• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উল্টে যাওয়া ফেরিটির ‘ফিটনেস ছিল না’


মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি অক্টোবর ২৮, ২০২১, ১২:০৮ পিএম
উল্টে যাওয়া ফেরিটির ‘ফিটনেস ছিল না’

ফাইল ছবি

মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ৫ নম্বর ফেরিঘাটে যানবাহনসহ আমানত শাহ ফেরি উল্টে যাওয়ার ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু হয়েছে। ভেতরে আটকা পড়া ট্রাক উদ্ধারে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সোয়া ৮টার দিকে অভিযান শুরু করে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। জানিয়েছে ফেরিঘাট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অভিযান শুরুর দ্বিতীয় দিনে আরও একটি কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যাওয়া ফেরিটি ফিটনেস ছাড়াই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে চলাচল করছিল বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) একজন কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির এজিএম (মেরিন) আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘উল্টে যাওয়া ফেরি শাহ আমানতের ফিটনেস ছিল না। ফিটনেসবিহীনভাবেই এটি নৌরুটে চলাচল করত। ফিটনেসের জন্য র্দীঘদিন আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আবেদন করা হয়েছিল।’

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন ফেরিটি চার মাস আগে মেরামত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শাহ আমানত ১৯৭৯ সালে তৎকালীন আরিচা ফেরি সেক্টরে যোগ হয়। এরপর নাব্য সংকটের কারণে ২০০২ সালের পাটুরিয়া ফেরি ঘাট স্থানান্তর করা হয় এবং ফেরির তলায় সমস্যা থাকায় গত চার মাস আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরিটি মেরামত করা হয়।’

দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ফেরির ব্যালাস্ট ট্যাংক ফুটো হয়ে যাওয়ায় এটি কাত হয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দিনোমনি শর্মা বলেন, ‘ব্যালেন্সের ওই ট্যাংক ফুটো হয়ে ভেতরে অতিরিক্ত পানি ঢোকার কারণে ফেরিটি ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। যার ফলে ফেরি থেকে কিছু গাড়ি নেমে যাওয়ার পরে এক পাশে কাত হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

এদিকে ফেরিতে থাকা একটি কাভার্ড ভ্যানের চালক কামাল মিয়া বলেন, ‘বেনাপোল থেকে তুলা নিয়া গাজীপুর যাচ্ছিলাম, কিন্তু মাঝ নদীতে ফেরিতে পানি দেখি। মনে হচ্ছিল ফেরি ধুইছে তার পানি। পাটুরিয়া আসার পর যখন কয়েকটা গাড়ি আনলোড হইল, তখন ফেরিটি ডান দিয়ে কাইত হইয়া যেতে লাগল। এর পরেই ওল্টাইয়া গেল। কোনোমতে লাফাইয়া জানে বাচঁছি। আরেকটু হইলে গেছিলাম। ফেরিতে সমস্যার কারণেই তো পানি উঠেছে। সমস্যা না হলে তো পানি উঠত না।’

বেঁচে যাওয়া আরেকটি কাভার্ড ভ্যানের চালক সেলিম মিয়া বলেন, ‘ফেরিতে পানি দেখেই ঘাটে আসা মাত্রই হেলপার ও মালিকের একজন দৌড়ে ফেরি থেকে নামেন। আমার আগে গাড়ি থাকায় নামাতে পারি নাই। তাড়াতাড়ি করে নামার সময় গাড়িটা পন্টুনে আটকায় যায়। পরে গাড়ি রাইখা জীবন বাঁচাইতে নদীতে লাফ দেই। আর আমার গাড়ি ভাসতে ভাসতে ভাটিতে চলে যায়।’

পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে বুধবার সকালে আমানত শাহ ফেরিটি হেলে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দিনোমনি শর্মা জানান, হেলে পড়ার সময় ফেরিতে ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, তিনটি ট্রাক ও সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল ছিল।

ফেরি ও এতে থাকা যানবাহন উদ্ধারে ঘটনাস্থলে বুধবার কাজ করছিল হামজা নামে উদ্ধারকারী জাহাজ। এর কমান্ডার ছানোয়ার হোসেন জানান, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯টি ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল পানি থেকে তোলা গেছে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!