• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২২ সে.মি. ওপরে


লালমনিরহাট প্রতিনিধি আগস্ট ২১, ২০২১, ০৩:৪১ পিএম
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২২ সে.মি. ওপরে

প্রতিনিধি

লালমনিরহাট: টানা ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় পানি বন্দি হয়ে পড়ছে প্রায় পাঁচশতাধিক মানুষ। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। 

শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৮২ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। যা বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ রক্ষায় এ পর্যন্ত ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। 

এদিকে জেলার আদিতমারী ও হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ফসলি জমিতে আমনধান ও সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তা-ঘাটপানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ। সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না ও পাটিকাপাড়া এলাকার দুইশতাধিক পরিবারের ঘর বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো। মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে দুই ইউনিয়নের প্রায় দুইশতাধিক ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে চর সিন্দুর্না কমিউনিটি ক্লিনিক ও সিন্দুর্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসাসহ বেশকিছু ঘর-বাড়ি। 

ভাঙনে ক্ষতি গ্রস্ত চিলমারী গ্রামের লাল মিয়া (৩৫) বলেন, তিস্তানদী যেভাবে ভাঙছে তাতে পাঁচ দিনের মধ্যে চিলমারী গ্রামটাই নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। আমজাদ হোসেন (৪০) নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, নদীতে ঘর-বাড়িসহ সব ভেসে গেছে। পরিবার নিয়ে শুধু বেঁচে আছি। এখন যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তিস্তার ভাঙনে অনেক পরিবার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছে। 

হাতীবান্ধা সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, নদী ভাঙনের ফলে শত শতপরিবার নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চিলমারী গ্রাম প্রায় বিলীনের পথে । পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল আলম সাদাত বলেন, এ ইউনিয়নের চার ওয়ার্ডে তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। 

এ বিষয়ে লালমনির হাটপানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান মিজান বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। ভাঙনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ পরিবারের বসত বাড়ি নদীরগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। 

লালমনিরহাট জেলাপ্রশাসক আবুজাফর বলেন, পানিবন্দি পরিবার গুলোর তালিকা তৈরি করার জন্য নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে।

সোনালীনিউজ/এসএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!