• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী স্বামীর টাকায় বাড়ি নিজের নামে লিখে তালাক দিলেন স্ত্রী


বগুড়া প্রতিনিধি এপ্রিল ৬, ২০২২, ১২:১৪ পিএম
প্রবাসী স্বামীর টাকায় বাড়ি নিজের নামে লিখে তালাক দিলেন স্ত্রী

ফাইল ছবি

বগুড়া: বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকায় কেনা জমি ও বানানো বাড়ি নিজের নামে লিখে নিয়ে তালাক দিয়েছেন এক নারী। প্রবাসী স্বামী দেশে ফিরে কিছু না পাওয়া স্ত্রীসহ ৮ জনের নামে মামলা করেছেন।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর আমলি আদালতে প্রতারণা এবং দেড় কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী স্বামী। পরে আগামী ১৮ মের মধ্যে পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ভুক্তভোগী ব্যক্তি শাজাহানপুর উপজেলার শৈলধুকড়ী গ্রামের হবিবর রহমানের (মৃত) ছেলে মাহফুজার রহমান। তিনি মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসী।

মামলায় আসামিরা হলেন, মাহফুজার রহমানের সাবেক স্ত্রী রজনী খাতুন (৩৩), তার বর্তমান স্বামী মো. রেজাউল করিম (৩২) এবং তার বাবা আব্দুল খালেক (৫৫)। এ ছাড়া আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মোছা চাঁন মুনী (৪৫), বিউটি বেগম (৩৮) এবং মোছা. শান্তি বেগম (৩৫) নামে চারজনকে আসামির করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাহফুজার রহমান ৪ বছর প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন রজনী খাতুনকে। পরে ৪ বছর সংসার করার পর ২০০৮ সালের আগস্টে মালয়েশিয়া যান মাহফুজার। এর ৬ মাস পর রজনী খাতুন গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পর রহিমাবাদ সি-ব্লক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন।

এদিকে প্রবাসী স্বামী মাহফুজারের পাঠানো টাকায় রজনী নিজের নামে জমি কিনতে থাকেন। জামালপুর এলাকায় নিজ নামে জমি কিনে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬তলা বাড়ির ভিত দেন। একতলা বাড়ির কাজ সম্পন্ন করেন।

বাড়ি নির্মাণে আরও টাকা দরকার জানিয়ে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া মাহফুজারের সাত বিঘা জমি প্রায় ৭ লাখ টাকায় ইজারা দেন। এভাবে সাড়ে ১৩ বছরের প্রবাস জীবনে রজনীকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দেড় কোটি টাকা দেন মাহফুজার। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির নেতা আবুল বাশারের (৪৫) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান রজনী।

গত ২০ জানুয়ারি দেশে ফিরে নিজের টাকায় নির্মিত বাড়িতে উঠতে গিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী রজনী তাঁকে তালাক দিয়েছেন। এই বাড়িতে থাকার কোনো অধিকার তাঁর নেই। গত ২৫ মার্চ রজনী মামাতো ভাই রেজাউল করিমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে বসবাস করছেন।

এ বিষয়ে রজনী খাতুন বলেন, আমি আবার বিয়ে করেছি। আবুল বাশারের সঙ্গে আমার কোনো অনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা মাহফুজারকে ফেরত দেবেন কবে জানতে চাইলে সংযোগটি কেটে দেন রজনী খাতুন। এরপর অনেকবার চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

একই অভিযোগের বিষয়ে আবুল বাশারের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও জবাব দেননি তিনি।

ভুক্তভোগী মাহফুজার রহমান বলেন, প্রায় ১৩ বছর মালয়েশিয়া থাকা অবস্থায় কোনো টাকাই নিজের জন্য রাখি নাই। নিজের শরীরের ওপর সর্বোচ্চ কষ্ট দিয়ে যা ইনকাম করেছি তার সবই স্ত্রীর হাতে পাঠিয়েছি। এখন আমার আর কিছুই নাই। লজ্জায় রাস্তায় চলতে পারি না। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

সোনালীনিউজ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!