• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাদ্রাসার খাবার খেয়ে মৃত্যু ১, হাসপাতালে ১৭


নোয়াখালী প্রতিনিধি আগস্ট ৩, ২০২১, ১১:২৮ এএম
মাদ্রাসার খাবার খেয়ে মৃত্যু ১, হাসপাতালে ১৭

প্রতিনিধি

নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক মাদ্রাসা ও এতিম খানার ছাত্ররা রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে এ ঘটনায় অসুস্থ আরও ১৭ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

এই শিশুরা খাবারের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। দিবাগত রাত (২ আগস্ট) ৯টার দিকে উপজেলার পূর্ব একলাশপুর গ্রামে মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানায় এ ঘটনা ঘটে। মারা  যাওয়া শিশুর নাম নিশান নুর হাদী (১০)। সে উপজেলার ৭ নম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের ইতালি প্রবাসী মো. আনোয়ার মিয়ার ছেলে। সে ওই মাদ্রাসায় নূরানি বিভাগের ছাত্র।

খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশ সদস্যদের নিয়ে রাতেই ওই মাদ্রাসায় ছুটে যান। এ ঘটনায় মাদ্রাসার প্রধানসহ ছয় শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যান তারা। মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার সুপারিনটেনডেন্ট ইসমাইল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সোমবার দুপুরের দিকে মাদ্রাসায় মাংস রান্না করা হয়। ওইদিন এশার নামাজের পর মাদ্রাসার আবাসিক বিভাগের ২২ জন ছাত্র ওই মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১৮ জন ছাত্র অসুস্থ হয়ে সবাই পেট ব্যথায় বমি করতে থাকে।

এসময় মাদ্রাসার একজন আবাসিক শিক্ষক বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন এবং একজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে মাদ্রাসায় ডেকে আনেন। পরবর্তীতে পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে অসুস্থ ১৮ জনকে রাত সাড়ে ১১টায় প্রথমে মাইজদি শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রাত ১২টার দিকে তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশানকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি ১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’


নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, ছাত্ররা হলো, সামির, মোজাম্মেল, পারভেজ, শাওন, নুর হোসেন, মেহরাজ, রিফাত, মামুন, মারুফ, শিপন, আলিফ, শাহিন, আরমান, আব্দুর রহিম, আশিক, মামুন, পারভেজ, সোহাগ। তাদের সবার বয়স ৯ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার (ফুড পয়জনিং) কারণে রাতের খাবার খেয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের মধ্যে নিশান নামে এক ছাত্রকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এ ছাড়া, আরও ১৭ জন ছাত্র অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। ভর্তি ছাত্রদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক।’ 

বেগমগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার বলেন, ‘খাবারের সঙ্গে কোনো বিষাক্ত পদার্থ মেশানো হয়েছে কি না, তা তদন্তে বাকি খাবার পরীক্ষার জন্য জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে মাদ্রাসা প্রধানসহ ছয় শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, সুপার হাফেজ মাওলানা ইসমাইল হোসেন, শিক্ষক হাফেজ হাসান, বেলাল হোসেন, সাহেদ হোসেন, মিজানুর রহমান এবং দাউদ ইব্রাহীম। অন্যদিকে নিহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।

সোনালীনিউজ/জেএ/এসআই 
 

Wordbridge School
Link copied!