• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জের ২ হাজার কিলোমিটার সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত


সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জুন ২৯, ২০২২, ০৩:১৯ পিএম
সুনামগঞ্জের ২ হাজার কিলোমিটার সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত

সুনামগঞ্জ : দ্বিতীয় দফা ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার সকল রাস্তাঘাটসহ ঘরবাড়ি। বর্তমানে জেলার বাড়িঘর, আঞ্চলিক ও মহাসড়কগুলোতে থেকে পানি নামায় দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যার ক্ষত। এরই মধ্যে বানের পানিতে সুনামগঞ্জের ২ হাজার ২শ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রাধানগর পয়েন্ট থেকে সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর- কাচিরগাতি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সড়কের রাধানগর পয়েন্ট থেকে চালবন পয়েন্ট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার অংশে ছোট বড়ো দুই শতাধিক গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা জেলার আরও ২ হাজার ২শ’ কিলোমিটার সড়কের। বিভিন্ন উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে চুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ১২০টি কালভার্টেরও। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যানচলাচল করা পুরো জেলাবাসী। ঘটছে নানা দুর্ঘটনাও। 

প্রবল পানির স্রোতে অনেক সড়কের মাটি সরে গেছে। বিটুমিন দিয়ে ঢালাই করা সড়কে এখন পাথরের কোয়া সুরকি পড়ে আছে। সড়কের দুই পাশের গার্ড ওয়ালসহ বেশ কয়েক জায়গায় ধসে গেছে। এলজিডি ও সড়ক জনপথ দুটি প্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক ছোট বড় সড়ক বন্যার পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। গভীর অগভীর গর্তে ভরপুর সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে আসাই দায় হয়ে পড়েছে। এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও গাড়ি চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের বাসিন্দা আখলাকুর রহমান বলেন, আমার ভাই এই সড়কের গর্তে পড়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। একটা মোটরসাইকেল গিয়েছিল সেটাও পড়ে গেছে। আমরা ধরে তুলে দিয়েছি। রাস্তা ঠিক করার কোনো উদ্যোগ না দেখে আমরা কয়েকজন মিলে বালি ফেলে আপাতত শুধু হেঁটে ও মোটরসাইকেল চলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এখন মানুষ একটু যাইতে পারে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সিরাজপুর গ্রামের মুফতি ওবায়দুল হক বলেন, একশ বছরের ভেতর এমন ভয়াবহ বন্যা সুনামগঞ্জে হয়নি। বন্যায় রাস্তাঘাটে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। রাস্তাঘাট ভেঙে খান খান হয়ে গেছে। পায়ে হেঁটে, নৌকায় করে ভেঙে ভেঙে আসতে হচ্ছে। এক টাকার জায়গায় পাঁচ, দশ, পনের টাকা দিতে হচ্ছে। যাতায়াতে খুবই সমস্যা হচ্ছে আমাদের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো মাহবুব আলম জানান, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় ৭৮৫টি সড়কের ২ হাজার কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রিজ, কালভার্টসহ সড়ক মেরামতে প্রাথমিকভাবে ১৫শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন। এখনও বহু সড়ক পানির নিচে রয়ে গেছে। সেগুলো জেগে উঠলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

এদিকে, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক ছাড়া প্রতিটি সড়কই হালকা, ভারী ও মাঝারি ধরনের যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শতশত গর্তে ভরপুর এসব সড়ক দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক জানান, সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় সওজের আওতাধীন ৮ সড়কের ৩৫৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১৮৪ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো কিছু জায়গায় পানি আছে, সেখান থেকে পানি নামলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে যেসব ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা ভেসে উঠছে সেগুলোতে ইটের সলিং, বালু ফেলে প্রাথমিকভাবে সড়ক যোগাযোগ সচল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পানি পুরোপুরি নেমে গেলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!