আগে যাওয়ার চেষ্টা করতে গাড়ি থেকে নামেন বিউটি। এবং সেতুর সিকিউরিটি গার্ডকে ধাক্কা দেন। সিকিউরিটি গার্ড সেতুতে দায়িত্বরত পুলিশকে ডাকেন। কনস্টেবল সাইদুর রহমান এগিয়ে গেলে তার সঙ্গে বিউটির বাকবিতণ্ডা চলে। একপর্যায়ে সাইদুরকেও ধাক্কা দেন এবং মারধর করেন বিউটি।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে রূপসা থানায় দুটি মামলা হয়েছে। রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা জাকির হোসেন জানান, পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ বাদী হয়ে থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় বিউটিকে গ্রেফতার। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতার চেষ্টা চলছে।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) প্রত্যক্ষদর্শী রূপসা সেতুর টোলপ্লাজার সুপারভাইজার মাসুদ রানা বলেন, শুক্রবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে বিউটি চারটা হাইয়েক্স, দুইটা প্রাইভেটকার ও তিন চারটা মোটরসাইকেলে করে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি বহর নিয়ে খুলনা শহরে তার মেয়ের বউভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। টোলপ্লাজার লেন নং-৬ দিয়ে তারা সিরিয়াল ভঙ্গ ও টোলে কোনো টাকা না দিয়ে পার হতে চাচ্ছিলেন। টোল আদায়কারীরা তাদের বাধা দেন। এসময় বিউটি, তার দুই ভাইপো আহমদ আলী শেখ ও মোহাম্মদ আলী শেখ এবং মনি গাজী নামে এক যুবক গাড়ি থেকে নেমে সিকিউরিটি গার্ডদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে বিউটি সিকিউরিটি গার্ড রবিউলের গায়ে ধাক্কা দেন। এসময় অপর সিকিউরিটি গার্ড কামাল পুলিশকে ডাকে। পুলিশ ঘটনা শুনতে গেলে ওই নারী কনস্টেবল সাইদুর রহমানকেও আঘাত করেন।

টোলপ্লাজার পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই জাকির বলেন, টোলপ্লাজায় তিনজন পুলিশ দায়িত্বে ছিলেন। গাড়িবহর নিয়ে সিরিয়াল ভঙ্গ করে যাওয়ার জন্য সিকিউরিটি গার্ডদের সঙ্গে এক নারীর বাকবিতণ্ডা হচ্ছে দেখে পুলিশ এগিয়ে যায়। এ সময় বিউটি পুলিশ কনস্টেবল সাইদুর রহমানকে আঘাত করেন। এতে তার পোশাকের বোতাম ছিঁড়ে যায়।

অভিযোগ রয়েছে, পূর্ব রূপসার বাগমারা গ্রামে বিউটির শ্বশুর বাড়ি ও বাপের বাড়ির লোকজন খুব প্রভাবশালী। তার স্বামী মফিজুল ইসলাম রূপসা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতির পাশাপাশি রূপসা টেম্পু অটোটেম্পু মাহেন্দ্র শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। 

এছাড়া মফিজুলের বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক নৈহাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রূপসা-বাগেরহাট বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। আবার বিউটির ভাই আবু সালেহ বাবু মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক। আরেক ভাই আবু আহাদ হাফিজ বাবু রূপসা চিংড়ি বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রূপসা উপজেলা যুবলীগের সদস্য।

স্থানীয়রা জানায়, র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত রূপসা উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামালের অনুসারী বিউটির ভাইয়েরা। আবু সালেহ বাবু পূর্ব রূপসা বাজারে আড্ডা গলিতে (বর্তমানে আদর্শ গলি) একটি অফিস করেছেন। যেখানে কৌশলে বিভিন্ন লোককে ডেকে নির্যাতন ও চাঁদাবাজি করা হয়। ক্ষমতার দাপটে রূপসা বাস স্ট্যান্ড, বাজার এমনকি হিমায়িত চিংড়ি মাছ শিল্প এলাকায় বিউটির পরিবারের লোকজন ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। যার প্রভাবে বিউটিও বেপরোয়া।

দেখুন ভিডিও

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!