• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২২ বছর পর ভোটে হারলেন ‘ভিনদেশি’ মুক্তিযোদ্ধা


নিউজ ডেস্ক জানুয়ারি ৬, ২০২২, ০৯:২৮ পিএম
২২ বছর পর ভোটে হারলেন ‘ভিনদেশি’ মুক্তিযোদ্ধা

সিলেট: মাঝে একটা বিরতি দিয়ে ২২ বছর ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে এইবার হেরে যেতে হলো ভিনদেশি হয়েও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া স্কটিশ বংশদ্ভূত জেমস লিও ফারগুসন নানকাকে।

পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে বুধবার (৫ জানুয়ারি) সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে ভোটে হেরে যান চারবারের চেয়ারম্যান নানকা। এই ইউনিয়নের নতুন চেয়ারম্যান হন জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের জামাল উদ্দিন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৬ সালে তরুণ বয়সে লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।

১৯৯৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৭ বছর এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সালে পরিবারের কাছে চলে যান ইংল্যান্ডে। প্রায় ১৮ বছর পর ২০১৪ সালে আবার দেশে ফেরেন তিনি।

এর দুবছর পর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবার প্রার্থী হন নানাকা। আগের সবগুলো নির্বাচনে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সেবার নৌকা দেয়া হয় তাকে। বিজয়ীও হন তিনি।

তবে পা পিছলে যায় এবার। বড় ব্যবধানেই হেরেছেন তিনি। হয়েছেন তৃতীয়। এই পরাজয়ের পেছনে দলীয় কোন্দল আর কিছু নেতার অসহযোগিতাকে দায়ী করেছেন নানকা।

তবে তার পরাজয়ের পেছনে কাঙ্খিত উন্নয়ন না হওয়া ও এলাকার মানুষের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হওয়াকেও সামনে এনেছেন স্থানীয়রা। 

ভোটে পরাজয় প্রসঙ্গে নানকা বলেন, ‘দলের লোকজন অসহযোগিতা করেছেন। তারা আমারে দেখতে পারেন না। অন্যদিকে বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন আটঘাট বেঁধে কাজ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাকে অনুরোধ করে প্রার্থী করা হলো। তৃণমূল থেকে আমার, রিংকু চক্রবর্তী ও তোতা মিয়া নাম কেন্দ্রে পাঠানো হলো। কেন্দ্রীয় নেতারা আমাকে মনোনয়ন দিলেন। এটা সহ্য করতে পারেননি অন্য দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী। তারা প্রকাশ্যে আমার পক্ষে থাকলেও আড়ালে বিরোধিতা করেন।’

উল্লেখ্য, একাত্তরে দেশের যখন যুদ্ধদিন জেমস লিও ফারগুসন তখন সবে কৈশোর পেরিয়েছেন। পড়েন ক্যাডেট কলেজে। চা বাগান ব্যবস্থাপনায় যুক্ত ছিল তার পরিবার। সেই সূত্রে সিলেটেই থাকতেন।

ফারগুসনের মা জুন ফারগুসন লোভাছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে এই উপমহাদেশে তিনিই ছিলেন চা-বাগানের প্রথম নারী ব্যবস্থাপক।

এরআগে তার নানাও এই বাগানের ব্যবস্থাপক ছিলেন। আর বাবা জে ফারগুসন ছিলেন ব্যবসায়ী। তিনি মাঝেমধ্যেই এখানে আসতেন। পরে তারা লোভাছড়া চা-বাগান কিনে নেন। পঞ্চাশের দশকে লিও ফারগুনসনের জন্ম হয় এখানেই।

এই জন্মঋণ ‘শোধ’ করতেই হয়তো একাত্তরে বাঙালির সঙ্গে অস্ত্রহাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ৫ নম্বর সাবসেক্টরের হয়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন।

স্কটিশ স্ত্রী কুইনলা দুই সন্তানসহ ইংল্যান্ডে থাকলেও স্বাধীনতার পর থেকে কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া চা বাগানেই থাকেন নানকা।

চা বাগান ব্যবস্থাপনা আর জনপ্রিতিনিধির দায়িত্ব নিয়েই এতদিন ব্যস্ত ছিলেন। জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব থেকে ‘আপাত’ বিশ্রাম পেলেন তিনি।

সূত্র-নিউজবাংলা

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!