• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিজের কিডনি দিয়ে পুলিশ ছেলের জীবন বাঁচালেন মা


রংপুর প্রতিনিধি: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১, ০২:৪৮ পিএম
নিজের কিডনি দিয়ে পুলিশ ছেলের জীবন বাঁচালেন মা

রংপুর: ইউনুস আলী রিপন। বয়স মাত্র ছাব্বিশের পড়ল।পেশায় পুলিশ সদস্য। সবসময় হাসিমাখা মুখ। সবার সঙ্গে অন্যরকম সম্পর্ক। বিপদে আপদে তিনি যেন সবার সঙ্গী। সেই প্রাণবন্ত রিপন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দিনের পর দিন অসুখ যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। এভাবে এক এক করে সাত মাস কেটে যায়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানালেন তার দুটি কিডনি বিকল। এ অবস্থায় আকাশ যেন মাথায় ভেঙে পড়ে। কে দেবে আশা, কে দেবে ভরসা? দিশেহারা হয়ে পড়ে রিপনের অসহায় পরিবার।

আরও পড়ুন: আঁখিনুরের ফেরার গল্প হার মানায় সিনেমাকেও 

একমাত্র ছেলের এ অবস্থায় কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হন পুরো পরিবার। রিপনের জন্য বোন, স্ত্রী, এমনকি আত্মীয়-স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশী কারো কাছ থেকে কিডনি পাওয়া যায় না। অবশেষে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে নিজের শেষ সম্বল ভিটেবাড়িটুকু বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন তার বাবা আব্দুর রশিদ। জমিজমা কিনতে আগ্রহী কয়েকজনের সঙ্গে কথাবার্তাও হয়। ভিটেবাড়ি বিক্রির  টাকা দিয়ে সন্তানকে বাঁচাতে কিডনি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাধ সাধেন রিপনের গর্ভধারিনী মা রীনা বেগম।

মায়ের ব্যাকুল মন যেন কিছুতেই ভরসা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তাই গর্ভধারিণী মা ছেলেকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে সেই মায়ের কিডনি মৃত্যশয্যায় থাকা ছেলের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এখন চোখ মেলে ছেলে দেখছেন মা তার পাশে। আর মা দেখছেন তার ছেলে এখন হাসে। ছেলের হাসিমাখা মুখের জন্য মায়ের অগাধ এ ভালোবাসার কথা এখন নেটদুনিয়ায় ভাসছে।

আরও পড়ুন: প্রাথমিকের শূন্য পদে নিয়োগ শিগগিরই

এ ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের উত্তর তাম্বুলপুর গ্রামে। সেখানকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ ও রীনা বেগম দম্পতির ছেলে ইউনুস আলী রিপন।সম্প্রতি দুই কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুশয্যায় থাকা অসুস্থ ছেলেকে বাঁচাতে কিডনি দিয়েছেন তার মা।

পুলিশ সদস্য হিসেবে চাকরিতে যোগদানের আগে থেকেই সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল রিপনের। পীরগাছা সরকারি কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন ছাত্র রাজনীতি করেন। তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন রিপন।

আরও পড়ুন: পদ বাড়ছে প্রাথমিকে, বেতন-পদোন্নতি নিয়েও এলো সুখবর

জানা গেছে, ১০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ঢাকার সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে মায়ের কিডনি ছেলের শরীর প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। বর্তমানে মা ও ছেলে সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছে তাদের স্বজনেরা। 

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রসংশায় ভাসতে থাকেন মা রীনা বেগম। এমন মাকে নিয়ে গর্ভবোধ করছেন সবাই। গ্রাম থেকে শহরে সবার মুখে মুখে ছেলের জন্য মায়ের এ অগাধ ভালোবাসার কথা।  

সোনালীনিউজ/আইএ
 

Wordbridge School
Link copied!