• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটে মানবিক বিপর্যয়


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৯, ২০২২, ০৩:২৫ পিএম
বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটে মানবিক বিপর্যয়

সিলেট : ভারি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট।

দু-তিনটি উপজেলা ছাড়া জেলার সবকটি উপজেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা। নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন নগরীর উপশহর, সাদারপাড়া, মাছিমপুর, মেন্দিবাগসহ অর্ধ শতাধিক এলাকার বাসিন্দারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে সিলেট জেলায় বন্যার পানি সামান্য কমেছে। তবে সিলেট মহানগরে দশমিক এক সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। জেলায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর জকিগঞ্জের অমলসিদ পয়েন্টে দশমিক ২ সেন্টিমিটার বন্যার পানি কমেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে পানির স্তর পরিমাপে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের প্রধান নদী সুরমা কানাইঘাট (সিলেট) পয়েন্টে দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে। তবে এখনও তা বিপৎসীমার ১৩ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সুরমা সিলেট সদর পয়েন্টে দশমিক এক সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১১ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার পানির পরিমাণ ১১ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার ছিলো। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসিদ (সিলেটের জকিগঞ্জ) পয়েন্টে দশমিক ২ সেন্টিমিটার কমে এখন বিপৎসীমার ১৭ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট নগরীর সাদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী নাজমিন আক্তার বলেন, খুব কষ্টে আছি। বন্যা, খাবার পানির সঙ্কট, বিদ্যুৎ না থাকায় কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তিন দিন যাবৎ বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে রাখা খাবারসহ মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। ভ্যানচালকের মাধ্যমে দুই দিনে ছয় বালতি পানি কিনেছি ৮শ’ টাকায়। তাও অনেক অনুরোধের পর পেয়েছি।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধীরে ধীরে পানি বাড়ছে। শাহজালাল উপশহর এলাকায় লোকজন প্লাস্টিকের নৌকা দিয়ে রাস্তায় চলাচল করছেন। ওই এলাকায় বিদ্যুতের একটি ফিডার পানির নিচে চলে যাওয়ায় ৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন।

নগরে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও জলমগ্ন অবস্থায় দেখা গেছে। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন নগরবাসী।

এ অবস্থায় নগরের ১৫ স্কুলসহ ২২টি স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। নগরের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজনও খাদ্য সংকটে রয়েছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, সরকার মানুষের পাশে রয়েছে। প্রতিদিনই বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। গতকালও মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন।

সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!