• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আশ্রয় মিলল পরিত্যক্ত দোকানে


বাগেরহাট প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২১, ২০২১, ১১:২৯ এএম
আশ্রয় মিলল পরিত্যক্ত দোকানে

বাগেরহাট : বাগেরহাট শহরের সাহাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন গোবরদিয়া সড়কের পাশে রুস্তম মল্লিকের পরিত্যক্ত দোকানঘরে শুয়ে আছেন ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা। তার চোখে-মুখে অসহায়ত্বের ছাপ। পরিচয় জানতে চাইলে জানান, ছোট ছেলে এখানে রেখে গেছেন। কোথাও যাওয়ার উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানে পড়ে আছেন। তাও আবার বছর খানেক। তার নাম গোলবানু বেগম (৬৩)। শীত বা বর্ষায় এই ঝুপড়ি ঘরে কেটে তার দিন-রাত।

তিনি যাকে কাছে পান, তাকে তার কেনা জায়গা এনে দিতে বলেন। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা লতিফ মোল্লার স্ত্রী গোলবানু। জামাল মোল্লা ও মোস্তফা মোল্লা নামে দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ২০ বছর আগে অভাবের তাড়নায় বাগেরহাটে আসেন।

বাগেরহাটে অন্যের বাড়িতে গৃহস্থলীর কাজ করতেন। এভাবে অল্প অল্প জমানো টাকায় ১০ বছর আগে বাগেরহাটের সদর উপজেলার বাদেকাড়াপাড়ায় চার কাঠা জমি কেনেন। তবে সেই জমি কখনো ভোগদখল করতে পারেন নি অসহায় এই নারী। এ

রমধ্যে ছেলেরাও কাজের তাগিদে মাকে ছেড়ে বাপের ভিটায় গিয়ে উঠেছেন। মা গোলবানু সেখানে গেলেও তার ঠাঁই হয়নি। তাই এই দোকানঘরই তার আশ্রয়।

গোলবানু বেগমের অভিযোগ অনুযায়ী বাদেকাড়াপাড়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক বছর আগে ৮০ হাজার টাকায় একটি জমি কেনেন তিনি। কিন্তু পরে সেই জমি বেদখল হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, জমির মালিক এআর খান সেই জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।  স্থানীয়রা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা খাবার, বস্ত্র, টাকা দিয়ে সহায়তা করেন গোলবানুকে। তাদের সামান্য সহায়তায় কোনোমতে বেঁচে আছেন তিনি।

সাহাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা সুলতানা বলেন, বৃদ্ধ মহিলা অনেকদিন ধরে এখানে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। কখনো কাউকে তার খোঁজ নিতে দেখিনি। এই শীতে যদি একটু ভালো জায়গায় থাকার ব্যবস্থা না করা যায়, তবে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন বলেন, আমরা গোলবানু বেগমের কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নিয়ে বাদেকাড়াপাড়ায় গিয়েছি। তার জমি দখল হয়ে যাওয়ার সত্যতা পেয়েছি। শিগগির সব পক্ষকে নিয়ে বসবো, যাতে বৃদ্ধা তার প্রাপ্য জমি ফিরে পান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!