• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ঢল


কক্সবাজার প্রতিনিধি মে ৪, ২০২২, ০৯:৪৮ পিএম
সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ঢল

সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার : কক্সবাজার মানেই আনন্দ। কক্সবাজার মানেই সুখ, শান্তি আর বিনোদনের জায়গা। কক্সবাজারের এই সমুদ্র সৈকতের  বিশালতা আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে কার না ভালো লাগে, মন যতোই খারাপ থাকুক না কেন নিমিষেই ভালো হয়ে যাবে। এভাবেই কক্সবাজারকে নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন ঈদের দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটক সানজিদা শারমিন।

বুধবার (৪ মে) দুপুরে সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় শারমিনের সাথে। তিনি  বলেন, ঈদের আগেরদিন পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে ছুটে এসেছিলাম। আগে থেকে ভেবে রেখেছিলাম এবারের ঈদটা কক্সবাজার উদযাপন করবো। আমাদের ঈদ চমৎকার কেটেছে।

সাইদুর রহমান ও লিলি চৌধুরী দম্পতি জানান জানান, সকালে সৈকতে নেমেছিলাম, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ হওয়া সমুদ্রস্নানে বাড়তি আনন্দ পেয়েছি। বিয়ের পর প্রথম কক্সবাজার ভ্রমণে আসা। অনেক ভালো লাগছে, কক্সবাজার এসে আমাদের হানিমুন পরিপূর্ণ হলো।

সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে সকাল থেকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গরমের তীব্রতা উপেক্ষা করেই আনন্দে মেতে উঠেছেন পর্যটকরা। যাদের বেশির ভাগই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন।

সমুদ্রস্নানের পাশাপাশি অনেকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ প্রিয়জনদের সাথে সেলফি তুলছেন, কেউ কেউ আড্ডায় মেতেছেন আবার কেউ অপরূপ প্রকৃতি উপভোগ করছেন আপন মনে। সবকিছু মিলে আবারো পর্যটকে মুখরিত হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।

ময়মনসিংহ থেকে ঈদের ছুটি কাটাতে আসা আমির খান বলেন, সব সময় কাজে ব্যস্ত থাকি, অফিস থেকে সহজে ছুটি পাওয়াও মুশকিল। তাই  এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা। অনেক ভালো লাগছে। সকালে সমুদ্রে সবাইকে নিয়ে গোসল করেছি, খুব মজা করেছে সবাই। গরম একটু কম হলে আরো বেশি উপভোগ্য হতো।

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর পর্যটন খাতে স্থবিরতা দেখা দেয়। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবং ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় ঈদের প্রথম দিন থেকে কক্সবাজারে ব্যাপক পর্যটক সমাগম হয়।

হোটেল সি ওয়ার্ল্ডের ম্যানেজার শাহনেওয়াজ   জানান, হোটেল-মোটেলে যে পরিমাণ ধারণ ক্ষমতা তার চেয়েও লোকসমাগম বেশি হবে। রুম বুকিং করে যারা এসেছেন, তারা ছাড়া বাকিরা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে দেড় লাখেরও বেশি লোক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বেশি পর্যটক আসলে এখানে রাত্রিযাপন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, ঈদের  প্রথম ও দ্বিতীয় দিনেই পর্যটকদের ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। হোটেল-মোটেলগুলোও পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত। হোটেলে রুম নিয়ে কোনো মানুষ যাতে হয়রানি না হয় তার জন্য আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে নজরদারি রাখা হচ্ছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকদের করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সর্বদা সচেতনতামূলক মাইকিং ও প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে থাকছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত। কোথাও পর্যটক হয়রানির অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা, তথ্যসেবা, পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ নানা সেবামূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।

তিনি জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। মোতায়েন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে পর্যটন স্পটগুলো। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থাও রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!