• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৈরী আবহাওয়া জেলেদের স্বপ্ন ভঙ্গ


পটুয়াখালী প্রতিনিধি জুলাই ২৫, ২০২১, ০২:০৩ পিএম
বৈরী আবহাওয়া জেলেদের স্বপ্ন ভঙ্গ

পটুয়াখালী : গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে উঠেছে সাগরে মাছ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরতে যাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জেলেদের। তাই ৬৫ দিনের অবোরেধে অনাহারে অর্ধাহারে থাকা এসব জেলে পরিবারের মুখের হাসি অনেকটা ম্লান। গত দুদিন ধরে পটুয়াখালীর মহিপুর ও আলিপুর মৎস্য বন্দরে আনেকটা প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে।

জেলেসহ মৎস্য খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ব্যস্ত ছিলেন ট্রলারে জাল তোলা, বরফ নেওয়া, জ্বালানি তেল নেওয়া এবং বাজার করাসহ আনুষঙ্গিক কাজে। কিন্তু হঠাৎ করে আবহাওয়া প্রতিকূল হয়ে উঠায় সময়মতো সমুদ্রযাত্রা নিয়ে কয়েক হাজার জেলের মধ্যে ভীতি কাজ করছে।

আলিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আনসার মোল্লা বলেন, আলিপুর মহিপুর মৎস্য বন্দরে সহস্রাধিক মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। মৎস্যজীবী রয়েছেন বিশ হাজারের ওপরে। একদিকে করোনায় সবকিছু স্থবির, অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের অবরোধ। অবরোধ শেষ হতে না হতেই আবহাওয়ার বেহালদশা। বিভিন্ন কারণে জেলেরা চিন্তায় পড়ে গেছে। জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বাজার করে নিয়েছে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরে নামতে দেরি হবে, যার ফলে আবারো থাকা-খাওয়ার প্রয়োজনীয় সবকিছু নতুন করে বাজার করতে হবে। সব মিলিয়ে ভালো নেই জেলেরা।

জেলে সোহাগ গাজী ও মাঝি শাহজালাল জানান, অবরোধকালীন কর্মহীন সময়ে জাল, ট্রলার মেরামতে সময় পার করলেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি বরাদ্দকৃত সরকারি চাল। ফলে পরিবার নিয়ে তাদের পার করতে হয়েছে মানবেতর জীবন। এখন আবার আবহাওয়া খারাপ তাই সমুদ্রযাত্রা অনিশ্চিত।

আলিপুর ও মহিপুর জেলার প্রধান দুইটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এখান থেকেই জেলার অধিকাংশ ট্রলার সাগরে যায়। বাকি অল্প কিছু ট্রলার জেলার অন্যান্য উপকূল থেকে সাগরে আসা-যাওয়া করে।

আলিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী নিয়াজ আলী বলেন, আবহাওয়া ভালো হলে জেলেরা ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারে যাবে। ট্রলারগুলো মাছ ধরে কয়েকদিন পর ঘাটে ফিরতে শুরু করলেই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলো প্রাণ ফিরে পাবে।

জেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ জানান, আগে সমুদ্রে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু এখন সচরাচর সে রকম মাছ পাওয়া যায় না। সমুদ্রে প্রায় ২২৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে মাছের সংখ্যা কমে যেতে শুরু করেছে। প্রজননকালীন সময়েও সাগরে মাছ শিকার এর অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, মাছ ধরার ওপর বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, এ মাছগুলোকে রক্ষা ও মাছের আয়তন বৃদ্ধির জন্য দেওয়া হয়েছে। যার সুফলস্বরূপ আমাদের বাংলাদেশ মৎস্য সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তিনি আরো বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলেরা। তবে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে জেলেদেরকে সাধ্যমতো সাহায্য করে যাচ্ছি। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে। জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করাসহ ভিজিএফ সময়মতো প্রদানের দাবি জেলেদের। জেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৭৭৭ জন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!