• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভাড়া কমিয়েও যাত্রী মিলছে না লঞ্চে


বরিশাল প্রতিনিধি জুন ৩০, ২০২২, ০৬:৫৪ পিএম
ভাড়া কমিয়েও যাত্রী মিলছে না লঞ্চে

ঢাকা : বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানীতে যাতায়াতের অন্যতম বাহন ছিল নৌযান। সড়কপথে ফেরি পারাপারে ভোগান্তির কারণে বেশিরভাগ যাত্রী লঞ্চে যাতায়াত করতেন। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা অজুহাতে বিভিন্ন সময় বেড়েছে লঞ্চ ভাড়াও। ভাড়া কমানোর দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন পালন করেছে কর্মসূচি। এরপরও ভাড়া কমেনি।

তবে পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। সড়কপথে যাত্রীর চাপ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে লঞ্চের যাত্রী। বেশ কয়েকটি লঞ্চ ভাড়া কমিয়েও কাঙিক্ষত যাত্রী পাচ্ছে না। তাই যাত্রী ধরে রাখতে শিগগির বৈঠকে বসছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা।

বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী কয়েকটি লঞ্চের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর পর গত কয়েক দিনে ক্রমান্বয়ে কমছে লঞ্চের যাত্রী। সোমবার (২৭ জুন) রাতে বরিশাল নদীবন্দর থেকে সুরভী-৯, সুন্দরবন-১০, পারাবত ১৮ ও মানামী লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কোনোটিতে ৫০ শতাংশ, কোনোটিতে ৩০ শতাংশ যাত্রী কম ছিল।

শুধু ডেকের যাত্রী কম তা নয়, ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোর প্রায় অর্ধেক কেবিন খালি গেছে। এভাবে যাত্রী কমলে মালিকদের লোকসান গুনতে হবে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বরিশাল নদীবন্দরে পাঁচটি লঞ্চ নোঙর করা ছিল। রাত সাড়ে ৮টার পর সেগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যাত্রী কেমন হয়েছে জানতে চাইলে রাত সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকটি লঞ্চের সুপারভাইজাররা জানান, যাত্রী সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, বরিশাল থেকে সোমবার রাতে সুন্দরবন-১০ লঞ্চ ছেড়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছে। এরপর বিক্রিত টিকিট হিসাব করে দেখা যায় যাত্রী ছিল ৩৪৭ জন। এছাড়া এক-তৃতীয়াংশ কেবিন খালি ছিল। সব মিলিয়ে বলা যায় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেক যাত্রী ছিল।

তিনি আরও বলেন, ডেকের যাত্রীদের ভাড়া রাখা হয়েছিল ২০০ টাকা। শুধু সুন্দরবন লঞ্চই নয়, বরিশাল থেকে ঢাকায় যাওয়া বাকি তিন লঞ্চের প্রায় একই অবস্থা ছিল।

বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এমভি মানামী লঞ্চের ব্যবস্থাপক (কাস্টমার সার্ভিস) মো. রিজওয়ান হোসেন রিপন বলেন, লঞ্চ সোমবার রাতে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ছাড়ার আগে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় শতকরা ৩০ শতাংশ যাত্রী কম উঠেছে। সাধারণত ডেকের যাত্রীরা বিকেল থেকেই লঞ্চে আসতে শুরু করেন। কিন্তু সোমবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও যাত্রী হচ্ছিল না। এ সময় দুটি লঞ্চের স্টাফরা ৩০০ টাকার জায়গায় ২০০ টাকা ভাড়া বলে যাত্রী উঠাতে শুরু করেন। মঙ্গলবারও প্রায় একই অবস্থা ছিল। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় যাত্রী কম যাচ্ছে। বিষয়টি মালিক পক্ষকে জানানো হয়েছে।

এদিকে ভাড়া কমায় খুশি লঞ্চ যাত্রীরা। তারা বলছেন, দুই বছর আগেও লঞ্চের ডেকে জনপ্রতি ভাড়া ছিল ২০০ টাকা। এরপর বাড়িয়ে করা হয় ২৫০ টাকা। গত বছর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি হলে এক লাফে জনপ্রতি ডেকের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৩৫০ টাকা। গত ঈদুল ফিতরের আগে আরও ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করা হয়েছিল। বর্ধিত ভাড়ার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছিল।

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর বরিশাল-ঢাকা সড়কপথে উল্লেখযোগ্য হারে যাত্রী বেড়েছে। কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের জটলা থাকছেই। মঙ্গলবারও সাকুরা, ঈগল, হানিফসহ বিভিন্ন কোম্পানির বাস ঢাকা-বরিশাল মিলিয়ে ২০০ এর মতো ট্রিপ দিয়েছে। সব বাস যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। যাত্রীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেসরকারি পরিবহন কোম্পানিগুলো আরামদায়ক ও বিলাসবহুল নতুন বাস নামাতে চাইছে। মোট কথা পরিবহন খাতে সুদিন চলছে।

সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!