• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা ফ্লাড বাইপাস


লালমনিরহাট প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২, ১২:৩০ পিএম
সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা ফ্লাড বাইপাস

লালমনিরহাট : গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা ফ্লাড বাইপাস তিন মাসেও সংস্কার হয়নি। ফলে আসন্ন বন্যায় বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ। বন্যার আগে সংস্কার না হলে হতে পারে তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন।

ভারতের গজল ডোবা বাঁধ হঠাৎ খুলে দেয়ায় গত বছরের ২০ অক্টোবর তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। ওই দিন তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানির প্রচণ্ড স্রোতে ব্যারেজের ফ্লাড বাইপাস ভেঙে বাম তীরে ভয়াবহ বন্যা হয়। ভেসে যায় ঘরবাড়ি, ভেঙে যায় রাস্তাঘাট ও স্থাপনা। বন্যার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ভেঙে যাওয়া ওই ফ্লাড বাইপাস সংস্কার করা হয়নি। ফলে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর যোগাযোগ কর্দমাক্ত ওই রাস্তায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই জেলার মানুষ।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা ফ্লাড বাইপাস সংস্কার না হওয়ায় আসন্ন বন্যায় আবারও বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ। বন্যার আগে সংস্কার না হলে তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে ব্যারেজ শুন্যে পড়ে থাকার আশঙ্কা স্থানীয়দের। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ফ্লাড বাইপাসের ভাটিতে থাকা হাজারও বসতবাড়ি ও স্থাপনা।

তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা সোলায়মান আলী বলেন, গত বন্যায় ফ্লাড বাইপাস ভেঙে ঘরবাড়ি ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। এখনও ফ্লাড বাইপাস সংস্কার করা হয়নি। আগামী বন্যার আগে সংস্কার না হলে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে। এছাড়াও বন্যার আগে সংস্কার না হলে ঐতিহাসিক তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে। আর এমন হলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ শূন্যে পড়ে থাকবে। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লাড বাইপাস সংস্কার করতে ৩০লাখ টাকার একটি প্রকল্প চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই সংস্কার করা হবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক এ তিস্তা নদী ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিস্তা নদী কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশে গেছে। ৩১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ নদীর বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।

ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত সরকার এক তরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরভূমিতে পরিণত হয়। আবার প্রতি বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। আর বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ্য হয় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাট।

তিস্তা নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করতে আশির দশকে তৎকালিন সরকার লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার সংযোগে তিস্তা নদীর ওপর তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করে। যা লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলাকে সংযুক্ত করেছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে বাম তীরে লালমনিরহাট অংশে ফ্লাড বাইপাস নির্মাণ করা হয়। অতিরিক্তি পানি যাতে ফ্লাড বাইপাস দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্যারেজ রক্ষা পায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!